Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যোগী আদিত্যনাথের ৮০-২০-র অঙ্ক নিয়ে বিতর্ক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২২, ২:০২ পিএম

ভারতের উত্তরপ্রদেশের ভোটপ্রচারে ৮০-২০-র গল্প শুনিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক।

উত্তরপ্রদেশের ভোটের লড়াই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বক্তব্য, ''প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন অনেক এগিয়ে গেছে। লড়াইটা হচ্ছে ৮০ বনাম ২০-র।'' যোগীর ব্যাখ্যা, ''৮০ শতাংশ হলো জাতীয়তাবাদের সমর্থক, তারা উন্নয়নকে সমর্থন করে, আর এরাই বিজেপি-কে ভোট দেয়। এর উল্টোদিকে আছে ২০ শতাংশ, যারা মাফিয়া, অপরাধীদের সমর্থক, যারা কৃষক-বিরোধী।'' যোগী জানিয়েছেন, ''এই ২০ শতাংশ অন্যদিকে যাবে। তাই এটা ৮০-২০-র লড়াই। আর এই লড়াইয়ে পদ্মই জয়ী হবে। ১০ মার্চ ভোটগণনার পর বোঝা যাবে, ২০ শতাংশের ভোট কোনদিকে গেছে।''

রাজনীতিতে একটা চালু কথা আছে, রাজনীতির অঙ্ক এবং স্কুলপাঠ্য বইয়ের অঙ্ক আলাদা। প্রয়াত রাজনীতিক ও সাবেক মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ প্রায়ই একটা কথা সংসদে বলতেন, রাজনীতিতে দুইয়ের সঙ্গে দুই যোগ করলে সবসময় যে চার হবে তার কোনো মানে নেই। ২২-ও হতে পারে। যোগী আদিত্যনাথের এই রাজনীতির অঙ্ক নিয়ে তাই শুরু হয়েছে জল্পনা ও বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, কেন এই কথা বললেন আদিত্যনাথ?

লোকমত পত্রিকার রাজনৈতিক সম্পাদক শরদ গুপ্তা জানিয়েছেন, ''উত্তরপ্রদেশে হিন্দু-মুসলিমদের সংখ্যার সঙ্গে যোগীর ৮০-২০-র তত্ত্ব অনেকটাই মিলে গেছে। যোগী-রাজ্যে ৭৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ হিন্দু এবং ১৯ দশমিক ২৬ শতাংশ মুসলিম আছেন। তাছাড়া শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ ক্রিশ্চান ও শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ শিখ আছেন। তাহলে কি যোগীর অঙ্ক হিন্দু-মুসলিমদের সংখ্যার কথাই বলছে?''

বিজেপি নেতারা অন্য ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। বিজেপি নেতা অলোক ভাট এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, ''এর সঙ্গে হিন্দু-মুসলিমের সংখ্যার কোনো যোগ নেই।'' তার ব্যাখ্যা, ''যোগীজি যে ২০ শতাংশের কথা বলেছেন, তার মধ্যে নয় শতাংশ হলো অপরাধী ও অসামাজিক, সাড়ে তিন শতাংশ হলো জমি-দখলকারী, দুই শতাংশ হলো নারী নির্যাতনকারী, দুই শতাংশ পাকিস্তানপন্থি এবং দেড় শতাংশ 'বন্দে মাতরম' বিরোধী।'' অলোক ভাট জানিয়েছেন, এই হিসাব তিনি সামাজিক মাধ্যম থেকেই পেয়েছেন।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেছেন, ''ঘৃণাকে পরাজিত করার সেরা সুযোগ এটাই।'' আর কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা এবং মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং বলেছেন, ''যোগী নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। আচরণবিধি অনুসারে কোনো দল বা প্রার্থী ধর্ম, জাতি, ভাষা, সম্প্রদায়ের মানুষের মনে বিদ্বেষ বা বিবাদ হয় এমন কিছু বলতে বা করতে পারবেন না।'' সূত্র: পিটিআই, এএনআই।

 



 

Show all comments
  • ramzan ১১ জানুয়ারি, ২০২২, ২:৪৫ পিএম says : 0
    যোগি আদিত্যনাথ-কে ধন্যবাদ তিনি ইসলাম কিংবা মুসলিম শব্দ উচ্চারণ করেননি। পাকিস্তান শব্দটি ইসলাম এবং মুসলিম কোনটারই সমার্থক নয়। শব্দটিতে জড়িত রয়েছে সেদেশের কতিপয় প্রদেশের অদ্যাক্ষর মাত্র। যদি ইসলাম এবং মুসলিম শব্দ ব্যবহার করতেন তাহলে মুসলমানরা ছেড়ে কথা বলতেন না। তবে পাকিস্তান এসেছে মুসলমানের ত্যাগে। মুসলমানের ত্যাগ শুধু পাকিস্তানের জন্য নয় ভারতের স্বাধীনতার জন্যও। কারণ, উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ঐতিহাসিক ঘোষক ছিলেন হযরতুল আল্লাম শাহ অআবদুল আজিজ মুহাদ্দেস দেহলভী রহিমাহুল্লাহ-তিনিই সর্বপ্রথম ইংরেজ রাজ-রাজত্বের বিরুদ্ধে দারুল হরব ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বোপন করেছিলেন যার ফলশ্রুতিতে ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহ, তৎপরবর্তিতে ১৯৪৭ এর ১৪ আগষ্ট এবং ১৫ আগষ্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। বিষয়টি ঐতিহাসিক সত্য এবং অনস্বীকার্য। ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ। বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক ভাব মর্যাদা ভারতীয়দের নির্বাচনী আচরণ,নির্বাচনী মূল্যবোধের উপর তাই অনেকাংশে নির্ভরশীল। অআশা করি, গণতন্ত্রকে এমন খাতে ব্যবহার থেকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে বৈশ্বিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ- যা বর্তমানে ক্লিনিক্যাল ডেথ অবস্থায় রয়েছে তা থেকে মুক্তি পাবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ