বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ফেনীর বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী কায়সার মাহমুদকে হত্যার দায়ে স্ত্রী শাহানাজ নাদিয়ার যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ রায় দিয়েছে আদালত। জেলা ও দায়রা জজ ড.বেগম জেবুন্নেছা আজ বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ছাড়াও আসামীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় নাদিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহাম্মদ বলেন,কায়সার মাহমুদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণে তার স্ত্রী শাহানাজ নাদিয়া জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ ধরনের রায় ঘোষণার মধ্যে দিয়ে পরবর্তীতে কেউ অপরাধ করতে সাহস পাবেনা। আসামী পক্ষের আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল বলেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নির্ভর করে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা যথাযথ রায় পাইনি। অচিরেই উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। কায়সার মাহমুদের ভগ্নিপতি সাইফ উদ্দিন মাহমুদ জানান, প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় পাইনি। এ রায়ে কায়সার মাহমুদের পরিবার আশাহত হয়েছে। নাদিয়া আত্মস্বীকৃত খুনী। তার সর্বোচ্চ সাজা হওয়া উচিত ছিল। কায়সারের পরিবারের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য,২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রামপুর ভূইয়া বাড়ি সড়কস্থ নজির সওদাগর বাড়ির প্রফেসর আবুল খায়েরের ছেলে কায়সার মাহমুদের সাথে আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্দুয়া দৌলতপুর গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে শাহানাজ নাদিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকমাস পর থেকে তাদের দুজনের মধ্যে মনমালিন্য দেখা দেয় এবং সম্পর্কের ফাটল ধরে। ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ শাহানাজ নাদিয়া কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন লতিফ টাওয়ারে তার বাবার বাসায় বেড়াতে যায়। ১১ এপ্রিল বিকেলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর জন্য কায়সারের বাসায় আসে নাদিয়া। তারা দুজন ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে বাসা থেকে একসাথে বের হয়। পরে আর বাসায় ফেরেনি কায়সার। ওইদিন রাত ৯ টার দিকে পুরাতন রেজিষ্ট্রি অফিস সংলগ্ন কবরস্থানের পাশে দূর্বৃত্তরা কায়সারকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তখন তার সাথে স্ত্রী নাদিয়াও ছিল। পরে আহত কায়সারকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। ১২ এপ্রিল ময়নাতদন্ত শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। ওইদিন রাতে তার পিতা প্রফেসর আবুল খায়ের বাদী হয়ে পুত্রবধু শাহানাজ নাদিয়া ও তার বাড়ির মো: হারুনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো: আলমগীর হোসেন তার বাবার বাসা থেকে শাহানাজ নাদিয়াকে গ্রেফতার করে। ১৩ এপ্রিল বিকেলে নাদিয়াকে আদলতে প্রেরণ করা হলে তৎকালিন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট খায়রুল আমিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দিতে স্বামী কায়সারকে হত্যার দায় স্বীকার করেন স্ত্রী নাদিয়া। ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ শুরু হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর জেলা ও দায়রা জাজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ আদেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।