Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কংগ্রেস-মুক্ত বিরোধী জোটের চেষ্টায় মমতা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:১৬ এএম

ভারতে বিরোধীদের নেতৃত্ব কে দেবে, এই প্রশ্ন ঘিরে কংগ্রেস ও তৃণমূলের প্রবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতেই একদিকে যেমন বিজেপি বনাম বিরোধীদের লড়াই শুরু হয়েছে, তেমনই শুরু হয়েছে বিরোধীদের নেতৃত্ব দেয়া নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের লড়াই।

মঙ্গলবার রাজ্যসভার বিরোধী নেতা ও কংগ্রেসের দলিত মুখ মল্লিকার্জুন খাড়গে বিরোধী দলগুলির বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে ১৫টি বিরোধী দলের নেতা থাকলেও তৃণমূল ছিল না। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে কংগ্রেস সহ বাকি দলগুলি দেখা করলেও তৃণমূল যায়নি। বেঙ্কাইয়া গত অধিবেশনে খারাপ ব্যবহারের জন্য ১২ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করেছেন। তার প্রতিবাদে কংগ্রেস-সহ বাকি বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে ওয়াকআউট করলেও তৃণমূল তাদের সঙ্গে ছিল না। কয়েক মিনিট পর তারা ওয়াকআউট করে।

গান্ধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখানোর সময় কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলের সঙ্গে তৃণমূল সাংসদরা ছিলেন। তবে তৃণমূল দাবি করছে, তারাই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল এবং তাতে বাকিরা সামিল হয়েছে। তৃণমূল সাংসদ ও রাজ্যসভার চিফ হুইপ সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, তৃণমূলের বিক্ষোভের পরিকল্পনা আগে থেকেই নেয়া ছিল। অন্য দলগুলিকেও বিক্ষোভে সামিল হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল।

খড়গের বৈঠকে ডিএমকে, আরজেডি, সিপিএম, শিবসেনা, এনসিপি, সিপিআই, মুসলিম লিগ, এলআইডি, এমডিএমকে, ন্যাশনাল কনফারেোন্স, টিআরএস, কেরালা কংগ্রেস মণি, আপ-এর মতো বিরোধী দলের নেতারা ছিলেন। কংগ্রেসের তরফে ছিলেন রাহুল গান্ধী, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, দিগ্বিজয় সিং, আনন্দ শর্মা সহ একগুচ্ছ নেতা। কিন্তু তৃণমূল ছিল না। সমাজবাদী পার্টি, বিএসপি, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের কেউ ছিলেন না। ফলে কংগ্রেস ১৫টির মতো দলকে পাশে পেলেও কয়েকটি প্রধান বিরোধী দল অনুপস্থিত ছিল।

সম্প্রতি কলকাতায় তৃণমূলের বৈঠকেও ঠিক হয়েছে, তারা কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বাড়াবে। সেই ছবিটা প্রথম দুই দিন সংসদের অধিবেশন থেকে স্পষ্ট। প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডয়চে ভলেকে জানিয়েছেন, ''নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস-মুক্ত ভারতের কথা বলেছিলেন। আর তৃণমূল কংগ্রেস-মুক্ত বিরোধী করতে চাইছে। কিন্তু ভারতের বাস্তবতা হলো, কংগ্রেসকে ছাড়া শক্তিশালী বিরোধী-জোট হতে পারে না।'' আশিসের মতে, ''কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিরোধী জোট করার অর্থ হলো, বিজেপি-র হাত শক্ত করা। কারণ, এই মৃতপ্রায় কংগ্রেসই বিজেপি-র সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারে। তাদের শক্তি ও প্রভাব কম হলে বিজেপি তাতে লাভবান হতে বাধ্য।''

মঙ্গলবারই মুম্বই সফরে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি একটি শিল্প সম্মেলনে যোগ দেন। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে দেখা করবেন বলে সম্প্রতি দিল্লিতে জানিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু উদ্ধব ঠাকরে অসুস্থ বলে মমতার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। তবে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে তার বৈঠক হতে পারে। তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৌশল হলো সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি, শিবসেনা, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, কেসিআরের মতো দলগুলিকে নিজের দিকে নিয়ে আসা। আঞ্চলিক দলের জোট গঠন করা। তারা এই কৌশল সামনে রেখেই এগোচ্ছে।

কংগ্রেস সূত্র জানাচ্ছে, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে দলের নেতারা দ্বিমত। মল্লিকর্জুন খাড়গের মতো নেতারা মনে করছেন, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত। কিন্তু অধীর, কে সি বেনুগোপালের মতো নেতারা মনে করেন, তৃণমূল যখন কংগ্রেস ভাঙতে সক্রিয়, তারা যখন কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগিতার রাস্তায় যেতে রাজি নয়, তখন তাদের বাদ দিয়ে অন্য দলগুলিকে নিয়ে চলা উচিত। রাহুল গান্ধীও দ্বিতীয় মতের পক্ষে বলে সূত্র জানাচ্ছে। সূত্র: পিটিআই, এএনআই, নিউজ ১৮।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ