নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সুপার টুয়েলভে উঠলে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তান। সে সঙ্গে শ্রীলঙ্কার গ্রুপ থেকে শ্রীলঙ্কা বাদে উঠে আসা অন্য কোনো দল। এ তথ্য জেনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দুটি ম্যাচ খেলে ফেলার পর নিয়ম পাল্টে ফেলল আইসিসি। তখন জানা গেল, সুপার টুয়েলভে উঠলেই বি১ দল হিসেবে ২ নম্বর গ্রুপে খেলা নিশ্চিত নয় বাংলাদেশের। গ্রুপ রানার্সআপ হলে খেলতে হবে ১ নম্বর গ্রুপে। সে গ্রুপে আছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ গ্রুপ রানার্সআপই হয়েছে। কিন্তু ‘এ’ গ্রুপে ঠিকই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শ্রীলঙ্কা। ফলে, বিশ্বকাপের আগে যে ম্যাচ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই জানতেন সবাই, সেই শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ম্যাচের দেখা মিলছে আজ। যে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের চেনা প্রতিপক্ষেরই একটি। তবে ভাবনার কারণ হতে পারে অচেনা ভেন্যু! আরব আমিরাতে বহুবার খেললেও দেশটির সবচাইতে প্রাচীন মাঠ শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারই যে প্রথম খেলতে নামছে বাংলাদেশ!
আইসিসির খামখেয়ালিপনায় সিডিং পরিবর্তন হওয়ায় শুধু গ্রুপ আর প্রতিপক্ষই পাল্টায়নি, সময়ও কমে গেছে রাসেল ডমিঙ্গো-মাহমুদউল্লাহদের। আগের হিসাবে ১৪ দিনে পাঁচ ম্যাচ খেলতে হতো বাংলাদেশের, এখন খেলতে হবে স্রেফ ১২ দিনে। পেছনে পাঁচ দিনের মধ্যে তিন ম্যাচ খেলার ধকল। এরপরই আবার পাঁচটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে লড়াই। সব মিলিয়ে যোগ হয়েছে বাড়তি চ্যালেঞ্জ। খুব কম সময়ের মধ্যে ভিন্ন ধাঁচের একেকটি দলের বিপক্ষে কার্যকর পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের পথ বের করতে হবে বাংলাদেশকে। সেখানেও বাড়তি সুবিধা হিসেবে আসছে সেই ‘চেনা প্রতিপক্ষ’ শ্রীলঙ্কার নাম।
বিশ্ব ক্রিকেটে যে দলগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়মিত খেলে তাদের মধ্যে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরই শ্রীলঙ্কার নাম। এখন পর্যন্ত দু’দল টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে ১১টি। চার জয়ের বীপরিতে ডোমিঙ্গোর শিষ্যদের হার অবশ্য ৭টি। আর বিশ্বকাপে খেলা একমাত্র ম্যাচটিও হেরেছে মাহমুদউল্লাহরা। তবে দু’দলের সবশেষ লড়াইয়ে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়েই মাঠে নামবে টাইগার শিবির। ২০১৮ সালে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিদাহাস ট্রফিতে লঙ্কানদের হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার ভিন্ন ভেন্যু, ভিন্ন কণ্ডিশন, ভিন্ন প্রেক্ষাপট। লক্ষ্যটাও বিশাল। তাতে বাধ সাধতে পারে মরূর উত্তাপ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাকি দুই ভেন্যু দুবাই আর আবুধাবির তুলনায় ধরণে কিছুটা ভিন্নতা আছে শারজায়। বিশেষ করে বছরের এই সময়টায় উইকেটের আচরণ থাকে কিছুটা মন্থর। নতুন বলে পাওয়ার প্লেতে রান এলেও সময় গড়াতেই রান তোলা হয় কঠিন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো তাকিয়ে পাওয়ার প্লেত প্রথম ছয় ওভারের দিকে। স্পিনারদের পাশাপাশি, উঁচু পেসারদেরও বড় ভূমিকা দেখছেন তিনি।
আয়ারল্যান্ড-নামিবিয়া ম্যাচের কথাই ধরা যাক। আগে ব্যাট করা আইরিশরা পাওয়ার প্লের প্রথম ছয় ওভারেই তুলে ফেলেছিল ৫৫ রান। কিন্তু এরপর আর রান বাড়ানোই যায়নি। মাত্র ১২৫ রান করে তারা পরে ৮ উইকেটে ম্যাচ হারে নামিবিয়ার কাছে। এবার আইপিএলেও দেখা গেছে এই দৃশ্য। শুরুতে কিছু রান এলেও সময়ের সঙ্গেই উইকেট হয়ে গেছে কঠিন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নামার আগে এসব হিসেব নিকেশ আছে বাংলাদেশ দলের চিন্তাতেও। ডমিঙ্গো জানালেন, কন্ডিশন বিচারে দলের পরিকল্পনা সাজাবেন তারা, তাতে গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে পাওয়ার প্লের ছয় ওভার, ‘দলের পরিকল্পনা অবশ্যই আমি নিজেদের ভেতরে রাখতে চাই। অবশ্য পাওয়ার প্লের পারফরম্যান্স বরাবরই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় কাল প্রথম ৬ ওভারের বোলিং ও ব্যাটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।’
স্পিনাররা রাখবেন বড় ভূমিকা। তবে শারজাহতে পেসারদেরও ভাল করতে দেখা গেছে। ডমিঙ্গো জানালেন পেসারদের ভূমিকাও এখানে থাকবে বড়, ‘বেশি উচ্চতার পেস বোলাররা সব সময়ই খেলায় থাকবে এখানে। আমি কয়েক বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এসেছিলাম, মনে পড়ে মরনে মরকেল খুব প্রভাব বিস্তার করেছিল। যে লেন্থে বল করেছিল, বল স্কিড করেছিল। উইকেট-টু-উইকেট বল করলে স্পিনারদের সুযোগ এখানে। এলবিডব্লিউ, বোল্ড এসব দেখা যাবে।’
সেই ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে মূল পর্বে কোনো ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর প্রতিবার তাদের ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার প্রত্যয় জানিয়ে এবার খেলতে এসেছেন মাহমুদউল্লাহরা। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে একটা সময় আগেভাগেই বিদায় নেওয়ার শঙ্কা জাগলেও শেষ পর্যন্ত টানা দুই জয়ে টিকে যায় তারা। এবার আরেকটি লক্ষ্যও আছে বাংলাদেশের। সুপার টুয়েলভে ভালো করতে পারলে সুযোগ আছে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার। বাংলাদেশ কি পারবে সেই স্বপ্নের প্রথম ধাপটি পেরুতে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।