Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চাঁদপুরে স্বামী হত্যায় স্ত্রীর যাবজ্জীবন

চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০২১, ৯:২২ পিএম

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার মেহের উত্তর ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামে স্বামী জামাল হোসেনকে ঘুমের ওষধ ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী ফাতেমা আক্তার (৩৪) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

রোববার (২৪) অক্টোবর বিকেলে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম ফারহানা ইয়াসমিন এই রায় দেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, ২০১৬ সালে ১৪ এপ্রিল ফাতেমা আক্তারের সাথে তার স্বামী মৃত জামাল হোসেনের পারিবারিক বিষয়ে জগড়া বিবাদ হয়। সন্তানদের সামনে স্বামী ফাতেমাকে মারধর করায় অসম্মানবোধ করে। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামীকে জীবনে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। একদিন পর ১৫ এপ্রিল পরিকল্পনা অনুযায়ী রাত ১১টায় বাজার থেকে স্বামী ঘরে আসলে জন্ডিসের তরল ওষধের সাথে ৮টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে রাখে। ওই ওষধ পান করে রাতে স্ত্রী ফাতেমাসহ ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আনুমানিক ৩টার দিকে জামাল হোসেন অচেতন হয়ে পড়লে নাকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনাটি গোপন করার জন্য ফাতেমা পাশবর্তী অন্যঘর থেকে তার ছেলে জাহিদুল ইসলাম ফাহিম (১৫) কে ঘুম থেকে উঠিয়ে তার পিতা মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানায়। ছেলেকে ফাতেমা বলে তার পিতার সাথে জগড়া বিবাদ হয়েছে দিনে। যার ফলে তার মৃত্যুর ঘটনায় তাদেরকে সন্দেহ করবে। এই জন্য মা ও ছেলে একসঙ্গে বাড়ির পাশে পুরনো গর্ত আকারে বড় করে জামালকে মাটি চাপা দেয়। সকাল বেলায় ফাতেমা প্রচার করে তার স্বামী ঢাকায় চাকুরীর জন্য গিয়েছে। কিন্তু বিষয়টি জামাল হোসেন পরিবারের সন্দেহ হলে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে সন্ধান পায়নি। পরবর্তীতে ফাতেমাকে দিয়ে ২৮ এপ্রিল শাহরাস্তি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করে।

এরপর ৩০ এপ্রিল দুপুরে ফাতেমা আক্তার তার স্বামীর নিকটাত্মীয় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মো. আমির হোসেনের নিকট পুরো ঘটনার বিবরণ জানান। আমির হোসেন ঘটনাটি শাহরাস্তি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে তাদেরকে থানা নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে জামাল হোসেনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় ওইদিনই আমির হোসেন বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় ফাতেমা আক্তার ও তার ছেলে জাহিদুল ইসলাম ফাহিমকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শাহরাস্তি থানা পুলিশ ওইদিনই ফাতেমা আক্তার ও তার ছেলেকে আদাতে পাঠান। গত ৬ বছর ফাতেমা চাঁদপুর জেলা কারাগারে এবং ছেলে জাহিদুল ইসলাম শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে থেকে এখন জামিনে আছেন। জাহিদুল এর মামলাটি শিশু আদালতে চলমান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন শাহরাস্তি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমির মজুমদার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারী আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যাবজ্জীবন

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ