বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পটুয়াখালীর দুমকিতে পায়রা নদীর উপরে নির্মিত লেবুখালী পায়রা সেতু যান-চলাচলের জন্য আগামী অক্টোবর মাসের যেকোনো দিন খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সেতু কর্তৃপক্ষ।আর এতেই আগামী অক্টোবর থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ফেরী রুট লেবুখালী ফেরীঘাট। ৩৩-বছর যাবৎ ফেরীতে চাকুরী করা ফেরী চালক মোঃ শাহ-আলম দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলেন অনেক স্মৃতি জড়িত এই ফেরীঘাট। খুব খারাপ লাগছে আর কয়েকদিন পরেই এখানে ফেরী চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।আবার ভালোও লাগছে যে হাজার হাজার মানুষ শতশত যানবাহন ফেরীঘাটের ঝামেলা ছাড়াই কয়েক মিনিটেই সেতু দিয়ে এই পায়রা নদী পাড় হতে পারবে এটা ভেবে।
খোলামেলা আলোচনায় ফেরী মাস্টার মোঃ শাহ-আলম বলেন আমি ১৯৮৬ সালে ফেরীতে চাকুরী নেয়ার পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে চাকুরী করেছি,আমি বরিশাল দবদবিয়া ফেরীতে চাকুরী করছি দীর্ঘদিন। প্রায়-একযুগ আগে ২০১১ সালে আমি এই লেবুখালী ফেরীতে যুক্ত হই।তিনি আরো জানান লেবুখালী ফেরীঘাটে মোট ৬-টি ফেরী চলাচল করে।৬-টি ফেরীতে ১০ জন ফেরী চালক সহ প্রায়-৫০ জন স্টাফ আছে। তবেঁ ফেরী বন্ধ হলে ১০ জন চালক ছাড়া বাকিদের অন্য কোথায় বদলী হওয়ার কোন সুযোগ নাই কারণ তারা সরকারি তালিকাভুক্ত নয়। জানা যায় ১৯৮০ সালের দিকে ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা উন্নতি করতে কয়েকটি নদীতে ফেরী চলাচল চালু করে তৎকালীন সরকার।গত কয়েক বছর আগে বরিশাল থেকে পটুয়াখালীর সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় যাওয়ার জন্য ছোট-বড় ৬-টি ফেরী পাড় হতে হতো। তবেঁ লেবুখালী ফেরী ছাড়া অন্য ফেরীগুলো আগেই বন্ধ হয়ে গেছে সেতু হওয়ার কারণে। আগামী মাসে লেবুখালী পায়রা সেতু উদ্বোধনের পর বরিশাল থেকে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা যেতে আর কোন ফেরী পারাপার হতে হবেনা।
লেবুখালী ফেরীঘাট সুপারভাইজার মোঃ আফজাল হোসেন জানান লেবুখালীতে চারটি নতুন ফেরী চলাচল করে এবং দুটি পুরাতন ফেরী আছে।নতুন চারটি ফেরী পটুয়াখালীর বগাতে একটি,আমতলীতে একটি,গলাচিপাতে একটি ও পায়রাগঞ্জ ফেরীঘাটে একটি দেয়া হবে,আর পুরাতন দুটি ঢাকায় মেরামতের জন্য পাঠানো হবে।এবিষয়ে পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান জানান ব্রীজ চালু হওয়ার পরে ঢাকা থেকে ফেরীর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
উল্লেখ্য কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (কেএফএইডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওএফআইডি) যৌথ অর্থায়নে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ফোর লেনবিশিষ্ট এই পায়রা সেতু নির্মাণ করা হয়।২০১২ সালে একনেক অনুমোদন হলেও সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। সেতু নির্মাণের দায়িত্বে ছিলো চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড।
পায়রা সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার,সাথে রয়েছে ১ হাজার ২৬৮ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক, টোল প্লাজা, প্রশাসনিক ভবন, ইলেকট্রিফিকেশন। ২০০ মিটার করে দেশের দীর্ঘতম দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে এই সেতুতে। নদীর তলদেশে বসানো হয়েছে ১৩০ মিটার দীর্ঘ পাইল।যা দেশের সর্ববৃহৎ। সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে চট্টগ্রামের তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর আদলে নান্দনিক নকশায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।