সদ্য শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় শুরু হবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ২০১৫ সালের পর এটাই দু’দেশের প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এই প্রথমবার মাঠে বসে খেলা উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমিরা। তবে সে জন্য থাকতে হবে টিকা নেয়ার সনদ এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে।

বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ব্যাপক পরিবর্তন এনে নতুন রুপে সাজানো হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। বিশ্বকাপে যাচ্ছেতাই পারফরমেন্সের কারনে চার জন নতুনসহ ছয় জনকে দলে নেয়া হয়েছে। বিশ^কাপ সুপার টুয়েলভে কোন জয় পায়নি বাংলাদেশ। বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের মত দলের কাছে হেরে বিশ^কাপ শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। পরে ওমান এবং পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে স্বস্তির জয় তুলে নিয়ে সুপার টুয়েলভে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে টাইগাররা।

বহু বছর পর দলের সেরা তিন খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমকে ছাড়া খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ইনজুরির জন্য দলের বাইরে সাকিব-তামিম। আর বিশ্রাম দেয়া হয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। দলে একমাত্র সিনিয়র খেলোয়াড় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপে দলের খারাপ পারফরমেন্সের পরও অধিনায়কত্ব ধরে রেখেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েন লিটন দাস-সৌম্য সরকার এবং রুবেল হোসেন। পিঠের ইনজুরির কারনে সিরিজটি মিস করছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। পুণরায় দলে ডাক পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। নতুন হিসেবে এই ফরম্যাটে ডাক পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ^কাপ জয়ী অধিনায়ক আকবর আলি, সাইফ হাসান, ইয়াসির আলি চৌধুরি এবং পেসার শহিদুল ইসলাম।

পাকিস্তান সিরিজে দলে ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও এত বড় পরিবর্তন অনেকেই প্রত্যাশা করেননি। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু স্পষ্ট করেছেন, এই ফরম্যাটে নতুন শুরু করতে চান তারা এবং তাই এত বেশি নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেয়া হয়েছে, ‘বিশ্বকাপে পারফরমেন্স ভাল না হওয়ায় আসন্ন সিরিজে আমাদের কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছে। নতুন ডাক পাওয়া খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের ভালভাবে প্রস্তুত করবে বলে আশা করছি।’

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২ ম্যাচের ১০টিতে জিতেছে পাকিস্তান। তবে ব্যর্থতা কাটিয়ে মোমেন্টাম অর্জনে আজ জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ, ‘বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ভাল করার বিষয়টি ছিল খুবই প্রত্যাশিত। তবে আমরা সেটি পুরণে ব্যর্থ হয়েছি। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশ দলের জন্য ভাল শুরুটা সব সময় গুরুত্বপূর্ন। তাই পুরো সিরিজে অনুপ্রানীত হতে ভাল একটি সূচনার অপেক্ষায় আছি আমরা।’

আর ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাটিতে এশিয়া কাপ খেলেছিলো পাকিস্তান। বাংলাদেশের মাটিতে শেষ দুই টি-টোয়েন্টিতে হারলেও বিশ^কাপে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কারনে আত্মবিশ^াসী থাকবে পাকিস্তান। বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থতা ও সিনিয়র খেলোয়াড়রা না থাকলেও বাংলাদেশকে খাটো করে দেখছেন না পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। তার মতে নিজেদের কন্ডিশনে বাংলাদেশ শক্তিশালী দল এবং তার প্রমাণও তারা দিয়েছে। তাই প্রতিপক্ষকে সহজভাবে নেয়ার অবকাশ নেই, ‘নিজেদের কন্ডিশনে সহজ প্রতিপক্ষ নয় বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছে তারা।’

তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরমেন্স আশানরুপ নয়। ১৪৩ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪৩টিতে জিতেছে টাইগাররা। ৭৫টি ম্যাচ হারের পাশাপাশি ২টি পরিত্যক্ত হয়।