মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করলে অং সান সুচি এবং মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ আরো বিপন্ন হতে পারে৷ কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি সেরকম কিছু ভাবছে?
সম্প্রতি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং করোনাবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সুচি-কে দু বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের আদালত৷ এ রায়কে সুচি-কে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্রের অংশ বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং কানাডা সেনা শাসকদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ‘অবরোধের' ঘোষণা দিয়েছে৷
বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং কানাডার এই ঘোষণার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নও নতুন অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা না দিলে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কাছে তার ভুল বার্তা যাবে৷ জান্তা সরকার হয়ত ধরে নেবে, ইইউ সুচি-র মুক্তি এবং মিয়ানমারে গণতন্ত্রের বিষয়কে আর গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে না৷
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট তাই ইইউ-এর প্রতি মিয়ানমারের সামরিক সরকারের ওপর নতুন করে আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন৷ এ বিষয়ে ইইউর সিদ্ধান্ত জানার জন্য ইইউর মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও ডয়চে ভেলেকে তিনি কিছু বলতে চাননি৷
দীর্ঘদিন সংগ্রাম করেছেন সুচি৷ ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নোবেলজয়ী এই নেত্রীর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)-ই নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছিল৷ কিন্তু সামরিক বাহিনী সেই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে বলে সুচিকে গ্রেপ্তার করে ক্ষমতা দখল করে৷ তারপর বেশ কিছু অভিযোগে অনেকগুলো মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে৷ সব মামলায় সাজা হলে সব মিলিয়ে একশ বছরেরও কারাদণ্ড হতে পারে শান্তিতে নোবেল জয়ী সুচির৷
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা বার্মা ক্যাম্পেইন-এর পরিচালক মার্ক ফার্মানার মনে করেন, ইইউর উচিত আবার মিয়ানমারের সেনা শাসক এবং তাদের আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে ক্রিয়াশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘ইইউ সর্বশেষ অবরোধটি যে আরোপ করেছিল তা-ও ছয় মাস হয়ে গেছে৷ আবার কোনো অবরোধের ঘোষণা না দিলে (মিয়ানমারের) সেনাবাহিনী মন করবে ইইউ তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নেবে না৷''
গত ফেব্রুয়ারিতে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের সেনা শাসকদের বিরুদ্ধে তিনবার অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে ইইউ৷ সর্বশেষ ঘোষণাটি এসেছিল গত জুনে৷ কিন্তু বাইরের দেশগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের অর্থনৈতিক অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় মিয়ানমারের সেনা শাসকদের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি৷ সুচি এবং গণতন্ত্রের মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারে এখনো চলছে আন্দোলন৷ সেনাবাহিনী এবং পুলিশের হামলায় এ পর্যন্ত ১৩০০ আন্দোলনকর্মী নিহত হয়েছেন৷
ব্রিটেনভিত্তিক শিক্ষাবিদ ক্রিস্টিনা কিরোনস্কা-ও মনে করেন মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে চাপে রাখতে হলে আবার নতুন অবরোধের ঘোষণা দিতে হবে ইইউকে৷ মিয়ানমারের বিষয়ে ইইউ-র সাম্প্রতিক নিষ্ক্রিয়তা ও নীরবতায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ইইউ আসলে অতীত থেকে শিক্ষা নেয়নি, যদিও ‘‘এক সময় ইইউ বড় কিছু ঘটলে যে বছরে একবার অবরোধ আরোপের ঘোষণা দিতো- সাম্প্রতিক সময়ে সেই নিয়ম থেকে বেরিয়ে আসায় মনে হচ্ছিল ইইউ অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছে৷''
গত সপ্তাহের শুরুতে এক বিবৃতিতে ইইউ-র পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কমিটির প্রধান ইয়োসেপ বোরেল বলেন, ‘‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত এই রায়ের তীব্র নিন্দা জানায়৷ সামরিক অভ্যুত্থানের পর এটি মিয়ানমারের গণতন্ত্রের জন্য আরেকটি বড় আঘাত৷'' তারপর থেকে সুচি এবং মিয়ানমারের গণতন্ত্রের বিষয়ে উদ্বেগ বা সামরিক শাসকদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে কোনো বিবৃতিও দেয়নি ইইউ৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।