চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
মানুষের তৈরি যুক্তিহীন কিছু ভ্রান্ত বিশ্বাস, কথা, কাজ ও প্রথাকে সহজ বাংলায় কুসংস্কার বলা হয়। কুসংস্কারের কারণে বেশির ভাগ মানুষের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়। সমাজ বা মহল্লা ভিত্তিক তো কোথাও কুসংস্কারের কবলে জীবনহানীর ঘটনাও ঘটে যায়। কুসংস্কার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে একপর্যায়ে শিরকের পর্যায় চলে যায়। আবার এমন কিছু বিষয় যা সাধারণ বিবেক বিরোধী এবং রীতিমত হাস্যকর।
আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অজ্ঞতা, ববর্রতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্নর যুগে সবার মাঝে উদ্ভট কিছু ধারণার জন্ম নিয়েছিল। যেমনঃ সেই যুগের মানুষেরা আকাশের দিকে পাখি উড়িয়ে দিতো পাখিটি যদি ডান দিকে যেত তাহলে তারা ভাবতো সামনে ভালো কিছু অপেক্ষা করছে আর যদি বাম দিকে উড়ে যেত তাহলে কুলক্ষণ বলে ধারণা করতো। আবার কখনো তীর ছুরে দিতো, তীরের দূরত্ব দেখে তারা ভালো মন্দ নির্ণয় করতো। যদি কখনও আকাশ মেঘে কালো হয়ে যেত তারা মনে করতো তাদের সামনে দুর্ভোগ দেখা দিবে। লোক সকলের মাঝে সবচেয়ে ভ্রান্ত ধারণা ছিল সফর (আরবি মাস) মাস তাদের জন্য নিকৃষ্ট ও ভয়ংকর মাস। এ মাসে তারা বিবাহ থেকে দূরে থাকতো আবার এ মাসে সন্তান জন্ম নিলে সেই সন্তানকে অমঙ্গল বলে ধারণা করতেন।
যখন রাসূল (সা.)এর আগমন হলো তখন তিনি এসব ভ্রান্ত ধারণা দেখে বললেন, ‘অশুভ বা কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, বরং তা শুভ বলে মনে করা ভালো। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! শুভ লক্ষণ কী? তিনি বললেন, এরূপ অর্থবোধক কথা, যা তোমাদের কেউ শুনতে পায়।’ (বুখারি শরিফ)।
সুন্দর ও মার্জিত বিষয়াদীই ইসলামে অনুমোদিত। অন্যদিকে অসত্য, অসুন্দর ও যাবতীয় কদর্যতা ইসলামে নিষিদ্ধ। মানুষের জীবনকে সুন্দর ও শৃঙ্খলাময় করার জন্য যত রকমের সহজ-সরল দিকনির্দেশনা ও পথ রয়েছে- তার সব ইসলামে বিদ্যমান।
আল্লাহ তায়ালা ইসলাম প্রচারের জন্য যুগে যুগে পয়গম্বরদের দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা একবার এক সাথে তিনজন পয়গম্বরকে দুনিয়ায় প্রেরণ করলেন। তারা জনসাধারণের মাঝে দাওয়াত প্রচার শুরু করার পর মাত্র একজনকে ইসলাম গ্রহণ করাতে পারলেন। সেই সাহাবীকে নিয়ে যখন দাওয়াত দেয়া শুরু করলেন তখন সবাই তাদের অচেনা, ভন্ড, কবিরাজ বলে সকলের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করলেন। এক সময় যখন সেই এলাকায় এক মহামারি দেখা দিলো, দায়ী হিসেবে সবার মুখে ঐ তিনজন পয়গম্বরের নাম। তারা প্রচার করতে লাগলেন অচেনা তিনজন ব্যক্তিই মহামারি নিয়ে এসেছেন।
অতঃপর তাদের শারীরিক নির্যাতন এবং মিথ্যা অপবাদ দিয়ে এলাকা হতে বের করে দিলেন। পয়গম্বররা আল্লাহর বাণী শুনালেও তারা বুজে উঠতে পারে নি।তবে পয়গম্বররা একটি কথাই বারবার বলেছেন, ‘মহামারি বা আজাব কোন ব্যক্তি বহন করে নিয়ে আসতে পারে না স্বয়ং আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত হয়।’ আল্লাহ সুবহানাল্লাহ ওয়া তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারিমে বলেন, আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। (সূরা : বাকারা ১৫৫)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।