মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এটি পুরনো আলাপ। নতুন বিষয় হলো, এর ফলে যে অর্থনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে সেটি পূরণ করতে নতুন ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারিত্ব সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। বলা হচ্ছে, মূলত চীনের উত্থান ঠেকাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর নিক্কেই এশিয়া। ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্কের পরিকল্পনা বিস্তারের কাজে কিছুদিন আগেই এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী গিনা রাইমন্ডো ও দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথরিন তাই। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও চলতি মাসের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রাথমিক কাজটুকু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এসব কাজের মূল লক্ষ্য চীনকে কড়া জবাব দেয়া। দেশটি চায়, সরবরাহ চেইনকে যতটুকু সম্ভব চীনের প্রভাবমুক্ত করতে। মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী, নতুন অংশীদারিত্বের কাঠামো এমনভাবে সাজানো হবে, যেন এর ভেতর তথ্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য সাধারণ কিছু নিয়ম অন্তর্ভুক্ত থাকে। সাম্প্রতিক মালয়েশিয়া সফরে গিনা রাইমন্ডো একটি চিপ কারখানা পরিদর্শন করেছেন, যেটি মহামারীর কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। সে সময়ই তিনি সরবরাহ চেইন সুরক্ষার বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি অবকাঠামোগত সহায়তার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে। খাতটিতে এরই মধ্যে চীন দারুণ অগ্রগতি দেখিয়েছে। এশিয়ার দেশগুলোতে সবসময়ই বিদেশী বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হয়। ফলে এবারো যদি যুক্তরাষ্ট্র অবকাঠামো, টেলিযোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে, তাহলে সেক্ষেত্রে অংশীদারিত্বে সমস্যা সৃষ্টি হবে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেমন হবে নতুন ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারিত্বের কাঠামো? এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা কম হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, নতুন এ কাঠামো কোনো প্রথাগত বাণিজ্য চুক্তির মতো হবে না। কিন্তু আসলে এটি কেমন হবে তার বিস্তারিত জানানো হয়নি। যেমন এ চুক্তিতে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকবে কিনা সেটিও স্পষ্ট করা হয়নি। তবে জাপান সরকারের একজন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বলেছেন, এ অংশীদারিত্বের ধারণাটি আসলে এখনো পরিপূর্ণভাবে চিন্তা করা হয়নি। কেবল মাঠ গোছানোর কাজ চলছে। যেহেতু এরই মধ্যে চীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অঙ্গনে একটি অবস্থান তৈরি করে ফেলেছে, তাই যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত নিজেদের পদক্ষেপ বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চায়। আর সে কারণেই বেশ তাড়াহুড়ো করছে দেশটি। অন্যদিকে নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গঠিত জোট কোয়াডের চার দেশ অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া এরই মধ্যে চিপসহ অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ চেইনকে আরো শক্তিশালী করতে কাজ শুরু করেছে। অন্যদিকে সিঙ্গাপুর, চিলি ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ডিজিটাল ইকোনমি পার্টনারশিপ চুক্তি হয়েছে। অবকাঠামো খাতে জি৭ জোটের দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের প্রস্তাবিত নতুন কাঠামোর উদ্দেশ্য মূলত ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকাজুড়ে কাজ করা বিভিন্ন আঞ্চলিক উদ্যোগকে একত্র করা। অন্যদিকে এরই মধ্যে ট্রান্স-প্যাসিফিক অংশীদারিত্ব চুক্তিতে যোগ দিতে আবেদন করেছে চীন। এর পরই রয়েছে তাইওয়ানের আবেদন। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়াও এ চুক্তির অংশ হতে চায়, সে লক্ষ্যে প্রক্রিয়াও শুরু করেছে তারা। ১৫ সদস্যের আঞ্চলিক অংশীদারিত্বের এ চুক্তি আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে বেশির ভাগ দেশের জন্য কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। এই যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে ঘিরে দুটি আলাদা বলয় তৈরি হচ্ছে, সেখান থেকে একটিকে বেছে নিতে আগ্রহী নয় বিশ্বের অনেক দেশই। নিক্কেই এশিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।