মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে আরএসএস-অনুপ্রাণিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের অধীনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বৃদ্ধি এবং হিন্দু চরমপন্থার অব্যাহত উত্থান আজ কোনো গোপন বিষয় নয়। রোববার দুবাইতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে ভারতের অসহায়ভাবে পরাজয়ের পরে এই ঘটনার একটি উদাহরণ দেখা গেছে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের লড়াইয়ে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটের হারার পর ভারতের একমাত্র মুসলিম খেলোয়াড় মোহাম্মদ শামি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ড হেনস্তার স্বীকার হয়েছেন। পরে রোববার গভীর রাতে ভারতের পাঞ্জাবের বিভিন্ন কলেজে কাশ্মীরি ছাত্রদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছিল। এর আগে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে কখনো জয় পায়নি পাকিস্তান। রোববার, দলটি সেই ধারা ভেঙে দিয়েছে। তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্স ভারতীয়দের অনেকদিন তাড়িত করবে। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ছিল যে, কোনও সময়েই ভারত খেলায় প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
ভারতের ৩১ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার, মোহাম্মদ শামি, দুবাইতে পরাজয়ের পরে প্রধান লক্ষ্য হয়ে ওঠেন, যদিও ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি নিজেই স্বীকার করেছেন যে, তার দলের সবার পারফরম্যান্সই খারাপ হয়েছে। ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় শামিকে হেনস্তা করে হাজার হাজার বার্তা দেয়া হয়েছে। সেখানে তাকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত করে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তিনি খেলায় হারার জন্য অর্থ নিয়েছেন। যাইহোক, ভারতীয় ক্রিকেট কিংবদন্তি, ভক্ত এবং অনেক রাজনীতিবিদ এই ঘৃণামূলক আক্রমণের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং তার প্রতি সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশের ব্যাটিং কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার, বীরেন্দ্র শেবাগ, গৌতম গম্ভীর সহ সাবেক এবং বর্তমান ক্রিকেট খেলোয়াড়রা শামির সমর্থনে এসেছিলেন যখন তাদের তারকা বোলারের প্রতি আক্রমণে তারা শোক প্রকাশ করেছিলেন। এদিকে, পাঞ্জাব রাজ্যে কাশ্মীরের ছাত্ররা বলেছে, তাদের মারধর করা হয়েছে। সাঙ্গরুরের একটি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের একজন ছাত্র বলেছেন যে, হকি স্টিক এবং লাঠি হাতে সজ্জিত কয়েক ডজন লোক খেলার সমাপনী পর্যায় দেখার সময় তাদের আক্রমণ করেছিল।
কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিস (কেএমএস) অনুসারে, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার থেকে আসা হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা হোস্টেলে ঢুকে পাঞ্জাবের সাঙ্গরুরে ভাই গুরু দাস ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে কাশ্মীরি ছাত্রদের নির্মমভাবে মারধর করে।
একজন ছাত্র ফেসবুকে হামলার লাইভ-স্ট্রিমিং করেছে, যখন হামলাকারীরা তাদের কক্ষে ঢুকে ছাত্রদের রড ও লাঠি দিয়ে আক্রমণ করছে। শোয়াব নামে এক ছাত্র বলেন, তারা ঘরের জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলেছিল এবং ক্রমাগত চিৎকার করছিল ‘তুমি পাকিস্তানি’। ‘পাঞ্জাবের স্থানীয়রা, বেশিরভাগ শিখ, আমাদের উদ্ধারে এসেছিল। তারা এই আক্রমণ থেকে আমাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে,’ যোগ করেছেন আরেক ছাত্র। জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র নাসির খুয়েহামি বলেছেন যে, ভারতের পরাজয়ের পরে তিনি পাঞ্জাবের কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হামলার অভিযোগে অনেক ফোন কল পেয়েছেন।
ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের (আইআইওজেকে) সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ভারতীয় খেলোয়াড়দেরকে ঘৃণামূলক বার্তাগুলো প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ঠিক যেমন তারা ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। টুইটারে ভারতের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে উদ্দেশ্য করে আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আপনার সতীর্থের পক্ষে দাঁড়াতে না পারলে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপনার হাঁটু-গেঁড়ে প্রতিবাদ করার কোন মূল্য নেই।’ ইনস্টাগ্রামে অন্য একজন সমর্থক শামিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘বিদ্বেষীদের উপেক্ষা করুন, আপনার প্রচেষ্টার জন্য বেশিরভাগ ভারতীয় কৃতজ্ঞ।’
ম্যাচটি শুধু ভারতে নয়, প্রতিবেশী বাংলাদেশেও সহিংসতার জন্ম দিয়েছে। সোমবার কিছু মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, দক্ষিণের একটি জেলায় জয় উদযাপন করার সময় দুই পাকিস্তান সমর্থক ভারতীয় ভক্তদের কাছে মারধরের শিকার হয়েছেন। সূত্র: ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।