Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

উষ্ণায়নের সর্বব্যাপী ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া

আফতাব চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

শিল্প বিপ্লবের সময় থেকে পরিবেশের ওপর মানব কর্মকান্ড অপরিসীম চাপ সৃষ্টি করে আসছে। এর ভয়াবহতা ক্রমে আমাদের উদ্বেগের স্তর অতিক্রম করে প্রাণীকূলের অস্তিত্বের ক্ষেত্রে এক অশনি সংকেতরূপে প্রকটিত হচ্ছে। শিল্পায়ন-নগরায়নের চাকা যে হারে অগ্রসর হচ্ছে সে হারে বনাঞ্চল বাড়ছে না। কলকারখানা ও যানবাহনের অব্যাহত সংখ্যাবৃদ্ধির ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির দহনের মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ক্রমবর্ধমান দহন বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা উত্তরোত্তর বৃদ্ধির সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

অপরদিকে ক্রম হ্রাসমান বনাঞ্চল বায়ুমন্ডল থেকে ক্ষতিকারক কার্বন-ডাই-অক্সাইডের যথাযথ বিয়োজনে অপারগ হয়ে পড়ছে। ফলস্বরূপ বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড উত্তরোত্তর জমা হচ্ছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ধর্ম তাপ ধারণ তাই পুঞ্জীভূত এ গ্যাসের প্রভাবে বায়ুমন্ডল উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হচ্ছে।

উল্লেখ করা যেতে পারে, প্রখর সূর্যকিরণ, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, পৃথিবীর কক্ষপথ, সমুদ্রস্রোত এবং আরো কিছু প্রাকৃতিক কারণে পৃথিবীর উষ্ণতার তারতম্য তথা জলবায়ু পরিবর্তন ঘটে থাকে, যা আমাদের এ পৃথিবী নামক গ্রহের সৃষ্টিলগ্ন থেকে চলমান রয়েছে। তবে বর্তমানে উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে এত উদ্বেগ এবং এত আলোচনার কারণ ভিন্ন। তা হল, কোন প্রাকৃতিক উপাদান নয় বরং মানুষের নানাবিধ কাজকর্মের ফলস্বরূপ বিগত বহু বছর ধরে বায়ুমন্ডলের ক্ষতিকারক গ্যাস বিশেষ করে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রার আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি গোলকীয় উষ্ণায়নের প্রধান কারণ। বর্তমানে মানুষের বিভিন্ন কাজকর্মের ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা এককথায় অস্বাভাবিক ও ভয়াবহ।

শিল্প বিপ্লবের সূচনালগ্ন থেকেই মানুষের জীবনশৈলী, পরিবেশ ও জলবায়ুর আকস্মিক পরিবর্তন আসে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ ঘটে। বিদ্যুৎ উৎপাদন, কলকারখানা, যানবাহন চালনা ইত্যাদির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ব্যাপক মাত্রায় শুরু হয়। অপরদিকে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে বনভূমি নিধন। মানুষের বিভিন্ন কাজকর্মের ফলে বায়ুমন্ডলে যে পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড জমা হয়, তার শতকরা ৭৫ ভাগ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে আসে। বায়ুমন্ডলে এ মারাত্মক হারে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রাবৃদ্ধিতে ‘গ্রিন হাউস গ্যাস এফেক্ট’ নামক প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায়।

শিল্প বিপ্লবের পর এক শতকের অধিক সময় অতিবাহিত হয়েছে। ঐ দীর্ঘ সময়কালে পরিবেশ নিয়ে আমাদের উদ্বেগ তেমন প্রকটভাবে পরিলক্ষিত হয়নি। বিশ্ব পরিবেশ নিয়ে আমাদের উদ্বেগের আনুষ্ঠানিক বহিঃপ্রকাশ ঘটে ১৯৭২ সালে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে জাতিসংঘের বিশ্ব পরিবেশ সম্মেলনে। পরিবেশ সম্পর্কে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময়ের সুযোগ ঘটে ঐ সম্মেলনে। সম্মেলনে উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে সুদীর্ঘ পর্যালোচনার পর যে বিষয়ে মতৈক্য সৃষ্টি হয় তা হলো, গোটা পৃথিবীর পরিবেশ বর্তমানে তীব্র সঙ্কটাপন্ন এবং এর থেকে পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে আশু কার্যকর ব্যবস্থা গৃহীত না হলে অনতিকালের মধ্যে অবস্থা নিয়ন্ত্রণোযোগ্য হয়ে পড়বে। এ গুরুতর সতর্কবাণী উচ্চারিত হবার পর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পরিবেশ নিয়ে নানা আলোচনা তথা সেমিনার, বিতর্ক, পদযাত্রা ইত্যাদির মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশের পালা শুরু হয়। পরিবেশ সচেতনতাকে জাগ্রত ও উন্নততর করার লক্ষ্যে প্রতি বছর ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।

পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, ব্রাজিলের রাজধানী রিও-ডি-জেনিরিও-তে ১৯৯২ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলন, যা ‘আর্থ সামিট’ নামে পরিচিত। স্থূল কলেবরের এ সম্মেলনে বিশ্বের ১৬০টি দেশের প্রায় ৮ হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। পরিবেশ সম্পর্কে এত দীর্ঘ ও বিস্তৃত আলোচনা ইতোপূর্বে আর হয়নি। উক্ত সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা পরিবেশ রক্ষার্থে যেসব বিষয়ে সহমত পোষণ করেন তা অতি তাৎপর্যপূর্ণ ও নজিরবিহীন। এর মধ্যে অন্যতম হল পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমানে এক গোলকীয় সমস্যার রূপ ধারণ করেছে। মানব জীবনের কোন দিক যে এর কু-প্রভাব মুক্ত থাকতে পারবে না তা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এর কু-প্রভাবে নিত্যনতুন স্বরূপ উন্মোচিত হচ্ছে। উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব বিষয়ে ইতোমধ্যে যেসব তত্ত্ব ও তথ্য আমাদের গোচরে এসেছে তা একজন পরিবেশ সচেতন মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নেবার পক্ষে যথেষ্ট। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে নাটকীয়ভাবে বাড়তে শুরু করে। দেখা গেছে, বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ১৮৫০ সালের পিপিএম ২৯০ (পার্টস পার মিলিয়ন) থেকে বেড়ে ১৯৭৯ সালে দাঁড়ায় ৩৩৪ পিপিএম। ঊর্ধ্ব এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সাল নাগাদ বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ১৯৭৯ সালের তুলনায় দ্বিগুণ হবার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান। ফলস্বরূপ গোলকীয় উষ্ণায়নের মাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে, যার ভয়াবহ প্রভাব থেকে মানুষসহ গাছপালা, পশু পাখি কিছু রেহাই পাবে না। বলাবাহুল্য, উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের এ ভয়াবহতা ইতিমধ্যে আমরা উপলব্ধি করতে শুরু করেছি।

উষ্ণায়ন মানুষ তথা অন্যান্য প্রাণীকূলের শরীর ও স্বাস্থ্যে মারাত্মক রকমের প্রতিকূল প্রভাব ফেলে থাকে। প্রত্যক্ষভাবে উষ্ণায়ন সৃষ্ট হিটওয়েভ বা তাপ প্রবাহের কবলে পড়ে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া এর পরোক্ষ ফল হিসেবে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে চলেছে। উষ্ণায়নের ফলে চর্ম, ফুসফুস সম্বন্ধীয় বিভিন্ন জটিলতা ও রোগ সৃষ্টি হতে পারে। গোলকীয় উত্তাপ বিশ্বে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু থেকে শুরু করে বিভিন্ন দুরারোগ্য রোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করবে বলে বিজ্ঞানীরা অনেক পূর্বে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, যত দিন যাচ্ছে তত উষ্ণায়ন সৃষ্ট ব্যাধির কথা প্রকাশ্যে আসছে।

শুধু মানুষ নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীও গোলকীয় উষ্ণায়নের বিরূপ প্রভাবে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রভাবিত। জীববৈচিত্র সম্পর্কিত গবেষণা থেকে জানা যায়, ফসিল রেকর্ড রয়েছে এমন যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে দ্রুতবেগে বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্ত হচ্ছে। জীববৈচিত্র্যের এ দ্রুত বিনাশ নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।

গোলকীয় উষ্ণায়নের বিরূপতায় প্রাণীকূলের মতো উদ্ভিদকুলও সমানভাবে অপকৃত। উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও প্রজননে জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল লক্ষিত হয়। অনেক উদ্ভিদ পরিবর্তিত অবস্থা মানিয়ে নিতে পারে না। বিষয়টির গভীরতা উপলব্ধি করতে একটি উদাহরণের উপস্থাপনা প্রাসঙ্গিক হবে। সাম্প্রতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, বিভিন্ন ফুলের মনমাতানো আকর্ষণীয় সুগন্ধ দিন দিন কমে আসছে। হয়তো এমন দিন আসবে যখন ফুলের গন্ধ একেবারে হারিয়ে যাবে। সুগন্ধ সুবর্ণবিহীন ফুল কি তখন আর মানুষের মনে রোমান্স জাগাতে পারবে? ‘ফুল কে না ভালবাসে’- কথাটি কি অর্থহীন হয়ে পড়বে না অথবা ‘ফুলে গন্ধ সে তো ভাবতে পারি না’ গানটি কি প্রাসঙ্গিকতা হারাবে না? ফুলের গন্ধহীনতা ফুল ও পতঙ্গ উভয়কে সমস্যায় ফেলছে। গন্ধের সাহায্যে ফুলের সন্ধান করে মধু আহরণে সমস্যায় পড়ছে মৌমাছি, ভ্রমরাদি, কীটপতঙ্গ। ফলে মৌমাছিসহ বিভিন্ন কীটপতঙ্গের জীবনধারণ প্রণালীতে ব্যাঘাত ঘটছে। অপরদিকে কীটপতঙ্গের আনাগোণা কমে যাওয়ায় ফুলের পরাগ সংযোগও বিঘ্নিত হচ্ছে যা ফুল-ফল-বৃক্ষের বিকাশ অনুক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে উদ্ভিদকূলের ভবিষ্যৎকে সঙ্কটাপন্ন করে তুলছে।

উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের আর্থ-সামাজিক প্রভাব কত ভয়াবহ ও সুদূরপ্রসারী তার ধারণা অত্যন্ত দুরূহ। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ুর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জলবায়ুর অবাঞ্ছিত পরিবর্তনের ফলে কোথাও প্রচন্ড খরা আবার কোথাও প্রবল বর্ষণ ও বন্যা ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব লক্ষিত হচ্ছে খাদ্যশস্য উৎপাদনে। খরা-বন্যা দু’য়ের ফলে কৃষির উৎপাদন সরাসরি ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ত্রাণ ও পুনর্বাসনে সরকারি কোষাগারের সংকোচন ঘটছে-বিঘ্নিত হচ্ছে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের রূপায়ণ। কৃষিজ সামগ্রীর উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিল্পের উপর, কেননা অধিকাংশ শিল্প-কারখানা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল।

অনেক পূর্বে আশঙ্কা করা হয়েছিল, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিগলিত হয়ে ২০৫০ সালের মধ্যে উত্তর মেরু বরফমুক্ত হয়ে পড়বে। উত্তর মেরুতে যেভাবে বরফ গলতে শুরু করেছে তাতে বিজ্ঞানীরা হতবাক। আগামী ২০ বছরের মধ্যে তাদের আশঙ্কা সত্যে পরিণত হবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আর্কটিক সাগরে বর্তমানে বরফের তেমন চিহ্ন নেই। তাই নৌকা নিয়ে সোজা মেরুর বুকে পাড়ি দেয়া যায়। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের এমন মারাত্মক উদাহরণ যে ২০১৮-২০১৯ সালে প্রত্যক্ষ করা যাবে, তা বিশ্বের কোন বিজ্ঞানীর কল্পনাতেও ছিল না। মেরুবিশেষজ্ঞ, গবেষক, বিজ্ঞানীরা এখন থেকে বলে দিচ্ছেন, অচিরেই বরফহীন উত্তর মেরু অবলোকিত হবার আশঙ্কা ৫০ শতাংশের অধিক। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মেরু প্রদেশের বরফ বিগলনের মারাত্মক প্রভাব পড়বে বিশ্বের পরিবেশের উপর। তাঁরা বলছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যত বরফ গলে যাবে, বরফ চাদরবিহীন উন্মুক্ত সমুদ্র তত বেশি তাপ শোষণ করবে এবং পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকবে স্থানীয় তাপমাত্রা যা বরফ গলনের হারকে দ্রুততর করবে। আর্কটিক অঞ্চলে বরফের নিচে প্রচুর পরিমাণে কার্বন মজুত রয়েছে। ঐ অঞ্চলের বরফস্তর যত বিগলিত হবে তত সে কার্বন বায়ুমন্ডলে অন্তর্ভুক্ত হবার আশঙ্কা রয়েছে, যা গ্রীন হাউস এফেক্টকে আরো ভয়াবহ করে তুলবে। অনুমান করা হচ্ছে, আর্কটিক অঞ্চলে বরফাচ্ছাদিত যে কার্বন রয়েছে তার পরিমাণ আমাদের বায়ুমন্ডলের মোট কার্বনের প্রায় এক ষষ্ঠমাংশ। বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা যে হারে বেড়ে চলেছে তার ফলে এ শতাব্দীর মাঝামাঝি বা তার পূর্বে তাপমাত্রা ১.৫ থেকে ৪.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায় সমুদ্র, এন্টার্কটিকা, গ্রিনল্যান্ড তথা হিমবাহের বরফাচ্ছাদন গলে সমুদ্রের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা ০.৫ থেকে ২.৫ মিটার অবধি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন ঘটনা সন্দেহাতীতভাবে এক অবর্ণনীয় সুদূরপ্রসারী বিপর্যয় বয়ে আনবে। উপকূলীয় অঞ্চল ও অনেক দ্বীপমালাকে সমুদ্র গ্রাস করে ফেলবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দ্বীপের বৃহদাংশ পানিহীন হয়ে গেছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহে সাধারণত জনঘনত্ব বেশি। নগরায়ন-শিল্পায়নের ব্যাপ্তি সেখানে অধিক। এমতাবস্থায় বিপর্যয়ের ভয়াবহতা যে ব্যাপক হবে যা এখন কল্পনা করাও কঠিন। এর ফলে ভূভাগের অন্য সব অঞ্চলে মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাবে বেকারত্ব, দারিদ্র, জাতিদাঙ্গাসহ নানা সমস্যা।
লেখক: বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার (১ম) স্বর্ণপদক প্রাপ্ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন