নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দুর্ভাগ্য নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত সদ্য বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড এলিটা কিংসের। শেষ পর্যন্ত ফিফার ছাড়পত্র পাননি তিনি। ফলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে সুযোগ পেলেও চূড়ান্ত দলে জায়গা হয়নি তার। তাই লাল-সবুজ জার্সি গায়ে এখনই মাঠে নামা হচ্ছেনা এলিটার। তাকে রেখেই দক্ষিণ এশিয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপায় চোখ রেখে মঙ্গলবার দুপুরে মালদ্বীপের রাজধানী মালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছেন জামাল ভূঁইয়ারা। আগামী ১ অক্টোবর মালেতে বসছে এই টুর্নামেন্টের ১৩তম আসর। ফাইনালের মধ্যদিয়ে সাফের পর্দা নামবে ১৬ অক্টোবর। উদ্বোধনী দিনই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে লাল-সবুজদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। সাফের এবারের আসরে ৫টি দেশ অংশ নেয়ায় রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। লিগ পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল খেলবে ফাইনালে।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ প্রথম ও শেষ শিরোপা জয় করেছিল ২০০৩ সালে ঢাকায়। লাল-সবুজরা সর্বশেষ ফাইনাল খেলেছিল ২০০৫ সালে করাচিতে এবং শেষবার সেমিফাইনালে জায়গা পেয়েছিল ২০০৯ সালে ঢাকায়। এরপর সাফের টানা চার আসরে বিবর্ণ বাংলাদেশের ফুটবল। ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টের গ্রæপ পর্বই টপকাতে পারেনি বাংলাদেশ। টানা ব্যর্থতার বেড়াজালে থাকলেও এবার শিরোপা জিততে চায় লাল-সবুজরা। মালদ্বীপ যাওয়ার আগে সোমবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানান বাংলাদেশের নতুন স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন ও অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।
জামাল বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্যই হলো সাফ শিরোপা জেতা। আমরা আসন্ন সাফে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। লক্ষ্যপূরণে কয়েকটা দিন অনুশীলনে কঠোর পরিশ্রম করেছি আমরা। সবাই নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত আছি। আমরা নিজেদের খেলাটা দেখাতে চাই। কিছু একটা করে দেখাতে চাইছি সবাই। ম্যাচ বাই ম্যাচ এগিয়ে যেতে চাই। অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে মালে থেকে ঢাকায় ফেরা। কোচও আমাদের মতোই ট্রফি জিততে চাইছেন। আশা করছি লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো আমরা।’ টুর্নামেন্টে কারা ফেভারিট? এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অধিরায়ক বলেন,‘ফিফা র্যাঙ্কিং বলছে ভারতই ফেভারিট। তবে আমাদের কাছে সব প্রতিপক্ষই সমান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ। তাই এখন তাদের নিয়েই ভাবছি। প্রথম ম্যাচটা কঠিন হবে, শ্রীলঙ্কাকে আমাদের হারাতেই হবে। তারপর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ। আমাদের দল ভালো। আমার নিজের কনফিডেন্স আছে যে, এই দলটি এবার কিছু করতে পারবে।’
বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন কোচ অস্কার ব্রæজোন কৌশলে পরিবর্তন এনে দলকে সাফল্য এনে দিতে চাইছেন। ৩-৪-৩ ফরমেশন থেকে বেরিয়ে তিনি দলকে প্রস্তুত করেছেন ৪-৩-৩ ছকে। নতুন কোচের অধীনে মাত্র কয়েকদিন অনুশীলন হলো, খেলোয়াড়রা কি মানিয়ে নিতে পারবেন নতুন কৌশলে? জামাল জানালেন কোচের ভাবনা পরিষ্কার বুঝতে পেরেছেন তারা, ‘কোনো কিছুই একদিনে তৈরি হয় না, একটা প্রক্রিয়া আছে। কোচ প্রথম দিন অনুশীলনে যোগ দিয়েই বলেছেন কিভাবে দলকে খেলাতে চান। তিনি সবকিছু পরিষ্কার করে দিয়েছেন। যে ফরমেশন দিয়েছেন, সেভাবে আমাদের ঘরোয়া লিগে বেশিরভাগ ক্লাবই খেলে। তা মানিয়ে নিয়েছি আমরা। কোচের অধীনে নতুন ফরমেশনে ধাতস্ত হওয়ার চেষ্টা করেছি।’
শুধু অধিনায়কই নন, কোচ অস্কারও নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বাংলাদেশকে। মধ্যবর্তী দায়িত্বটা তিনি রাঙাতে চান সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ক্যারিয়ারে প্রথম জাতীয় দলের দায়িত্বটা স্মরণীয় করে রাখতে চান এই স্প্যানিশ। তিনি সাফের প্রথম ম্যাচকে বড় টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন, ‘আমাদের প্রথম ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ওই ম্যাচে আমরা জিতলে দারুণ এক সূচনা হবে।’ ম্যাচ জিততে প্রয়োজন গোল। বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা স্কোরিং। দলটির ফরোয়ার্ডরা ঘরোয়া পর্যায়ে সেভাবে গোল করতে পারেন না। ফলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে একটা চাপ থেকেই যায়। এ প্রসঙ্গে অস্কার বলেন, ‘তাহলে আমাকে মাঠে নামতে হবে (হাসি)। স্কোরারদের উপর আমার বিশ্বাস আছে। আশা করি মালদ্বীপে তারা গোল পাবে।’
সাফে মালদ্বীপ ও ভারতই শক্তিমত্তায় এগিয়ে। এ দুই দল নিয়ে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘এ দুই দলের ব্যাপারে আমার পূর্ণ ধারণা আছে। আমার সেই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ দলে কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো।’ এদিকে সোমবার সন্ধ্যার পর সাফের ২৩ জনের চুড়ান্ত দল ঘোষণা করেন কোচ অস্কার।
বাংলাদেশ দল:
গোলরক্ষক : আশরাফুল ইসলাম রানা, আনিসুর রহমান জিকো ও শহিদুল আলম সোহেল। ডিফেন্ডার : বিশ্বনাথ ঘোষ, তপু বর্মণ, রহমত মিয়া, রিয়াদুল হাসান, ইয়াসিন আরাফাত, রেজাউল করিম, তারিক কাজী, টুটুল হোসেন বাদশা ও মো. হৃদয়। মিডফিল্ডার : জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা, সাদ উদ্দিন, রাকিব হোসেন ও আতিকুর রহমান ফাহাদ। ফরোয়ার্ড : বিপলু আহমেদ, মাহবুবুর রহমান সুফিল, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সুমন রেজা, মতিন মিয়া ও জুয়েল রানা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।