নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশের স্বাধীনতায় অনন্য অবদান রয়েছে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের। মুক্তিযুদ্ধের সময় ফুটবল খেলে দেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এই দলের ফুটবলাররা। সেই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের জার্সি এখন স্থান পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। রোববার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জার্সি মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে হস্তান্তর করেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ম্যানেজার তানজীব মাজহার তান্নাসহ অন্যান্য খেলোয়াড়রা। এদিন মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মারক চিহ্ন হিসেবে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য সুভাষ শাহ’র জার্সিটি (১৩ নম্বর) মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী হাতে তুলে দেন দলের ম্যানেজার তানজীব মাজহার তান্না। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো.জাহিদ আহসান রাসেল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: আখতার হোসেন, তথ্য সচিব মো. মকবুল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব খাজা মিয়া, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনূর মিয়া, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারা যাকের ও মফিদুল হকসহ বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। স্বাধীন বাংলা দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেখ আশরাফ আলী, সুভাষ সাহা ও এনায়েতুর রহমান।
জার্সি হস্তান্তরের সময় মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অবদান অস্বীকার করার নয়। এই দলের সদস্যরাও মুক্তিযোদ্ধা। তাদের নামে গেজেট করা হয়েছে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘অনেক ত্যাগের পরে আজ এই স্বাধীন বাংলাদেশ। সবার অংশগ্রহণের ফলে এটা সম্ভব হয়েছে। আমি স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। তারাও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।’
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের কথায়,‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল অবিচ্ছেদ্য এক অংশ। দেশের ক্রান্তিকালে বল পায়ে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ফুটবলাররা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত অর্জন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনী ফুটবল খেলায় অংশ নিয়েছিল। গোটা পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধকালীন প্রথম ফুটবল দল এটি।’
তিনি যোগ করেন,‘স্বাধীন বাংলা দলের ফুটবলার বা কর্মকর্তাদের হাতে হয়তো অস্ত্র ছিল না, কিন্তু মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের পায়ের ফুটবলটাই হয়ে উঠেছিল অস্ত্রের মতো ধারালো। তাদের খেলার মধ্যেই মিশে ছিল প্রতিবাদের ভাষা। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের পতাকাতলে এই ফুটবলাররা পশ্চিম বাংলা, বিহার, বেনারস, মুম্বাইসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে ১৬টি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেছিলেন। ম্যাচগুলো থেকে প্রাপ্ত কয়েক লাখ ভারতীয় রুপি জমা পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে। দেশের স্বাধীনতার জন্য ভিনদেশে প্রীতি ম্যাচ খেলে অর্থ সংগ্রহ করা বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেই বিরল।’ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন,‘মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতি শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর ফুটবলারদের এই অবদানের কথা বাঙালি জাতির ইতিহাসে চিরদিন অম্লান হয়ে থাকবে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবে ফুটবল মুক্তিযোদ্ধাদের নাম।’
উল্লেখ্য স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ভারতের বিভিন্ন স্থানে ১৬টি প্রীতি ম্যাচ খেলেছে। ম্যাচগুলোর মধ্যে ১২টিতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার পাশাপাশি তিন ম্যাচে হার ও একটিতে ড্র করেছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।