বরিশালের বাবুগঞ্জের ভূতেরদিয়া গ্রামের বিধবা নারী মরিয়ম বেগম রাতে একা নিজ ঘরে ঘুমিয়ে থাকলেও সকালে বাড়ি থেকে ২০০ গজ দূরে সন্ধা নদী তীরে মিলল তার লাশ। মাথায় গুরুতর জখম থাকায় ধারনা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছে। বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের উত্তর ভূতেরদিয়া গ্রামে বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।

নিহত মরিয়ম ওই গ্রামের মৃত হারুন অর রশিদের স্ত্রী। হারুন রশিদ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ১১ মাস আগে মৃত্যুবরন করেন। তার ২ ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মরিয়ম বেগমের ২ ছেলে ঢাকায় চাকুরী করে। বিবাহিতা ২ মেয়ে থাকে স্বামীর বাড়িতে। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র আসিফকে নিয়ে স্বামীর ভিটায় থাকতেন মরিয়ম বেগম।

প্রতিবেশীরা জানায়, ছেলে আসিফ বুধবার বিকেলে পাশের উপজেলা গৌরনদীর শরিকল গ্রামে বোন বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে মরিয়ম ঘরে একা ছিল। এক সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার জন্য সহপাঠী জয় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আসিফকে ডাকতে তাদের বাড়িতে যায়। দরজা বন্ধ ও ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে সে ঘরের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে।

জাহানারা বেগম বলেন, জয় তাকে দেখে জানায় যে আসিফ ও তার মাকে ডেকে কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছেনা। এসময় জাহানারা ঘরের পেছনে গিয়ে সেখানকার দরজা খোলা দেখেন। বাইরে জাহানারা বেগমের পায়ের স্যান্ডেল। ঘর থেকে নদীর দিকে যাওয়ার পথে ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে আছে। এসব দেখে জাহানারা বেগম ডাক চিৎকার দিয়ে প্রতিবেশীদের জড়ো করেন। পরে তারা প্রায় ২শ গজ দূরে সন্ধ্যা নদীর তীরে মরিয়মের লাশ দেখতে পান।
কেদারপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরে আলম বেপারী সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে তিনি ও বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে।

বাবুগঞ্জ থানার ওসি মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মরিয়ম বেগমের মাথায় গুরুতর জখম দেখে ধারনা করা হচ্ছে তাকে শক্ত কোন কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে একাধিক দুর্বৃত্ত অংশগ্রহন করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এ হত্যার আগে মৃতা গণধর্ষণের শিকার হয়েছে কি-না তা ময়না তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া নিশ্চিত হওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ওসি মাহবুব।