মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপিটল হিলে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার এক বছর পূরণ হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি)। হামলার এক বছরের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র নিয়ে আমেরিকানরা এখনও ভীত বলে জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে। আবার এক-তৃতীয়াংশ আমেরিকানের দাবি, সরকারের বিরুদ্ধে এ ধরনের হামলা ও সহিংসতা কখনও কখনও ন্যায়সঙ্গত হতে পারে। ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও দাঙ্গার বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে রোববার (২ জানুয়ারি) দু’টি জরিপের ফলাফলে এই তথ্য উঠে এসেছে। -সিবিএস
আজ সোমবার (৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য সামনে এনেছে বার্তাসংস্থা এএফপি। এক বছর আগে ২০২১ সালের ওই দিনে ক্ষমতার মেয়াদের একেবারে শেষ দিকে ট্রাম্পের উসকানিতেই তার সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের পরিচালিত জরিপে দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকান জানিয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের নেতৃত্বে ক্যাপিটল ভবনে হওয়া এই হামলাটি ছিল ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সহিংসতার একটি বার্তা’। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র ‘হুমকির মুখে’।
এদিকে ওয়াশিংটন পোস্ট-ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের স্পষ্ট পতনের কারণে ‘গর্বিত’ আমেরিকানের সংখ্যাও কমে এসেছে। মার্কিন গণতন্ত্র নিয়ে গর্বিত আমেরিকানের সংখ্যা ২০০২ সালে ৯০ শতাংশ থাকলেও বর্তমানে তা ঠেকেছে ৫৪ শতাংশে। সিবিএস নিউজের জরিপে নির্বাচনের ফলাফল রক্ষার জন্য শক্তি ব্যবহার করার পক্ষে ২৮ শতাংশ আমেরিকান মত দিয়েছেন বলে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে ওয়াশিংটন পোস্টের জরিপ অনুযায়ী, ৩৪ শতাংশ আমেরিকানের বিশ্বাস- সরকারের বিরুদ্ধে একটি সহিংস পদক্ষেপ মাঝে মাঝে ন্যায়সঙ্গত হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। গত কয়েক দশকের মধ্যে এত বেশি সংখ্যক মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে সহিংস পদক্ষেপের পক্ষে মত দিলো।
দু’টি পৃথক এই জরিপের ফলাফলে কার্যত আমেরিকান সমাজের বিভক্তি এবং অসংলগ্ন দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে। যেমন, ক্যাপিটল দাঙ্গার ১৪ দিন পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন জো বাইডেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট সেই সংকট কাটিয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে এরপরও ট্রাম্প সমর্থকদের দুই-তৃতীয়াংশ এখনও বিশ্বস করছেন যে, জো বাইডেন বৈধভাবে নির্বাচিত কোনো প্রেসিডেন্ট নন। কারণ ক্যাপিটলে হামলার কিছু সময় আগে হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, নির্বাচনের ফলাফলে ‘জালিয়াতি’ হয়েছে এবং এ কারণে তাদেরকে ‘নরকের মতো যুদ্ধ’ করতে হবে।
অবশ্য জরিপে অংশ নেওয়া ৬০ শতাংশ আমেরিকান বলছেন, নির্বাচনে বাইডেনের জয়কে অনুমোদনের সময় ক্যাপিটল ভবনে হওয়া এই হামলার জন্য ট্রাম্পই অনেক বেশি দায়ী। তবে ওয়াশিংটন পোস্টের জরিপে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেওয়া ৮৩ শতাংশ ভোটার মনে করেন, ক্যাপিটলে হামলায় ট্রাম্পের ‘কিছুটা’ দায় রয়েছে অথবা কোনো দায় নেই। অন্যদিকে সিবিএসের জরিপে দেখা যাচ্ছে, ২৬ শতাংশ আমেরিকান চান ২০২৪ সালের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলে জো বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিতে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং উচ্চকক্ষ সিনেট সদস্যদের যৌথ অধিবেশন বসেছিল। অধিবেশন চলাকালে সেখানে হামলা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কয়েক হাজার উন্মত্ত সমর্থক। ওই দাঙ্গায় পুলিশ সদস্যসহ নিহত হয়েছিলেন ৫ জন। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে হওয়া এই হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের সরাসরি উসকানি ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে ট্রাম্প এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। এই ঘটনার পর সমালোচনার মুখে ক্যাপিটল পুলিশের প্রধান পদত্যাগ করেছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।