মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৩০ লাখের বেশি মার্কিন নাগরিক নির্ধারিত সময়ের আগে অবসরে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে এক যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। বছর দেড়েক ধরে চলা করোনা মহামারীর অভিঘাতে অনেকেই আগে অবসরে চলে যাচ্ছেন। দ্য কোভিড রিটায়ারমেন্ট বুম শিরোনামের গবেষণাটি করেছেন জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ফারিয়া ই ক্যাস্ট্রো। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব সেন্ট লুইসের সাথে এ গবেষণা করেন তিনি। এ অর্থনীতিবিদ বলেন, গত বছর মহামারী শুরুর পর থেকে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত সাড়ে ৫২ লাখ মানুষ চাকরি ছেড়েছে বা শ্রমবাজার থেকে বের হয়ে গেছে। অন্যদিকে ৩০ লাখের বেশি মানুষ আগাম অবসরে গেছে। গত বছর করোনা মহামারী শুরু হলে বেকারত্বের হার রেকর্ড ছুঁয়ে যায়। ব্যবসা-বাণিজ্যে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে আসে, অর্থনৈতিক কারণে প্রচুর কর্মীকে ছাঁটাই করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে আবার অনেকে স্বেচ্ছায় দ্রুত অবসরে চলে যান। বলা হচ্ছে, গণস্বাস্থ্য-বিষয়ক যে সংকট তৈরি হয়েছিল তার কারণেই অনেকে চাকরি ছেড়ে দিতে আগ্রহী হন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বন্ধ হয়ে যায় স্কুল, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রগুলোর মতো প্রতিষ্ঠান। ফলে সন্তান ও বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের দেখাশোনা করার জন্যও অনেককে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। ফারিয়া ই ক্যাস্ট্রো বলেন, আবার যেহেতু বয়স্করা কভিডের কারণে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ছিলেন, তাই তাদের অনেকেই চাকরি ছেড়ে বাড়িতে নিরাপদে অবস্থান করাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। আবার এ সময় বাড়ি ও সম্পত্তির দাম বাড়তি ছিল। ফলে যারা বাড়ি বা অন্য সম্পদ বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেছেন, তারাও চাকরি ছেড়ে ঘরে বসে থাকাটাই শ্রেয় বলে মনে করেছেন। এদিকে অনেক কর্মী চাকরি ছেড়ে দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে দেখা দিয়েছে কর্মী সংকট। এ সমস্যাকেই এখন কভিড-১৯-এর রেখে যাওয়া প্রধান উদ্বেগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩ লাখ কর্মী স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। জুলাইতেও দেশটিতে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার হার ছিল ২ দশমিক ৭ শতাংশ। আগস্টে এসে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৯ শতাংশে। এদের বেশির ভাগই খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবহন খাতের কর্মী। কোভিড ও কর্মী সংকটের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে অনেক বন্দর কর্তৃপক্ষ সাতদিন ২৪ ঘণ্টা করে কাজ চালু রাখতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাও কাজে আসেনি কারণ দেশটিতে এখন রয়েছে ডক কর্মী, ট্রাকচালক ও কনটেইনার থেকে পণ্য নামানোর কাজের জন্য দক্ষ কর্মীর অভাব। দি আমেরিকান ট্রাকিং অ্যাসোসিয়েশন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাকচালকদের সংকট মহামারীর আগের সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। একদিকে যেমন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, ফলে ভোক্তা চাহিদা বাড়ছে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রাকচালকদের প্রয়োজন পড়ছে। কিন্তু দেশটিতে এখন দক্ষ ট্রাকচালকের দারুণ সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে সরকারের নেয়া বেকারত্ব সহায়তানীতির কারণে অনেক শ্রমিকই কাজ না খুঁজে বরং অলস সময় পার করেছেন। ফলে এক ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। ইউএস নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।