নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে ‘বিশ্বকাপ’ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বৃহস্পতিবার স্বাগতিক মালদ্বীপের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। মালেস্থ মালদ্বীপ জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি। ম্যাচে পূর্ণ তিন পয়েন্ট পেতেই মাঠে নামবে লাল-সবুজরা।
সাফ শুরুর আগে বাংলাদেশের কোচ ও খেলোয়াড়রা বারবার একই কথা বলেছেন, আর তা হচ্ছে- প্রতিটা ম্যাচই ‘ফাইনাল’। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে, পরের ম্যাচে ভারতকে রুখে দিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা বাংলাদেশ দলের মনোভাব আগের মতোই আছে। মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচটিকেও ‘আরেকটি ফাইনাল’ হিসেবে ধরে নিচ্ছেন জামাল ভূঁইয়ারা। বুধবার দুপুরে মালেতে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানান বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রæজোন এবং অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।
আশির দশকে মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের ফুটবলের সাফল্য গাঁথা রোমন্থন করেন অনেকে। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৫-এক বছরে তিনবার দ্বীপ দেশকে বিধ্বস্ত করা বাংলাদেশ গোল দিয়েছিল ১৩টি। নব্বইয়ের পর থেকে বদলে যায় মালদ্বীপের ফুটবল। তাদের ঊর্ধ্বগতির বিপরীতে তলানিতে নামতে শুরু করে বাংলাদেশ। একসময় যে মালদ্বীপকে কোনো প্রতিপক্ষই মনে করতো না,সেই দলই এখন লাল-সবুজদের জন্য বড় মাথা ব্যথা। সর্বশেষ তিন ম্যাচে দ্বীপ দেশটির কাছে বাংলাদেশের অসহায় আত্মসমর্পণই বলে দেয় ফুটবলে দুই দেশের ব্যবধান। সাফের ১৩তম আসরে মাঠের পারফরম্যান্সে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপের চেয়ে এগিয়ে থেকেই ম্যাচ শুরু করবে ২০০৩ সালে টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতা বাংলাদেশ। এবারের আসরে অংশ নেয়া পাঁচ দলের মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ে তলানির দল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় ও শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে ড্র’র তৃপ্তি ম্যাচের আগে সঙ্গী তাদের। অন্যদিকে কখনও সাফের শিরোপা না জেতা নেপালের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে মালদ্বীপ। যদিও ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৩১ ধাপ এগিয়ে আছে তারা। খেলাও হচ্ছে তাদের মাঠেই। দলটির আক্রমণভাগে আছেন দক্ষিণ এশিয়ার তারকা ফরোয়ার্ডদের দুই জন আলি আশফাক ও আলি ফাসির। রক্ষণভাগও মজবুত। তবে এসব আমলে নিচ্ছেন না বাংলাদেশ কোচ অস্কার ব্রæজোন। কাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,‘আমাদের লক্ষ্য ফাইনালে খেলা। কাজটি সফলভাবে করতে হলে আমাদেরকে বাকি দুই ম্যাচে জিততে হবে। যার একটি বৃহস্পতিবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে। আমরা তিন পয়েন্ট পেতেই মাঠে নামবো। প্রতিপক্ষের আক্রমণ ও রক্ষণভাগ নিয়ে আমরা সতর্ক। মালদ্বীপের মাঠে খেলা বলে তাদেরকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ঘরের মাঠে তারা কিন্তু আমাদের চেয়ে এগিয়ে নেই। বরং আগের ম্যাচে নেপালের কাছে হারের কারণে মালদ্বীপ চাপ নিয়েই আমাদের বিপক্ষে মাঠে নামবে।’
দুই হলুদ কার্ডে নিষিদ্ধ রাকিব হোসেনকে মধ্যমাঠে মিস করবে বাংলাদেশ দল। লালকার্ডে থাকা ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষও থাকবেন মাঠের বাইরে। এছাড়া মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদের পিঠে চোট থাকায় তারও মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলা অনিশ্চিত। তবে এসব ভাবনায় আনছেন না বাংলাদেশ কোচ। তিনি জানান, দলের প্রতিটি পজিশনেই তার একাধিক খেলোয়াড় রয়েছে। রাকিব ও বিশ^নাথের বিকল্প ভেবে রেখেছেন অস্কার,‘এটা ঠিক আমরা দু’জন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে পাব না। তবে আমার কাছে তাদের বিকল্প আছে। ফাহাদের বিকল্পও ভেবে রেখেছি।’
পরিসংখ্যানের পাতায় মালদ্বীপের অবস্থান ঈর্ষনীয় হলেও এবার পারফরম্যান্স বলছে পরিষ্কার ফেভারিট বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে খেলা বলে ফেভারিটের তালিকায় আছে মালদ্বীপও। ২০১৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফের শিরোপা জিতেছিল তারা। শিরোপা ধরে রাখতে এবং টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই তাদের। চাপে থাকা এই মালদ্বীপকে সুযোগ দিতে চাইছে না বাংলাদেশ। দু’দলের মধ্যকার ১২ ম্যাচে বাংলাদেশের পাঁচ জয়ের বিপরীতে মালদ্বীপ জিতেছে চারটিতে। বাকি তিনটি হয়েছে অমীমাংসিত। তবে বাংলাদেশের জয়ের গল্পগুলো তিন যুগ আগের। সাম্প্রতিক সময়ের লড়াইয়ে মালদ্বীপের সঙ্গে পেরে ওঠছে না লাল সবুজের দলটি। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রীতি ফুটবল ম্যাচে দ্বীপ দেশটির কাছে ৫-০ গোলে উড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। পাঁচ বছর পর আবারও যখন মুখোমুখি দুই দেশ,তখন ইতিহাস সামনে চলে আসছে। ২০০৩ সালে প্রথম এবং একমাত্র সাফ শিরোপা বাংলাদেশ জিতেছিল এই মালদ্বীপকে হারিয়েই। আর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দু’দলের মধ্যকার সর্বশেষ লড়াইটি হয়েছিল ২০১৫ সালে। ওই আসরে ৩-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। এসব পরিসংখ্যান শুধুই সংখ্যা হিসেবে মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূইয়া। তার কথায়,‘আমি আগেও বলেছি অতীতে কী হয়েছে তা নিয়ে পড়ে থাকতে চাই না। আমরা এখানে একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এসেছি। ফাইনালের সেই লক্ষ্যপূরণ করতে হলে আমাদের পরের দুই ম্যাচে জিততেই হবে। আমরা মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পেতেই মাঠে নামবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।