নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে লজ্জাজনক পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। যদিও বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল আরো আগে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হার দিয়ে পূর্ণ হয়েছে ব্যর্থতার ষোলকলা। হতাশাজনক পারফরম্যান্সে সবারই নজর কেড়েছে বাংলাদেশ দল। মাঠে এবং মাঠের বাইরের বিভিন্ন কান্ডে সমালোচনাও কম হয়নি। এমন ভরাডুবির পর ক্রিকেটের কতটা উন্নতি হয়েছে, খেলোয়াড়দের মানসিকতা, অ্যাপ্রোচ, বোর্ডের দায়বদ্ধতা, কোচদের দায়িত্ব এসব নিয়ে যেন প্রশ্ন থেকেই যায়। বরং এই বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সই যেনো পুরোপুরি মুখোশটা খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের।
ম্যাচ পরবর্তী আলোচনায় এক শো-তে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের নানা দিক তুলে ধরেন সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, ওয়াহাব রিয়াজ ও মিসবাহ উল হক। বাংলাদেশের সাথে খেলা, কিংবা দেশের মাটিতে লিগে অংশগ্রহণ বা কোচিংয়ের কারণে এদের প্রত্যেকেই বাংলাদেশ দলকে বেশ কাছ থেকেই পরখ করার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের আলোচনায় সবচেয়ে বেশি যেই দিকগুলো উঠে এসেছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষা, ঘরোয়া ক্রিকেটের মান, মিরপুরের সেøা উইকেট, খেলোয়াড়দের মানসিকতা, সিনিয়র ক্রিকেটার সহ বোর্ডের দিকেও আঙ্গুল তোলেন তারা।
পুরো বিশ্বকাপেই ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষায় জয়ের ক্ষুধা লক্ষ্য করেননি ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুসরা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ ভালোভাবে হারবে অনুমান করলেও এমন ভরাডুবিও তারা প্রত্যাশা করেননি। পেসারদের বিপক্ষে নড়বড়ে অবস্থা, লেগ স্পিনারের বিপক্ষে দাড়াতে না পারার অন্যতম কারণ হিসেবে বলেছেন ঘরোয়া ক্রিকেট ও ঘরের মাটিতে সেøা উইকেটে খেলা। ব্যাটাররা অতিরিক্ত পেস খেলে অভ্যস্ত না হওয়ায় বিশ্বমঞ্চে খাবি খাচ্ছেন বলে জানান ওয়াসিম। একই সাথে প্রায় সব দেশই লেগ স্পিনারদের ফায়দা নিতে পারলেও বাংলাদেশের স্কোয়াডে নেই একজনও লেগি!
এই কারণেই লেগ স্পিনারদের বিপক্ষে বেশি ভুগেছে বলেও জানান সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার। একই সাথে তিনি জানান এককভাবে কোচদের দায়ী করাটাও ভুল হবে। এমন ভরাডুবির দায় শুধু কোচের একার না, টিম, বোর্ড সহ সকলেরই। এই প্রসঙ্গে ওয়াকার ইউনুসও বলেন, ‘বাংলাদেশের উচিত দেশের বাইরে যত বেশি ক্রিকেট খেলা যায়, বাউন্সি ও স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে না পারলে ভালো করা সম্ভব নয়। সাবকন্টিনেন্টে আমরা কিছু হলেই সব দোষ কোচের উপর দেই। কোচের একার দায় কখনোই হতে পারে না। ব্যাটারদের সুবিধা মতো উইকেট কিংবা দল খেলোয়াড় বাছাইয়ে যতদিন না পর্যন্ত উন্নতি করতে পারবে ততদিন ক্রিকেটে এগোবে না বাংলাদেশ।’ উইকেটের প্রসঙ্গে ওয়াহাব রিয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশ সবসময়ই সেøা উইকেটে খেলে অভ্যস্ত। একই সাথে তারা অফ স্পিনারদের উপর নির্ভর করে। এখনকার সময় ফিঙ্গার স্পিনারদের উপর নির্ভার হয়ে ক্রিকেট খেললে আপনি এগোতে পারবেন না।’
দল নির্বাচন নিয়েও ওয়াসিম আকরাম জানালেন সিনিয়র ক্রিকেটারদেরও দায়বদ্ধতা আছে, ‘বেশ কিছু ক্রিকেটার যারা দীর্ঘদিন অফ ফর্মে আছে তাদের আপনি দলে রাখতে পারবেন না। সে হয়তো পারফরম করবে নয়তো বাদ দিতে হবে। তরুনদেরকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটা গঠন করতে হবে। লিটন-সৌম্যকে টি-টোয়েন্টিতে নেওয়ার কোনো মানেই হয় না। এদেরকে অন্য ফরম্যাটে খেলাতে পারেন কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে নয়।’ একই প্রসঙ্গগুলোতে আলোচনা করেন মিসবাহ উল হকও, ‘লেগ স্পিনার বের করতে হবে। একই সাথে ব্যাটারদের জন্য সহায়ক উইকেটে বেশি বেশি খেলতে হবে। বাইরের দেশগুলোতে বেশি খেলার চেষ্টা করতে হবে। আপনি ঘরের মাটিতে নিজেদের মতো উইকেট বানিয়ে ২-৩ ম্যাচ জিতলে সেটা কোনো কাজেই আসবে না যদি না বাইরের দেশে ভালো করতে না পারেন।’
চার জনেরই অভিমত বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ঢেলে সাজাতে হবে। সেøা উইকেটে না খেলে স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করতে হবে। বোর্ডেরও দায়বদ্ধতা আছে এমনটাই মনে করেন তারা। কোচ পরিবর্তন করলেই ফলাফলে পরিবর্তন আসবে না এমনটাই ইঙ্গিত করেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। সিস্টেমের উন্নতি না করতে পারলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতি হবে না এমনটাই ইঙ্গিত দেন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। তাদের মতে কোনো ম্যাচেই জয়ের কোনো মানসিকতা কিংবা শরীরি ভাষায় তেমন কিছুই লক্ষ্য করেননি ওয়াহাব রিয়াদ, মিসবাহরা। বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্সে হতাশ ওয়াসিম, ওয়াকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।