পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
এলডিসি পরবর্তী সময়ে রফতানি বৃদ্ধিতে আফ্রিকার বাজার হতে পারে সবচেয়ে সম্ভবানাময়। গতকাল ‘বাংলাদেশ ও আফ্রিকার মধ্যকার বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা’ শীর্ষক ওয়েবিনারের এমন দাবি করেছেন অংশগ্রহণকারীরা।
সপ্তাহব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনের ৫ম দিনে ওয়েবিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১’ আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আফ্রিকা) মো. তারিকুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. আব্দুস সামাদ আল আজাদ, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মোসাদ্দেক হোসেনসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত বছর আফ্রিকার দেশগুলোতে আন্ত বাণিজ্য ১৩৩ বিলিয়ন ডলারের হলেও বাংলাদেশ তার মোট রফতানির মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ আফ্রিকায় রফতানি করে। অথচ সেখানে বাংলাদেশের ওষুধ, টেক্সটাইল, কৃষিজাত পণ্য, পাটপণ্য ও জুতাসহ অন্যান্য পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
এমন অবস্থায় এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য আরও বাড়াতে আফ্রিকার বাজারে পণ্য রফতানির পাশাপাশি সেখানে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানান বক্তারা।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, আফ্রিকা মহাদেশে প্রচুর জমি রয়েছে। যেখানে আমাদের উদ্যোক্তারা তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। আমাদের ওষুধ, টেক্সটাইল, কৃষিজাত পণ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাট ও পাটজাতপণ্য, চামড়া ও জুতাসহ বিভিন্ন পণ্যে ভালো বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে। এ সুযোগ নিতে দেশের উদ্যোক্তাদের আরও উদ্যমী হতে হবে। আফ্রিকা অঞ্চলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণে সরকারের পক্ষ থেকে নীতি-সহায়তাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।
ওয়েবিনারের স্বাগত বক্তব্যে আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু করা, বাংলাদেশে আফ্রিকার দেশগুলোর দূতাবাস স্থাপন, এফটিএ ও পিটিএ সইয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।
এএইচএম আহসান জানান, সারা বিশ্বের সঙ্গে আফ্রিকার বাণিজ্যের পরিমাণ ৮৮৮ বিলিয়ন ডলার, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের মাত্র ৩ শতাংশ। গত বছর আফ্রিকার দেশগুলোর আন্তঃবাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৩৩ বিলিয়ন ডলার। তিনি উল্লেখ করেন, আফ্রিকার বাণিজ্য প্রধানত ‘আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্ট (আগোয়া)’ এবং ‘কমন মার্কেট ফর ইস্টার্ন অ্যান্ড সাউদার্ন আফ্রিকার (কমেসা) মাধ্যমে বেশি প্রভাবিত।
এএইচএম আহসান জানান, আফ্রিকায় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ইপিবি পাঁচটি বাণিজ্য মেলা আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। রপ্তানি পণ্যের ওপর আফ্রিকার দেশগুলোর উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণে সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি কাক্সিক্ষত মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে না। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর রপ্তানি বৃদ্ধিতে আরও বাংলাদেশি পণ্য আফ্রিকায় রফতানির উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেন ইপিবি প্রধান।
মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, আফ্রিকায় অবস্থিত বাংলাদেশের মিশনে সেখানকার বিভিন্ন চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়িত যোগাযোগ রাখছেন। ভবিষ্যতে আফ্রিকায় বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও সম্প্রসারিত হবে।
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আফ্রিকার দেশগুলোর ওষুধের মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ আমদানির মাধ্যমে মেটানো হয়। এর ফলে এ খাতে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
মো. আব্দুস সামাদ আল আজাদ বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুবিধা কাজে লাগিয়ে আফ্রিকা থেকে বিনিয়োগ আকর্ষণে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে ওই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সইয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।