গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় রাজনৈতিক ফায়দা খুঁজছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কোন বক্তব্য নেই। প্রথম থেকেই রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে ফায়দা লোটার অপচেষ্টায় ব্যস্ত বিএনপি ও মির্জা ফখরুলরা।
আজ শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর দারুস সালামের সিদ্ধান্ত হাই স্কুলে ঢাকা মহানগর উত্তর-এর ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ-এর অন্তর্গত ১০ টি ইউনিটের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার মৃত্যু কামনা করি না। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা আমাদের আছে। আমাদের নেত্রী, মানবতার মা শেখ হাসিনা দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছেন। আমরাও চাই তিনি উন্নত চিকিৎসা পান। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসক কথা বলেনি। ড্যাবের নেতা, বিএনপি নেতারা চিকিৎসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। আমি বিএনপির প্রতি, তার পরিবারের প্রতি বলতে চাই, তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে পারে, প্রয়োজনে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আনতে পারে। সেখানে তাদের কোন প্রচেষ্টা, কোন আগ্রহ দেখিনা। তারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে চিন্তা করে না। তাদের চিন্তা খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটা।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তিরা, যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, যারা বাংলাদেশকে মেনে নেয়নি, তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট আমাদের মহানায়ক মহান নেতা জাতির পিতাকে হত্যা করে পাকিস্তানি ভাবধারায় বাংলাদেশ চালানোর অপচেষ্টা করেছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তারপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে, বাংলার মানুষের দোয়ায় শেখ হাসিনা কোন রকমে বেঁচে গেলেও আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মীকে আমরা হারিয়েছি, শত শত নেতাকর্মী আহত হয়েছে। অনেকেই মৃত্যুর যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছে। এই সবকিছুর মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা, পাকিস্তানি ভাবধারায় উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করা। আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই অশুভ শক্তিকে মোকাবেলা করে বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন সেই দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসী শক্তি শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে ব্যস্ত। তারা এখনো হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আজকের তরুণরাই আগামী দিনে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। তাদের নেতৃত্বেই জাতির পিতার আদর্শের সোনার বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়ে যাবে। সে এগিয়ে চলার পথে আমরা নবীনদের স্বাগত জানাই। নবীনদের আদর্শবান হতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। এই এগিয়ে যাওয়ার পথে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ষড়যন্ত্র করছে। আজ শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসায় সারা বিশ্ব সরকারের পাশে দাড়িয়েছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, বিশ্বসভায় জাতিসংঘে তা স্বীকৃতি পেয়েছে। বিএনপি-জামায়াত খালেদা-তারেক-ফখরুল গংরা তা মেনে নিতে পারে না। তারা প্রতিমুহূর্তে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্য আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করার চেষ্টা করে। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ব্যবহার করে তারা পট পরিবর্তন করতে চায়। আইএসের পরিকল্পনামাফিক তারেক রহমান, খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুলরা আমাদের ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে চায়।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, করোনায় সারাবিশ্ব যখন বিপর্যস্ত, তখন শেখ হাসিনা সাহসিকতার সাথে বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছেন। উন্নত দেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে আমরা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের রহমতে করোনা মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছি। করোনার শুরু থেকেই বিএনপি-জামায়াত মানুষের পাশে দাড়ায়নি। তারা গুজব ছড়িয়েছে। করোনায় তারা আশা করেছিল লক্ষ লক্ষ লোক মারা যাবে আর তারা চোরাগোপ্তা পথে ক্ষমতায় যাবে। তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি দেখে তারা নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার কোনো চেষ্টা আমরা সফল হতে দেবো না। শেখ হাসিনা মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। ইনশাল্লাহ আগামী দিনে করোনার এই বাধা-বিপত্তি কেটে যাবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ঘুরে দাঁড়াবো, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। চক্রান্তকারীদের চক্রান্ত মোকাবেলা করেই আমরা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে বিশ্ববাসীর কাছে অগ্রগতির উচ্চ শিখরে নিয়ে যাব। আমরা শুধু ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ চাইনা, আমরা চাই উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ প্রতিটি মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার ব্যবস্থা জাতির পিতার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা পূরণ করব। এর জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের প্রত্যাশা বেশি। এর জন্য আমাদের আদর্শবান হতে হবে। একজন আদর্শবান নেতা আদর্শবান কর্মী তৈরি করতে পারে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী অপশক্তিকে মোকাবেলা করে এগিয়ে যাবো, আধুনিক বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করব।
প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হককে স্মরণ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এই এলাকার জনপ্রিয় সংসদ সদস্য আসলামুল হকের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এই ৯ নং ওয়ার্ডে বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের স্মৃতিস্তম্ভ অবস্থিত। এই ওয়ার্ডের মানুষ সবসময় আওয়ামী লীগের পাশে দাড়িয়েছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, প্রধান বক্তা ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম মান্নান কচি। আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ১৪ আসেনর সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, মিজানুর রহমান মিজান, দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বাপ্পি, উপ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শেখ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল সহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।