Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে মুসলিম বিশ্ব

১৯৬৭’র সীমানায় ফিরলে আরব নিউজকে জাতিসংঘে সউদী রাষ্ট্রদূত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

আরব শান্তি উদ্যোগ পরিকল্পনায় ইসরাইলের ১৯৬৭ সালের সীমান্তে ফিরে আসার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। আরব নিউজের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘে সউদী আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল-মুয়াল্লিমি দাবি করেছেন যে, ‘পুরো মুসলিম বিশ্ব’ ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিতে এবং তেল আবিবের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে প্রস্তুত যদি তারা ১৯৬৭ সালের ১ জুন দখল করা অঞ্চল থেকে সরে যেতে রাজি হয়।

সেই দিন ইসরাইল তার তিনটি বৃহত্তম প্রতিবেশী মিশর, সিরিয়া এবং জর্ডানের বিরুদ্ধে ছয় দিনের যুদ্ধে প্রবেশ করে এবং সিনাই উপদ্বীপ, গোলান মালভূমি, পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকা দখল করে তাদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে। যদিও ইসরাইল ১৯৭৯ সালে মিসরের কাছে সিনাই ফিরিয়ে দেয় এবং ১৯৮১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে গোলান মালভূমিকে সংযুক্ত করে পশ্চিম তীর এবং গাজা স্ট্রিপের অবস্থা বিশেষ করে পূর্বের বিতর্কিতই রয়ে গেছে। ইসরাইল ঐসব অঞ্চলে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে নীতিগতভাবে সম্মত হলেও তারা সেখানেও বসতি স্থাপন করেছে, বিশেষভাবে পূর্ব জেরুজালেমে এবং পূর্বে জর্ডান নদীর তীরে।

সারাংশে সউদী রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবটি নতুন নয়। তারা একই প্রস্তাব ২০০২ সালেও দিয়েছিল যাকে ‘আরব শান্তি উদ্যোগ’ বলা হয়। আল-মুয়াল্লিমি সাক্ষাৎকারের সময় তা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি এবং সর্বশেষ সউদী অবস্থান হল যে, ২০০২ সালে উপস্থাপিত সউদী শান্তি উদ্যোগের উপাদানগুলো ইসরাইল বাস্তবায়ন করার সাথে সাথেই আমরা ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে প্রস্তুত’।

আরব শান্তি উদ্যোগ পরিকল্পনায় ইসরাইলের ১৯৬৭ সালের সীমান্তে ফিরে আসার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। ড. আল-মুয়াল্লিমি বলেন, ‘যদি এটি ঘটে, শুধুমাত্র সউদী আরব নয়, সমগ্র মুসলিম বিশ্ব, ওআইসি [ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা] এর সব সদস্য তথা ৫৭টি দেশ ইসরাইল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার এবং সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে এটি অনুসরণ করবে’।

ইসরাইল অতীতে আরব শান্তি উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ইসরাইলে পুনরায় অভিবাসনের অনুমতি দেওয়ার জেদ প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ একটি কনস্টিটুয়েন্সিও গাজা উপত্যকা থেকে ২০০৫ সালে দেশটির প্রত্যাহারের নজির উল্লেখ করে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের মধ্যে ইসরাইলি বসতি ভেঙে ফেলার দৃঢ় বিরোধিতা করেছে যা হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীর দ্বারা দখলের পথ প্রশস্ত করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ গোষ্ঠীকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে মনোনীত করেছে।

বহুলাংশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং বেশিরভাগ আরব প্রায় ত্রিশটি দেশ ইসরাইলকে কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি। ছয় দিনের যুদ্ধের পর সুদানের খার্তুমে আরব লিগের ১৯৬৭ সালের শীর্ষ সম্মেলনে একটি রেজোলিউশনে ঘোষণা করা হয়েছিল যে, ‘ইসরাইলের সাথে কোনো শান্তি স্থাপন, স্বীকৃতি দেয়া হবে না [এবং] এর সাথে কোন আলোচনা হবে না। খার্তুম অবশ্য ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কোর পাশাপাশি ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়া চারটি আরব রাজধানীর মধ্যে একটি ছিল।

যদিও সউদী আরব কখনোই ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে দুটি দেশ তাদের পারস্পরিক প্রতিপক্ষ ইরানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধিতে নিযুক্ত রয়েছে এবং উল্লেখযোগ্য জল্পনা ছিল যে, সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ২০২০ সালে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য দেশটিকে চাপ দেবেন। তবে শেষ পর্যন্ত সউদী কর্মকর্তারা নিরুৎসাহিত করেছেন। তারা এ যুক্তির পুনরাবৃত্তি করেছেন যে, ফিলিস্তিন সমস্যাটি প্রথমে কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা উচিত। সূত্র : ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট।



 

Show all comments
  • Afrin Jahan Saima ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৪০ এএম says : 0
    মুসলিমরা সবসময়ই জানতো কেয়ামতের পূর্বে ইহুদি রাষ্ট্র গঠিত হবে। কিন্তু যখন জায়নিস্ট মুভমেন্ট হলো তখন মুসলীম নেতারা কেনো চুপ ছিলো আমি বুঝিনা। ওসমানী সুলতানদের আয়েশী জীবন যাপন আর তুর্কির কিছু মুনাফিকদের ষড়যন্ত্রে অটোমান সাম্রাজ্য ধ্বংস হলো। সেই সাথে শেষ হলো মুসলিমদের সুদিন। যখন ইহুদীরা ফিলিস্তিনে কলোনি স্থাপন করেছিলো উম্মাহ তখনও চুপ ছিলো, এখনো চুপ আছে। মুসলিম রাষ্ট্র প্রধানদের ভাব এমন ফিলিস্তিনি রা মরলে মরুক আমাদের কি? আমরা শান্তিতে থাকলেই হলো। বর্তমানে সৌদিআরব সবচেয়ে বড় কালপ্রিট
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammadabdul Haq ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৪১ এএম says : 0
    আল্লাহ সর্বশক্তিমান ইসরাইলকে কিভাবে শায়েস্তা করতে হয় আল্লাহর তরফ থেকে গায়েবী মদদ আসবেই ইনশাল্লাহ। শুধু সময়ের অপেক্ষা
    Total Reply(0) Reply
  • MD Shafuj Uddin Sobuj ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৪১ এএম says : 0
    পৃথিবীর তালিকা থেকে একদিন ইসরায়েলেরনাম মুছে যাবে,তার জন্য ইসরায়েল নিজেরাইদায়ী থাকবে, কারন তারা সন্ত্রাস।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Rony Babuny ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৪১ এএম says : 0
    পশ্চিমারা কখনো মুসলমানদের ভালো চাইনি আর কখনো চাইবে না,আর এই কথা গুলো মুসলিম নেতারা যেনে বুঝে না বুঝার চেস্টা করে এবং পশ্চিমাদের দালালি করে,আর ওদের জন্য বলিরপাঠা হয় সাধারণ জনগণ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mrh Sabbir ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৪২ এএম says : 0
    ইহুদীরা আমেরিকাকে পরাশক্তি বানিয়েছে, আবার তারাই আমেরিকাকে প্রয়োজন শেষে ধ্বংস করবে! কারণ এখন সময় ইস্রাইল রাষ্ট্রকে পরাশক্তি বানানোর!
    Total Reply(0) Reply
  • Md Sayed ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৪২ এএম says : 0
    সব মুসলমান নেতারা যদি এক হতো যে ইসরায়েল বলে কোন দেশ থাকবে না তাহলে ইসরায়েল কে ধ্বংস করা কোন ব্যাপার না
    Total Reply(0) Reply
  • শরিফুল ইসলাম ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৪২ এএম says : 0
    আল্লাহ আমাদের সকল মুসলমান ভাইদের হেফাজত করুন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী আরব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ