Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কৃষক হত্যায় চাপে যোগী পুলিশ, মন্ত্রীপুত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪৫ পিএম

রামরাজ্য নয়, উত্তরপ্রদেশে চলছে ‘কিলিং-রাজ’। এককথায় খুনের রাজত্ব। সোমবার ‘অমানবিক’ লখিমপুর খেরি কাণ্ড নিয়ে এই ভাষাতেই গর্জে উঠলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিন্দার ঝড় গোটা ভারতেই।

আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন উত্তরপ্রদেশে। তার আগে সেখানে গাড়ির ধাক্কায় আন্দোলনরত চার কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমতো ব্যাকফুটে যোগী সরকার। সেই গাড়িতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস ছিলেন বলে অভিযোগ। ফলে বিরোধীদের চাপে মোদি সরকারও চরম বিপাকে। আর তাই ‘ডবল ইঞ্জিন’-এর ঔদ্ধত্য ভুলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কৃষকদের সব দাবি মেনে নিতে বাধ্য হলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, মৃত কৃষকদের পরিবারকে বিপুল আর্থিক সাহায্য, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত—কোনও কিছুতেই আপত্তি নেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের! তাতেও ভোটের আগে লখিমপুর খেরির মাটি থেকে রক্তের দাগ মোছা যাবে কি না, তা ভেবে শঙ্কিত বিজেপি।

এদিন উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অবনীশ কুমার অবস্তি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলে সহ সংঘর্ষে জড়িত একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যদিও ঠিক কী কী ধারায় মামলা করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের নামও রয়েছে এফআইআরে। গাড়ির ধাক্কার পাল্টা কৃষকদের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে গাড়িচালক এবং তিন বিজেপি কর্মীর।

উত্তরপ্রদেশ পুলিসের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমারের দাবি, উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বিশদে কিছু বলা যাচ্ছে না। বিরোধীদের অভিযোগ, মন্ত্রিপুত্রকে বাঁচাতে বিষয়টি আড়াল করছে পুলিস-প্রশাসন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের হুঙ্কারে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। সেই ভিডিও এখন ভাইরাল। তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন প্রশান্ত কুমার। বলেছেন, মৃত চারজনের পরিবারকে ৪৫ লাখ রুপি করে দেওয়া হবে। চাকরি পাবেন এক সদস্য। আহতরা পাবেন ১০ লাখ রুপি করে। দুপুরের মধ্যে প্রশাসন সব দাবি মেনে নেুয়ায় আন্দোলন তুলে নেন কৃষকরা।

ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতেও এদিন সিলমোহর দিয়েছেন আদিত্যনাথ। সরকারের তরফে ঘোষণা, লখিমপুর খেরি-কাণ্ডের তদন্ত করবেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি। গোটা ঘটনাকে ‘মানবাধিকারের সর্বনাশ’ দাবি করে বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতার অভিযোগ, ‘তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে এক বছর ধরে আন্দোলন করছেন কৃষকরা। গুলি করে, গাড়ি দিয়ে পিষে নৃশংসভাবে তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে।’ তৃণমূল সাংসদদের প্রতিনিধি দলকে লখিমপুরে ঢুকতে না দেয়া নিয়েও সরব হন তিনি। তার কথায়, ‘আসলে ওরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। সব বিজেপি রাজ্যে একই অবস্থা।’ সূত্র: বর্তমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ