Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

ভারসাম্যের খেলা দেখিয়ে রেকর্ড গড়লেন অধ্যাপক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩:৫৩ পিএম

এও কী সম্ভব! বিন্দুসম জায়গার উপর দাঁড়িয়ে সারি সারি ইট, চেয়ার, টেবিল, গ্যাস সিলিন্ডার। কখনও আলমারি, সোফা, টিভি। ভারসাম্যের এক অবিশ্বাস্য খেলা! কোনও হাত সাফাই নেই, বুজরুকি নেই। চোখে ধুলা দেয়া নেই। এ যেন এক শিল্প। ভারাসাম্য শিল্প! যার পিছনে রয়েছে নিখাদ পদার্থ বিজ্ঞান।

হ্যাঁ, বিজ্ঞানের জোরেই ভারসাম্য শিল্পকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়ে বিশ্বকে তাক লাগালেন এক বঙ্গতনয়। ডক্টর প্রিয়দর্শী মজুমদার। বারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ইলেক্ট্রনিক্সের এই অধ্যাপকই ব্যালেন্সিং আর্টে নজির গড়ে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছেন। ব্যালেন্সিং আর্ট এখন প্রিয়দর্শীর নেশা। বাড়ির কোনও জিনিস দেখলেই তিনি সেগুলোকে একটা বিন্দুর উপর দাঁড় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। একটার উপর একটা কাপ আর গ্লাস অদ্ভুতভাবে কাত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

শুধু ছোট জিনিসই নয়, বড় আর ভারী জিনিসকেও তিনি অবলীলায় দ্রুত একটা কোণের উপর দাঁড় করিয়ে দিতে পারেন। চেয়ার, টেবিল, কাঠের আলমারি, গ্যাস সিলিন্ডার, টিভি, সোফা এসব একটা বিন্দুতে দাঁড় করিয়ে দেয়া তার কাছে এখন ‘বায়ে হাত কা খেল’। সাধারণত ইটের টুকরো বা কাঁচের বোতলের উপরেই চলে খেলা। প্রায় ১২৫ রকমের ব্যালেন্সিং আর্টের মডেল গড়েছেন প্রিয়দর্শী।

পদার্থবিদ্যায় পি.এইচডি. করার মধ্য দিয়ে গবেষণা জগতে পা রাখেন প্রিয়দর্শী। কোনো বস্তু বা বস্তুসমষ্টির ভরকেন্দ্র নিয়ে মৌলিক চিন্তা ভাবনা করার ফাঁকেই ২০১৯ সালের নভেম্বরে একটি খবর তাঁর নজরে আসে। ইজরায়েলের এক জিম প্রশিক্ষক মোহাম্মদ আল শেনবারি অদ্ভুত দক্ষতার সাথে ঘরোয়া জিনিসপত্রকে একটি বিন্দুর উপর দাঁড় করিয়ে দিচ্ছিলেন।

আপাতদৃষ্টিতে শেনবারির কাজগুলো অবিশাস্য মনে হলেও পদার্থবিদ্যার গবেষক-বিজ্ঞানী প্রিয়দর্শী বুঝতে পারেন যে এই শিল্পের মূলে বিজ্ঞানের মূলসূত্রই কাজ করছে। বলবিদ্যার সূত্র অনুযায়ী, কোনো বস্তুতে বা বস্তুসমষ্টিতে যদি টর্ক কাজ না করে আর একটি মাত্র লম্বালম্বি বল নিচের দিকে কাজ করে তবে সেই বস্তু (বা সমষ্টি) একটি বিন্দুতে দাঁড়িয়ে থাকতেই পারে।

কিন্তু এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত কঠিন। কারণ সামান্য হাওয়ার ধাক্কাতেই সবকিছু পরে যাওয়ার কথা। এখানেই শুরু হয় প্রিয়দর্শীর গবেষণা। দমদম নাগেরবাজারের বাড়িতে পয়েন্ট ব্যালেন্সিং আর্ট নিয়ে চর্চা শুরু করেন তিনি। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টাতেই রপ্ত করেন দক্ষতা। তার উপলব্ধি “অভ্যাস যথেষ্ট নয়, অত্যন্ত শক্তিশালী মনস্তাত্ত্বিক শক্তি ও ধৈর্য ছাড়া এই শিল্পে সফল হওয়া কঠিন”| তার কথায়, “যখন আমি ব্যালান্স করি তখন সম্পূর্ণ অন্য জগতে বিচরণ করি, কোনো জিনিস ব্যালান্স হবার ঠিক আগের মুহূর্তে কেউ আমাকে ভিতর থেকে বলে দেয় এবার হাত দু’টো সরিয়ে নাও কারণ ব্যালান্স হয়ে গেছে, আর পড়বে না।” সূত্র: টাইমস নাউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ