Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের অনুরূপ বৌদ্ধদেরও পুড়িয়ে মারছে মিয়ানমার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

মিয়ানমারে নিজের গ্রামে ফিরে একটি পোড়া কুঁড়েঘরের মধ্যে হাত-পা বাঁধা পোড়া লাশ দেখতে পেয়েছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তরুণ কৃষকটি। ওই পোড়া লাশ থেকে তখনও ধোঁয়া বের হচ্ছিল। মিয়ানমারের সেনারা ৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় ডন টাও গ্রামটিতে হামলা চালিয়েছিল। প্রায় ৫০ জন সেনা পায়ে হেঁটে লোকদের খুঁজে খুঁজে বের করেছে। তরুণটির খামারের লোকজন ও অন্যান্য গ্রামবাসী প্রাণের ভয়ে জঙ্গল ও মাঠে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেনারা ১০ জনকে ধরতে সক্ষম হয় এবং তাদের নিয়ে গিয়ে গুলি করে ও পুড়িয়ে হত্যা করে। এদের মধ্যে পাঁচ জন কিশোর ছিল, যাদের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ১৪ বছর। ওই তরুণ কৃষক জানান, তার বন্ধু সেনাদের নির্মমতার কিছু ছবি তুলতে পেরেছিল। এর একটিতে দেখা গেছে, এক গ্রামবাসীর পোড়া দেহাবশেষ মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। বার্তা সংস্থা এপিকে তিনি বলেন, ‘আমি একেবারে বিপর্যস্ত, এটা অগ্রহণযোগ্য।’ ৪০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি ও তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তিতে এপির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ডন টাও-তে স¤প্রতি এই হত্যাকাÐ ঘটিয়েছে সেনারা। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে গণহত্যার কৌশলকে যে বেছে নিচ্ছে এটা তারই ইঙ্গিত। সামরিক বাহিনীর সহিংসতার সর্বশেষ নজির হচ্ছে বেসামরিক নাগরিক ও বিরোধীদের গণহত্যা ও অগ্নিসংযোগ বা পুরো গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে তারা নিজেদের নাগরিকদের ওপর আরও নৃশংসভাবে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। তারা যুবক ও কিশোরদের অপহরণ করেছে, স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের হত্যা করছে এবং বন্দীদের নির্যাতন করছে। ২০১৭ সালে রাখাইনের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর যেভাবে নিপীড়ন চালিয়েছিল সেনারা ঠিক একই পদ্ধতিতে এখন তারা জাতিগতভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ বামার জনগোষ্ঠীর ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। গত সপ্তাহে মো সো গ্রামে অন্তত ৩৫ বেসামরিক নাগরিককে পুড়িয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে সেনারা। এদের মধ্যে দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের দুই কর্মীও ছিল। এর বাইরে গত আগস্ট থেকে শুধুমাত্র সাগাইং অঞ্চলে ৮০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে সেনারা। এপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ