Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গাজীপুরে ঢাবির সাবেক অধ্যাপক খুন

উদ্দেশ্য টাকা লুট : নির্মাণশ্রমিক গ্রেফতার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:১৩ এএম, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাইদা খালেককে (মোছা. সাইদা গাফফার)(৭১) অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। টাকা লুট করতেই বাড়ির নির্মাণশ্রমিক তাকে হত্যা করেছে বলে পুলিশের অভিযোগ। দুইদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। গতকাল শুক্রবার সকালে গাজীপুরের মহানগরীর দক্ষিণ পানিশাইল এলাকার আবাসন প্রকল্পের ভেতর একটি ঝোপের মধ্য থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. আনোয়ারুল ইসলাম (২৫) নামে একজন নির্মাণ শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুবে খোদা বলেন, সাইদা খালেকের লাশটি একটি ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এমন তথ্য পুলিশকে দেন রাজমিস্ত্রি আনোয়ারুল ইসলাম। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই অধ্যাপকের গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় লাশ পড়ে থাকে দেখে। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। অধ্যাপক সাইদা খালেক কাশিমপুরের পানিশাইল এলাকার মোশারফ মৃধার বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি সেখান থেকে নিজের নির্মাণাধীন প্রজেক্টের দেখাশোনা করছিলেন। ওই বাসা থেকে আনুমানিক ২০০ গজ দূরে তার লাশ পাওয়া যায়। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি সাইদা খালেক নিখোঁজের ঘটনায় তার মেয়ে সাদিয়া কাশিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সাউদ ইফতেখার জহির বাদী হয়ে আনোয়ারুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
আনোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, আনোয়ার তার সঙ্গীদের নিয়ে ১১ জানুয়ারি নিহত অধ্যাপকের বাসায় লুটপাট করে তাকে গলাটিপে হত্যা করে। পরে মির্জাবাড়ি থেকে কিছুটা দূর একটি জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে ফেলে দেয়। অধ্যাপক সাঈদা গাফ্ফারের বাড়ি থেকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লুটে নেয়া হয়েছে। আরও কী কী মালামাল নেয়া হয়েছে, তা বের করার চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাইদা খালেককে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হত্যা করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, তিনি একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে নতুন বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছিল। শ্রমিকরা বাড়ি নির্মাণের জন্য কিছু দাবি করছিল তার কাছে। তাদের সঙ্গে হয়তো সাইদা খালেকের মনোমানিল্য হয়েছিল। দুদিন আগে তিনি নিখোঁজ হন। সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, গত বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় সাইদার প্রজেক্টের কন্টাক্টর আনোয়ার তার ছেলের মোবাইলে ফোন করে জানান, বাসার দরজা খোলা এবং সাইদাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। রাত সোয়া ৯টায় তার ছেলে ও মেয়ে সাদিয়া আফরিন সেই বাসায় এসে তার মাকে কোথাও খুঁজে পাননি। পরে সাদিয়া আফরিন কাশিমপুর থানায় এ সংক্রান্ত জিডি করেন। যার নম্বর-৫৮৮। সাঈদার তিন মেয়ে ও এক ছেলে। তাদের মধ্যে দুই মেয়ে থাকেন অস্টেলিয়ায়, এক মেয়ে ঢাকার উত্তরায় এবং ছেলে মতিঝিলে থাকেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ