বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনায় শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষের আয় আরো কমে গেছে। উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব বাণিজ্য ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনের আগে আগে প্রকাশিত হয় অক্সফামের রিপোর্ট। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এ বছরও বিশ্বের ধনী ও সবচেয়ে শক্তিধরদের এই সংগঠনের বার্ষিক সম্মেলন এবারও স্থগিত করা হয়েছে। ডব্লিউইএফ গত সপ্তাহে প্রকাশ করেছে ‘গ্লোবাল রিস্কস রিপোর্ট ২০২২’। এতে সতর্কতা দেয়া হয়েছে যে, করোনাভাইরাসের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিভাজন আরো গভীর হয়েছে। অসমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাকে আরো খারাপ পর্যায়ে নিয়ে গেছে করোনা মহামারি। এতে অতিরিক্ত উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং সামাজিক অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে দেশগুলোতে। তা আরো জটিল হয়েছে।
পক্ষান্তরে ধনীর জন্য আরো ধনী হওয়ার এক সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে এসেছে। সোমবার অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল নতুন একটি রিপোর্টে বলেছে, করোনা মহামারিকালে বিশ্বে শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদ হয়েছে দ্বিগুন। আর গরিবরা মারা যাচ্ছেন কোভিডে। প্রতিদিন বিশ্বে করোনায় মারা যাচ্ছেন কমপক্ষে ২১ হাজার ৩০০ মানুষ। এতে বিশ্বে অসমতা বাড়ছে। বৈষম্য বাড়ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
অক্সফামের ‘ইনইকুয়ালিটি কিলস’ রিপোর্টে বলা হয়েছে, অনাকাঙ্খিত উদ্বেগ নিয়ে আমরা নতুন বছর ২০২২ সালে প্রবেশ করেছি।
এতে সতর্কতা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বর্তমান বিশ্বে চরম অর্থনৈতিক অসমতা বিরাজ করছে। সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও জাতির বিরুদ্ধে এটা হলো একরকম ‘অর্থনৈতিক সহিংসতা’ (ইকোনমিক ভায়োলেন্স)।
অক্সফামের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই গভীর অসম বিশ্বে স্ট্রাকচার এবং সিস্টেমিক পলিসি, রাজনৈতিক পছন্দ কাজ করছে ধনী ও সবচেয়ে শক্তিধরদের পক্ষে। তার ফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। এক্ষেত্রে কোভিড-১৯ এর টিকা নিয়ে বিভক্তি একটি উজ্বল উদাহরণ।
অক্সফাম বলেছে, বিশ্বে এখনও লাখ লাখ মানুষ বেঁচে থাকতেন, যদি তাদেরকে টিকা দেয়া হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তারা মারা গেছেন। বড় বড় ওষুধ প্রস্তুতকারকদের করপোরেশন এসব প্রযুক্তিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ওইসব মানুষের বেঁচে থাকার সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিয়ান অঞ্চলের ১০০ কোটি নারী ও যুবতীর মোট যে পরিমাণ সম্পদ তার চেয়ে বেশি সম্পদের মালিক ২৫২ জন পুরুষের। প্রভাবশালী ৩১০ কোটি মানুষের চেয়ে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ১০ জনের নিজস্ব সম্পদ বেশি। অক্সফাম আরও বলেছে, করোনা মহামারির সময়ে ধনীরা আরো ধনী হয়েছে।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশ কয়েক দশক ধরে দারিদ্র্য মোকাবিলার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অধিক পরিমাণে প্রযুক্তি এসেছে। শিক্ষা সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। তা সত্ত্বেও বিশ্ব দশকের পর দশক ধরে ক্রমশ ভয়াবহ অসমতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অক্সফাম বলেছে, দাসত্ব ও ঔপনিবেশিকতাসহ বর্ণবাদের মতো ঐতিহাসিক লিগ্যাসির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে বর্তমান সময়ের এই বিভাজনের। ১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্বের শতকরা এক শতাংশ মানুষ নিম্নস্তরে থাকা শতকরা ৫০ ভাগ মানুষের তুলনায় বিশ্ব সম্পদের প্রায় ২০ গুনের বেশি কুক্ষিগত করেছে। করোনা মহামারি এ পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলেছে।
অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার বলেছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো আর্থিক বাজারে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ ঢেলেছে। তাতে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ ফুলেফেঁপে উঠতে সহায়ক হয়েছে। ইতিহাসে এটা তাদের সবচেয়ে বড় আর্থিক বৃদ্ধি। অন্যদিকে এর আগে কখনো ঘটেনি, এমন এক অবস্থায় আরো দরিদ্র করেছে সাধারণ মানুষকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।