মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
স্বাধীন একটি দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে ১৯৭১ সালের ছয়ই ডিসেম্বর স্বীকৃতি দিয়েছিল প্রতিবেশী ভারত। সেই স্বীকৃতির ৫০ বছর উপলক্ষে মৈত্রী দিবস উদযাপন করছে দুই দেশ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটির বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি যুদ্ধে সহায়তাও করেছে। কিন্তু ৫০ বছর পরেও দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটা 'লাভ-হেট' অর্থা' একই সাথে ভালোবাসা ও ঘৃণার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যেই কেউ কেউ অপর দেশকে পছন্দ করেন, আবার কারও মধ্যে রয়েছে বিরূপ মনোভাব। এর পেছনে কারণগুলো কী?
বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যে মৈত্রী দিবস উদযাপন করা হচ্ছে, এটি জানিয়ে বিবিসি বাংলা নিজস্ব ফেসবুক পাতায় একটি পোস্ট দিয়েছিল। সেখানে অনেকেই যেমন স্বীকৃতির জন্য, মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকে ভারতের প্রতি চরম ঘৃণাসূচক মন্তব্যও করেছেন। এই পোস্টে বাংলাদেশ ও ভারত- উভয় দেশের নাগরিকরাই মন্তব্য করেছেন। আতিক হাসান মন্তব্য করেছেন, অবশ্যই এটা আমাদের একটা ঐতিহাসিক দিন! তাদের এই সহযোগিতার জন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ। তবে আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্ক আরও বন্ধুত্বপূর্ণ হোক এই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। রায়হান আফ্রিদি লিখেছেন, দু'দেশের মৈত্রী চিরকাল অটুট থাকুক। আমরা জাতি হিসেবে খুবই ভাগ্যবান যে ভারতের মত সাহায্যপরায়ণ প্রতিবেশী দেশকে বন্ধু হিসেবে পেয়েছি। এই মন্তব্যে ১৯ জন লাইক দিলেও ৪৯ জন হাসির ইমো দিয়েছেন।
শেখ সাদী পাল্টা জবাবে লিখেছেন, বন্ধুত্বের প্রতিদান সীমান্তে লাশ, মাদক চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার, বিপদের দিনে শত্রুকে সহায়তা ইত্যাদি কী কাম্য হতে পারে? ভারতের মত বন্ধু থাকলে শত্রুর প্রয়োজন হয় না। ভুটান বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছে দাবি করে মোঃ এম রহমান লিখেছেন, ''স্বীকৃতি দেয়া দেশ নিয়ে যদি কোন মৈত্রী দিবস পালন করতে হয়, তাহলে সবার আগে ভুটানকে মনে রাখা উচিত আমাদের।'' আবদুল হান্নান লিখেছেন, এসব অর্থহীন, ভারতের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে শোষণ করা এবং সেটা করে যাচ্ছে। আবদুর নুর তুষারের মন্তব্য, বাংলাদেশ-ভারত চিরদিনের বন্ধু। আমাদের এই বন্ধুত্ব আজীবন বজায় থাকুক।
আবার আশেক আফসানের মন্তব্য, বাংলাদেশের সম্পদ শুষে নেওয়ার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতকে অভিনন্দন। গ্রিন লাক্স নামের অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়েছে, আজকে দিবসটি পালন করুন। আগামীকাল ভারতের পক্ষ থেকে উপহার স্বরূপ সীমান্তে ২/৩ টা বাংলাদেশীর লাশ পেয়ে যাবে বাংলাদেশ। ভারত থেকে প্রিতম সাহা জবাব দিয়েছেন, অবৈধ অনুপ্রবেশ করবেন না, কোনও লাশ পাবেন না। বৈধ ভিসা নিয়ে আসুন, আমরা অতিথিকে নারায়ণ মানি। বিবিসি বাংলার ওই পোস্ট করা মন্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের অনেকের যেমন ভারতের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকে চরম বৈরি মনোভাবও রয়েছে। আবার ভারত থেকে যারা মন্তব্য করেছেন, তারা মনে করেন, অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ না করলে সীমান্তে কাউকে মারা যেতে হতো না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসীন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, বাংলাদেশের জনগণের একটি অংশের মধ্যে ভারত-বিরোধী নেতিবাচক তৈরি হওয়ার পেছনে কিছু মনস্তাত্ত্বিক, কিছু অমীমাংসিত ইস্যু রয়েছে। এর পেছনে ফারাক্কা, তিস্তাসহ পানি বণ্টন একটি বড় ইস্যু বলে তিনি বলছেন। ''এসব নিয়ে যে ঝামেলা হয়েছে, সেটা তো মানুষের স্মৃতিতে থেকে যায়। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে হয়তো স্মৃতিটা থেকে গেছে যে, এটা আমাদের ন্যায্য ইস্যু ছিল, যেটা আমরা পাইনি বা যেটা পেতে গিয়ে এতো ধরনের ঝামেলা হয়েছে। "দ্বিতীয়ত, সীমান্তে হত্যা আমাদের জন্য একটি বড় ব্যাপার। সেক্ষেত্রে ভারত যেসব ব্যাখ্যা দেয়, মানুষ তাও গ্রহণ করতে পারে না।'' ''আরেকটা বড় কারণ হচ্ছে, এখন ভারতে যে হিন্দুত্ববাদ, তাদের বর্তমান সরকার যে হিন্দুত্ববাদী নীতি নিয়ে সামনে এগোচ্ছে, সেখানে মুসলিম বিদ্বেষটা বিরাট হয়ে আসছে। বাংলাদেশ যেহেতু মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, ফলে সেখানকার কর্মকাণ্ড এখানে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।''
এসব কারণে বাংলাদেশের অনেকের মধ্যে ভারত-বিরোধী একটি বৈরি মনোভাব তৈরি করেছে বলে মনে করেন অধ্যাপক আমেনা মহসীন। তবে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া সাবেক হাইকমিশনার বীনা সিক্রি মনে করেন না, প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বিরূপ সম্পর্ক তৈরি হওয়ার মতো বড় কোন বিষয় রয়েছে। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''আমি মনে করি না যে, ভারতীয়দের মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে কোন নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। ভারতে আমি এমন কোন লেখা বা প্রতিবেদন দেখেনি, যারা বাংলাদেশের ভালো চায় না, উন্নতি চায় না। প্রতিবেশী দেশের মধ্যে অনেক সময় অনেক ইস্যু থাকে। এখানেও হয়তো রয়েছে। সেগুলো কিন্তু অ্যাড্রেস করা হয়েছে। "কিন্তু ভারতের গণমাধ্যমে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এমনটা দেখবেন না যে, তারা বাংলাদেশ-বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে, অথবা অবস্থান নিয়েছে।''
বাংলাদেশ থেকে যারা চিকিৎসা বা পড়াশোনার জন্য ভারতে গেছেন, তারা অনেক সময় সেই দেশের নাগরিকদের বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হয়েছেন। যেমন, চিকিৎসার জন্য মুম্বাই যাওয়ার পর আসমা আক্তার দেখেছেন, বাড়ি ফাঁকা থাকার পরেও বাংলাদেশি জানার পরে বাড়িওয়ালা তাকে বাসা ভাড়া দিতে রাজি হননি। তবে বীনা সিক্রি বলছেন, এরকম অংশটি খুবই ছোট। কিন্তু সরকারি বা সাধারণ বেশিরভাগ মানুষের এই দৃষ্টিভঙ্গি নেই। ''আপনি প্রতিটা দেশেই দেখবেন, একটা গ্রুপ ভিন্ন অবস্থান নিয়ে থাকে। কিন্তু আমি মনে করি, সেই অংশটা খুবই ছোট। ভারতের সরকার বা সাধারণ জনগণের বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক কোন মনোভাব নেই,'' বলছেন বীনা সিক্রি। আবার যারা একসময় বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে একটি নস্টালজিয়া কাজ করে।
পশ্চিমবঙ্গের একজন ছাত্রী রুপকথা চক্রবর্ত্তী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ''আমরা যে বাঙাল, তা মা-বাবাকে বলতে শুনেছি অনেক ছোটবেলা থেকেই। বাংলাদেশ ফুটে ওঠে বাড়ির রান্নায়, রীতি-রেওয়াজে - 'আমার সোনার বাংলা' কারুর কণ্ঠে, বা কোথাও বাজতে শুনলে অন্য কোনো দেশের জাতীয় সংগীত বলে মনে হয়নি কখনোই। তাই হয়তো, মাঝখানে কাঁটা-তারের বেড়া থাকলেও, এবং আমি নিজে কখনো ও দেশের মাটিতে পা না রেখে থাকলেও, বাংলাদেশের অবস্থান আমার মনের খুব কাছাকাছি।''
আবার চাকরীজীবী শান্তনু রায় বলছেন, ''বাংলাদেশের উন্নয়নের হার যে আমাদের এই তিন দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি, সেটাও গর্বের। আবার যে একই ভাষায় সেখানকার মানুষ কথা বলে, তার মধ্যে ধর্মীয় বিভাজন কেন থাকবে? কেনো হিন্দুদের দেশ ছেড়ে চলে আসতে হবে। এটা আমার খুব খারাপ লাগে।'' একটা সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কিছুটা দূরত্ব তৈরি হলেও, গত এক দশকে দুই দেশের সম্পর্ক অনেকটাই ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
সরকারি পর্যায়ে অনেক ইস্যুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সমস্যাগুলো অ্যাড্রেস করা হয়েছে, কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বাস্তবায়নে হয়তো সময় লাগছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চার হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, জানিয়ে বীনা সিক্রি বলেন, ''ভারত কখনোই বাংলাদেশকে একটি ছোট দেশ হিসাবে দেখে না, বরং বড় একটি দেশ হিসাবেই দেখে, যাদের অর্থনীতি বাড়ছে, উন্নতি হচ্ছে। "হয়তো দুই দেশের মধ্যে কিছু অমীমাংসিত ইস্যু রয়েছে, কিন্তু সেসব নিয়েও আলোচনা চলছে। সেগুলোও সমাধানের চেষ্টা চলছে। আসলে দুই দেশের মধ্যে এমন কোন সমস্যা রয়েছে বলে আমি দেখছি না, যার সমাধান সম্ভব নয়।''
তবে বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলোর কর্মকাণ্ড, ইতিহাস বিকৃতিও প্রতিবেশী দেশটি সম্পর্কে অনেকের মধ্যে বিরূপ একটি ধারণা তৈরিতে সহায়তা করেছে বলে বলছেন অধ্যাপক আমেনা মহসীন। বিশেষ করে বাংলাদেশের জনসাধারণের একটি অংশের মধ্যে ভারত নিয়ে একপ্রকার নেতিবাচক মনোভাব কাজ করে।
অধ্যাপক আমেনা মহসীন বলছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত যেভাবে সহায়তা করেছে, আশ্রয় দিয়েছে, তাতে অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের কৃতজ্ঞ, সেটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু এরপরে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে অনেকের মধ্যে ভারত-বিরোধী বৈরি মনোভাবও তৈরি হয়েছে। ''পঁচাত্তরের পরে যেভাবে ইতিহাস পাল্টানো হয়েছে। ভারত যেভাবে একাত্তরে সহায়তা করেছে, পঁচাত্তরের পর সেগুলো অনেকটাই খাটো করে দেখানো হয়েছে, বর্ণনা পাল্টে দেয়া হয়েছে। সেসব বর্ণনা অনেক বছর ধরে মানুষের মনে মনে, একটা প্রজন্মের ভেতরে রয়ে গেছে।''
বীনা সিক্রি এবং আমেনা মহসীন বলছিলেন, গত এক যুগে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনেক ঘনিষ্ঠ হয়েছে। দু'হাজার নয় সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ভারতের সঙ্গে রাতারাতি সম্পর্কের অনেক উন্নতি হয়েছে। ট্রানজিট, বন্দর ব্যবহার, সীমান্তে সন্ত্রাস কমিয়ে আনাসহ এমন অনেক বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে, যা বহু দশক ধরে ঝুলে ছিল। যদিও পানি বণ্টন, সীমান্তে হত্যার মতো বাংলাদেশের দিক থেকে তোলা কিছু ইস্যুর এখনো কোন সমাধান হয়নি। তারপরেও বাংলাদেশের বিশ্লেষকদের অনেকে অভিযোগ করেন যে গত এক যুগে বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব অনেক বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক লাইলুফার ইয়াসমিন বলছেন, ''শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই প্রশ্ন আছে যে ভারত কর্তৃত্ববাদী কিনা? এখানে আমি বলবো, ভারতের আকার, জাতীয় প্রভাব বিবেচনায় রেখে একটা রাষ্ট্র যেভাবে আচরণ করে, ভারত সেটাই করছে। তখন দেখা যায়, আকারে ছোট দেশগুলোর মধ্যে একটা ধারণা তৈরি হয় যে, একটা বড় দেশ অন্য দেশকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।'' ''ফলে বাংলাদেশই শুধু নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতেও এরকম ধারণার কারণে ভারত সম্পর্কে কিছুটা নেতিবাচক মনোভাব কাজ করে,'' তিনি বলছেন।
অধ্যাপক ইয়াসমিন মনে করেন, ভারত যে বাংলাদেশের বড় প্রতিবেশী, সেটা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। ইউরোপের একটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক হবে, ভারতের সঙ্গে সেটি আলাদা হবে। সেটি বিবেচনায় রেখেই সম্পর্কে বাংলাদেশের এগিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে নেতিবাচক যে মনোভাব রয়েছে, সেটি কাটাতে বড় প্রতিবেশীকেই বেশি ভূমিকা রাখতে হবে বলে তিনি মনে করেন। ''দুই দশক আগেও অর্থনীতি, রাজনীতির দিক থেকে বাংলাদেশের যেরকম অবস্থান ছিল, এখন তা অনেক এগিয়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারতকেও সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে। এখানে দায়িত্বটা বৃহত্তর দেশের বেশি,'' বলছেন লাইলুফার ইয়াসমিন। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।