নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দীর্ঘ ১৮ বছর পর ফুটবলে মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পেল বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০০৩ সালে ঘরের মাঠে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে মালদ্বীপকে টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে হারিয়ে প্রথমবার সাফ শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর দেড়যুগ দ্বীপদেশটির বিপক্ষে লাল-সবুজদের জয় অধরাই ছিল। অবশেষে আসলো সেই মহিন্দ্রক্ষণ। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে চার জাতি টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী মালদ্বীপকে হারিয়ে আসরের শিরোপা লড়াইয়ে টিকে থাকলেন জামাল ভূঁইয়ারা। গতকাল কলম্বোর রেসকোর্স স্টেডিয়ামে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশ ২-১ গোলে হারায় মালদ্বীপকে। বিজয়ী দলের হয়ে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু বর্মণ একটি করে গোল করেন। মালদ্বীপের পক্ষে একমাত্র গোলটি শোধ দেন মিডফিল্ডার মোহামেদ উমাইর।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে পয়েন্ট হারিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এবার ঘটলো ঠিক উল্টো ঘটনা। ম্যাচের অন্তিম সময়ের গোলেই জিতলেন তপু-সুমন রেজারা। তাও আবার সেই মালদ্বীপকে হারালেন তারা যাদের বিপক্ষে গত মাসে মালেতে সাফ সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নশিপে ২-০ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ দল। জামালরা মালেতে হারের মধুর প্রতিশোধ নিলেন কলম্বোতে। চারজাতি টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা দল সিসেলেসের বিপক্ষে বাংলাদেশ ড্র করেছিল ম্যাচের ৮৮ মিনিটের গোলে। মালদ্বীপ ম্যাচে অবশ্য ঘটনা ঘটেছে উল্টো। সেই ৮৮ মিনিটে গোল হলো ঠিকই, তবে বাংলাদেশের পক্ষে।
একসময় মালদ্বীপের জালে গুনে গুনে গোল দিতো বাংলাদেশ। এখন সেই মালদ্বীপ দক্ষিণ এশিয়া ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি। বাংলাদেশের জন্য তো দ্বীপদেশটি সাম্প্রতিক সময়ে ভয়ংকর এক প্রতিপক্ষ। সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের হারটি ছিল মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের টানা চতুর্থ হার। হারতে হারতে এমন অবস্থা হয়েছিল যে, বাংলাদেশ শেষ কবে মালদ্বীপকে হারিয়েছিল তা ভুলতে বসেছিলেন লাল-সবুজের ফুটবলপ্রেমীরা। কারণ ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর ৫ ম্যাচ খেলে চারটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। আর একটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল। চার হারের মধ্যে ৫-০ গোলের লজ্জাজনক ব্যবধানও আছে। বছেেরর পর বছর মালদ্বীপকে হারাতে না পারার আক্ষেপ নিয়েই কাল চারজাতি টুর্নামেন্টে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। লাল-সবুজের ফুটবলাররা নিজেদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন মালদ্বীপকে হারাবেন বলে। তাদের সেই আক্ষেপ ঘোচালেন জামাল ভূঁইয়া ও তপু বর্মণ। সূচনাটা ছিল অধিনায়কের আর শেষটা তপুর।
মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয়। যার ফল তারা পায় ম্যাচের ১২ মিনিটেই।
এসময় বামপ্রান্ত থেকে বাংলাদেশ ডিফেন্ডার রহমত মিয়ার লম্বা থ্রো করলে ছোট বক্সের মধ্যে বল পেয়ে যান জামাল ভূঁইয়া। খুব কাছ থেকে তিনি কোনাকুনি শটে গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন (১-০)। যদিও গোলটি বাংলাদেশকে আদায় করতে হয়েছে রেফারির কাছে জোর আবেদন করে। কারণ জামাল বল জালে পাঠালেও সহকারী রেফারি পতাকা ওঠান অফসাইডের। বাংলাদেশ অধিনায়কের আবেদনে সহকারী রেফারির সঙ্গে আলোচনা করে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। ম্যাচের ৩২ মিনিটে কর্নার কিক থেকে গোল করে সমতায় ফেরে মালদ্বীপ। এসময় ডানপ্রান্ত থেকে ম্যাচে ফেরান মুহম্মদ উমাইর। আলী আশফাক কর্নার করলে সহজ শটেই বল জালে পাঠান অরক্ষিত মোহামেদ উমাইর (১-১)। সমতা নিয়ে দু’দল বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে তারা দ্বিতীয় গোল পেতে মরিয়া হয়েই লড়ে। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ অন্তত তিনটি গোলের সুযোগ পায়। যার একটিতে তারা সফল হয়েছে। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে নিজেদের বক্স থেকে মাঝ মাঠে বল পান ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল। তিনি একজনকে কাটিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে তা বাড়িয়ে দেন ফরোয়ার্ড জুয়েল রানার উদ্দেশ্যে। জুয়েল বল ধরে মালদ্বীপের ডি-বক্সে ঢুকে পড়লে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক আলী নাজিহ এগিয়ে এসে তাকে ফাউল করে ফেলে দেন। শ্রীলঙ্কান রেফারী দিলান পেরেরা পেনাল্টির বাঁশি বাজান। ৮৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে তপু বর্মণ গোল করে বাংলাদেশকে ফের এগিয়ে নেন (২-১)। ম্যাচের বাকি সময় গোল ধরে রেখে ১৮ বছর পর মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের উৎসব করতে করতেই মাঠ ছাড়ে জামাল ভূঁইয়া বাহিনী।
ম্যাচ জিতে দুই খেলায় একটি করে ড্র ও জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় শীর্ষে এখন বাংলাদেশ। ১৬ নভেম্বর রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র করলেই ফাইনাল নিশ্চিত লাল-সবুজদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।