বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মোবাইলে লুডু খেলা নিয়ে বকা দেয়ায় রতন মোল্লা নামে আট বছর বয়সী এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় সোহান নামে আরো এক শিশুকে হত্যাচেষ্টা করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। মোবাইলে লুডু খেলা নিয়ে দুই শিশুকে মেহেদী নামে এক যুবক বেড়াতে নেয়ার কথা বলে পদ্মা সেতু এক্সপ্রেস হাইওয়েতে ভয়াবহ এই হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়। বুধবার ভোর রাতে শিবচর থানা পুলিশ মেহেদীকে গ্রেপ্তার করলে প্রাথমিকভাবে হত্যার কারণ কথা স্বীকার করে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জেলার শিবচর উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের চরকান্দি এলাকার নানা আনসু বেপারির বাড়িতে কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসে মেয়ের ঘরের নাতি মেহেদী হাসান (১৮)। বাড়িতে আসার পর মেহেদী পাশর্^বর্ত্তী কৃষক জসিম মোল্লার একমাত্র ছেলে প্রথম শ্রেনীর শিক্ষার্থী রতন মোল্লা (৮) ও নাসির সিকদারের ছেলে সোহানের (৯) সাথে মোবাইলে গেম খেলতো। মঙ্গলবার সকালে সোহানের মায়ের মোবাইলে আবারো এই ৩ জন লুডু খেলে। খেলার সময় ছোট্ট রতন ও সোহান মেহেদীকে বকা দেয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে মেদেহী হাসান শিশু দুটিকে হত্যার ছক কষে।
শিবচর থানা পুলিশ বলেন, মেহেদী হাসান মঙ্গলবার বিকেলে ঘোড়ানো ও নতুন রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা বলে পদ্মা সেতুর এপ্রোচ সড়ক সংলগ্ন নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে সোহানকে পানি আর চানাচুর আনার জন্য এক শ’ টাকা দিয়ে দোকানে যেতে বলে। সোহান খাবার আনতে চলে যায়। ততক্ষনে সন্ধ্যা নেমে গেছে। সোহান যেতেই মেহেদী রতনকে ওই নির্জন স্থানে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। প্রায় ২০ মিনিট পর সোহান এসে রতন কোথায় জানতে চায়। মেহেদী জানায় রতন বাড়ি চলে গেছে। এ কথা বলে মেহেদী সোহানকে নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় যায়। সেখানে নিয়ে সোহানকেও শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টা করলে চিৎকারে এলাকাবাসি এগিয়ে আসলে মেহেদী নানা বাড়ি পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা সোহানকে উদ্ধার করে। নানা বাড়িতে পরিবারের লোকজন মেহেদীর সারা শরীরে কাদামাখা দেখে রতন ও সোহানের খোঁজ চায় স্বজনরা। কৌশলে মেহেদী বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা শিবচর থানায় খবর দেয়।
পরে সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান, শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) আমির সেরনিয়াবাতসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে সে হত্যাকান্ডর বিষয়টি স্বীকার করে এবং হত্যাকান্ডের স্থানে রতনের লাশ দেখিয়ে দেয়। বের হয় হত্যার পৈশাচিকতা। উদ্ধার করা হয় মোবাইল ফোনটিও। বুধবার মধ্যরাতে লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে।
এসময় ঘাতক মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোবাইলে লুডু খেলার সময় ওরা আমার বাবা-মাকে বকা দেয়। তাই ওদের আমি হত্যা করি।’
আহত শিশুর মামা ইউসুফ মাতবর জানান, ‘আমার মেঝ বোনের একমাত্র ছেলেকেও ঘাতক মেহেদী হত্যার চেষ্টা করেছিল। আল্লাহর রহমাতে সে বেঁচে আছে। তবে ওর বন্ধুকে গলাটিপে মেরে ফেলেছে। আমরা এই নির্মম হত্যার কঠোর বিচার চাই। যাতে কোনভাবেই এ অপরাধী ছাড়া না পায়।’
শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোবাইলে লুডু খেলার সময় বকা দেয়া নিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। অধিক তদন্ত করে বিষয়টি পরিস্কার ধারণা নেয়া যাবে।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান জানান, ‘রাগ আর ক্ষোভ থেকে মেহেদী হাসান দুই শিশুকে হত্যার চেষ্টা করে। এতে এক শিশু মারা যায়, অপরজন গুরুতর আহত হয়েছে। আমরা মেহেদীর কথানুসারেই এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। সেই সাথে পরিবার থেকে হত্যা মামলা দায়ের করলে মেহেদীকেও আদালতে পাঠানো হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।