মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
খাদ্য, ভাড়া ও গাড়ি থেকে শুরু করে জ্বালানি পণ্য পর্যন্ত সবকিছুর দাম বাড়ছে। কমছে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা। আর্থিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে পড়ছে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা পর্যায়ে মূল্য রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। অক্টোবরে দেশটির ভোক্তা মূল্য গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরের তুলনায় দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালের পর সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির সম্মুখীন হয়েছে মার্কিন পরিবারগুলো। আকাশছোঁয়া এ দাম কমার পরিবর্তে বরং আরো বাড়বে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। এটি থ্যাংকসগিভিং ও ক্রিসমাসসহ ছুটির কেনাকাটার মৌসুম সামনে রেখে মার্কিন নাগরিকদের আর্থিকভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে। কয়েক মাস ধরে মার্কিন কর্মীদের মজুরি বাড়লেও ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি সেটিকে মøান করে দিয়েছে। এ পরিস্থিতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন ও সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের জন্য একটি রাজনৈতিক হুমকি তৈরি করছে। পাশাপাশি ফেডারেল রিজার্ভের ওপর চাপ তীব্রতর হচ্ছে। এর আগে কভিডজনিত বিধিনিষেধে এশিয়াজুড়ে উৎপাদন কারখানায় প্রতিবন্ধকতা সরবরাহ ঘাটতিকে জটিল করে তুলেছে। এর সঙ্গে তুমুল ভোক্তা চাহিদা দামের ঊর্ধ্বগতিতে জ্বালানির জোগান দিচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিক ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো। ক্রমবর্ধমান এ মূল্যবৃদ্ধি স্বল্প উপার্জনকারী পরিবারগুলোকে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিয়েছে। পরিবারগুলোকে আয়ের একটি বড় অংশ খাদ্য, ভাড়া ও জ্বালানি পণ্যের পেছনে ব্যয় করতে হচ্ছে। মাংস, ডিম ও মাখনের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় নিম্ন আয়ের মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিতে লড়াই করছে ফুডব্যাংকগুলো। তাছাড়া বছরের শেষ দিকে ছুটি কাটানোর, থ্যাংকসগিভিং ডিনার ও ছুটির উপহার দেয়ার পরিকল্পনা করা লাখ লাখ পরিবারকে নতুন করে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে ক্রমবর্ধমান ব্যয়। পরিবারগুলোকে হয় পরিকল্পনা কাটছাঁট করতে হচ্ছে নয়তো প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ব্যয়ের। মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফনও কেবল যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ইউরোপ ও এশিয়াসহ বিশ্বজুড়েই পণ্যের মূল্য আকাশছোঁয়া উচ্চতায় পৌঁছেছে। ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করা ১৯টি দেশে অক্টোবরে মূল্যস্ফীতির হার ৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। দেশগুলোয় গত এক যুগেরও বেশি সময়ের মধ্যে এ হার দেখা যায়নি। পাশাপাশি এ অঞ্চলে জ্বালানির দাম ২৩ শতাংশ বেড়েছে। এ সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ব্রাজিলে অক্টোবর পর্যন্ত গত ১২ মাসে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। বিদ্যুৎ, রান্নার গ্যাস, মাংস ও অন্যান্য প্রধান পণ্যের রেকর্ড সর্বোচ্চ দাম আরো ব্রাজিলীয়কে আর্থিক অস্থিতিশীলতায় ঠেলে দিয়েছে। কভিড-১৯ মহামারীর আগের তুলনায় মার্কিন নাগরিকরা এখন পণ্যের জন্য ১৫ শতাংশ বেশি ব্যয় করছে। কভিডজনিত কারণে বন্দর, ট্রাক ও রেলপথ নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়ায় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এদিকে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গে অনেক মার্কিন নাগরিকের বেতনও বেড়েছে। রেস্তোরাঁ, হোটেল ও বিনোদনকেন্দ্রগুলোয় কাজ করা কর্মীদের গত বছরের তুলনায় ঘণ্টাপ্রতি মজুরি ১০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। পাশাপাশি মহামারীতে ঘরবন্দি সময়ে তাদের হাতে প্রচুর অর্থ জমেছে। মার্কিন আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ওয়েলস ফার্গোর সিনিয়র অর্থনীতিবিদ সারাহ হাউজ বলেন, আমরা এখনো অর্থনীতিকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে দেখছি। ভোক্তা এখনো ঘরের বাইরে যাচ্ছে এবং বিপুল পরিমাণ ব্যয় করছেন। আর এ কারণেই আমরা দামের এমন ঊর্ধ্বগতি দেখছি। এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।