Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাগাল্যান্ডে অমিত শাহের কুশপুত্তলিকা দাহ, ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

নাগাল্যান্ডে সেনাবাহিনীর গুলিতে সম্প্রতি ১৪ বেসামরিক খনি শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে পার্লামেন্টে দেয়া ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দেয়া বিবৃতিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ওই এলাকার জনগণ। পার্লামেন্টে মিথ্যা বলার জন্য তারা অমিত শাহকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সাত দিন আগে নাগাল্যান্ডের মন জেলায় জঙ্গি সন্দেহে খনি শ্রমিকদের বহনকারী একটি ট্রাকে সেনাবাহিনী গুলি চালায়। এতে কমপক্ষে ৬ শ্রমিক নিহত হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাদের ওপরও সেনারা গুলি চালায়। এতে আরো কমপক্ষে ৭ জন নিহত হন। ফলে উত্তেজনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে।

এর প্রেক্ষিতে সোমবার ভারতে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে একটি বিবৃতি দেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী গ্রামবাসীকে বহনকারী একটি ট্রাক থামতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তা না থেমে দ্রুত চলে যাচ্ছিল। শুধু এ সময়ই সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট তাদের দিকে গুলি ছুড়েছে। তাদের সন্দেহ ছিল ওই ট্রাকে জঙ্গিরা অবস্থান করছিল। ওদিকে প্রথমদিকে সেনাবাহিনী জানায়, তাদের এক সদস্য মনে করেছিলেন ওই ট্রাকে একটি রাইফেল দেখতে পেয়েছিলেন । এ ঘটনা মেজর জেনারেল পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।

অমিত শাহের ওই বক্তব্যকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে আখ্যায়িত করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। একই সঙ্গে বিক্ষোভ করেছেন আর্মড ফোর্সেস (স্পেশাল পাওয়ারস) অ্যাক্ট (এএফএসপিএ) বাতিলের দাবিতে। এ দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নিফিউ রিও এবং মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাঙ্গমা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে কোনিয়াক ইউনিয়ন নামে স্থানীয় উপজাতিদের সংগঠন প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করে। তারা একই সঙ্গে অবিলম্বে অমিত শাহকে ক্ষমা চাইতে এবং পার্লামেন্টের রেকর্ডস থেকে তার বিবৃতি প্রত্যাহার দাবি করেছে।
কোনিয়াক ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট হোনাং কোনিয়াক বলেন, আমরা ন্যায়বিচার চাইছি, সহানুভূতি চাই না। সত্যকে মিথ্যা বানিয়ে দেয়া দুর্ভাগ্যজনক। পার্লামেন্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সেই ভুল বক্তব্য বিশ্বকে বিভ্রান্ত করবে। অবিলম্বে তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করা উচিত এবং ক্ষমা চাওয়া উচিত। ওই ঘটনায় যে ১৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে তার ন্যায়বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।

কোনিয়াক ইউনিয়ন বলেছে, তারা এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেছে, তার সঙ্গে যুক্ত হবে এই দাবিগুলো। এর আগের দাবিগুলো হলো- সেনাদের ব্যর্থ ওই অভিযান সম্পর্কে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে, এর সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিদ্যমান আইনের অধীনে শাস্তি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে সেনাদের ওই অভিযানে গ্রামবাসী নিহত হলেও কোনো অস্ত্রশস্ত্র বা গোলাবারুদ উদ্ধার করতে পারেনি সেনারা। তবে তাদেরকে বহনকারী ট্রাকে যারা ছিলেন, তারা নিরপরাধ কয়লাশ্রমিক। কাজ শেষে ঘরে ফিরছিলেন। এই হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন নাগাল্যান্ড এবং বিরোধী দলগুলো। নিন্দা জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি, নাগাল্যান্ড বিজেপির প্রধান তেমজেন ইম্মা আলোং। তিনি একজন মন্ত্রী। এই হত্যাকে তিনি গণহত্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন। সূত্র : এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ