Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মার্কিন পুলিশের গুলিতে নিহত সাড়ে ৭ হাজার

৭ বছরের চিত্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৭ বছরে পুলিশের গুলিতে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের একটি পরিসংখ্যানমূলক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে। অনেকটা একই ধরনের তথ্য উঠে এসেছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনেও।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে অনেক আগে থেকেই। তবে দেশের ভেতরে মানবাধিকারের পাশাপাশি গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিশ্চিতে নিজেদেরকে অত্যন্ত সক্রিয় হিসেবেও প্রদর্শন করে থাকে দেশটি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশের বিচারবহির্ভ‚ত হত্যা এবং নৃশংসতা নিয়ে সারা বিশ্বেই ব্যাপক হতাশা ও ক্ষোভ রয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্কিন পুলিশের হাতে বিচার বহির্ভ‚তভাবে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে বহু প্রতিবাদ-বিক্ষোভও হয়েছে।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডে ২০২০ সালের ১ জুন প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৭ বছরে পুলিশের গুলিতে ৭ হাজার ৬৬৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৩ সালে পুলিশের গুলিতে ১ হাজার ১০৬ জন, ২০১৪ সালে ১ হাজার ৫০ জন, ২০১৫ সালে ১ হাজার ১০৩ জন, ২০১৬ সালে ১ হাজার ৭১ জন, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৯৫ জন, ২০১৮ সালে ১ হাজার ১৪৩ জন এবং ২০১৯ সালে ১ হাজার ৯৮ জন নিহত হয়েছেন।

পরিসংখ্যানের অন্তর্ভুক্ত ৭ বছরের মধ্যে পুলিশের গুলিতে ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৪৩ জন নিহত হয়েছেন। আর ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পুলিশে গুলিতে গড় প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ১১০০ জন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশের গুলিতে হতাহত হয়েছেন। এই পরিসংখ্যানে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু অথবা অন্য পদ্ধতিতে নিহত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এছাড়া ওই সময়কালে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক অসম হারে পুলিশের গুলিতে নিহত বা আহত হয়েছেন, যা একইভাবে হতাহত শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে অন্তত তিনগুণ বেশি। অবশ্য বছরের পর বছর ধরে চলা মার্কিন পুলিশের এই নৃশংসতা ও বর্বরতার কারণে বাহিনীটির সংস্কার দাবিতে বহুবার বিক্ষোভ হয়েছে, এমনকি বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্কও।

অনেকটা একই ধরনের তথ্য উঠে এসেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের পরিসংখ্যানেও। ২০১৪ সালে মাইকেল ব্রাউন নামে নিরস্ত্র এক কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর থেকে প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি বিচার বহির্ভ‚ত হত্যাকান্ডের হিসেব রাখা শুরু করে। ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা টানা চার বছর ধরে এক হাজারের আশপাশেই রয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে পুলিশের গুলিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৯৯৮ জন নিহত হয়েছিলেন। ২০১৭ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৯৮৭ জন। অর্থাৎ ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে এই সংখ্যাটি ১১ জন বেশি। এছাড়া ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে নিহত মানুষের সংখ্যা ৯৬৩ জন এবং ২০১৫ সালে এই সংখ্যা ছিল ৯৯৫ জন। প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বছরজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার এই তথ্যগুলো বিভিন্ন সংবাদ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং পুলিশ প্রতিবেদন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া টানা ৫ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যমটির ভাষ্য, প্রতিবছর গোলাগুলির ঘটনার মোট সংখ্যা এবং নিহত মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক একই জায়গায় স্থির রয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো মানুষের মধ্যে ৯৫ শতাংশই পুরুষ। এছাড়া নিহত মোট মানুষের অর্ধেকের বেশি সংখ্যকের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সকল অঙ্গরাজ্যেই পুলিশের গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে নিউ মেক্সিকো, আলাস্কা এবং ওকলাহামা। সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড, ওয়াশিংটন পোস্ট।



 

Show all comments
  • হাসান সোহাগ ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৩:৫২ এএম says : 0
    তাদের উচিত আগে নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখা
    Total Reply(0) Reply
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৪২ এএম says : 0
    এটি আমেরিকার গনতন্ত্রের সামান্য চিত্রনাট্য বিতরে আরও ভয়াবহ। পৃথিবীতে অশান্তির একমাত্র কারণের মাঝে ইসরাইল আমেরিকা একটি কারণ। গোটা মধ‍্যপ্রার্চে আমেরিকার গনতন্ত্র রাজা বাদশাহরা আমেরিকার গোলাম পরিণত করেছেন। ইরাক ধ্বংস ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে লাখ লাখ মানুষ হত‍্য করেছে দেশের প্রেসিডেন্ট কে ঈদুল আযহার ফাসিতে ঝুলিয়েছে আমেরিকা। আফগানিস্তানে আমেরিকা গনতন্ত্রের কবরস্থানে বানিয়েছেন। আমেরিকা অর্থ অস্ত্রে শক্তিশালী একক পরাশক্তি পৃথিবীতে যা কিছুই করুক গনতন্ত্র জায়েজ।প্রতিবাদ করার শক্তি সাহসনেই দেশের মানুষ কে নির্বচারে হত‍্যাকরে অস্ত্র অর্থ দিয়ে ইসরাইল কে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত‍্যা করে। আমেরিকার শক্তি সাহসের কারণে কথায় কথায় মধ‍্যপ্রার্চে ইসরাইলী বিমান হামলার স্বীকার হাজার হাজার বাড়ি ঘর মসজিদ মাদ্রাসা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।হাজার হাজারো নিরহ মানুষের রক্ত ক্ষতবিক্ষত গোটা উপসাগরীয় এলাকা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তীক্ষ্ণ নজর পড়েছে। আমাদের আইন শৃংখলা বাহিনীর বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ ভিশা বাতিল। সত্যি অন্য জায়গাই বাংলাদেশের এই বিশ্ময়কর অগ্রগতি উন্নয়ন চীন ভারতের খেলাই মধ্য পড়েছে। এর জন্যে দায়ী বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বহীনতা কুটনৈতিক ব‍্যার্থতা। আমেরিকা আন্তর্জাতিক শয়তানের বড়ভাই সরকার আমেরিকার বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা নেই। বাংলাদেশ দক্ষ কুটনৈতিক প্রজ্ঞা দায়িত্বশীল ভূমিকায় এগিয়ে যাবে দেশ। প্রতি বসর হাজারো মানুষ কে বিনা বিনা বিচারে গুলিতে খুন হতে হয়। তাদের কাছে মানবধিকার গনতন্ত্র নিয়ে কথা বলার যুক্তি আছে??????।
    Total Reply(0) Reply
  • mamoon ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৫৮ এএম says : 0
    era abar manobidhekar er sobok dae shame
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ