Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মুরাদনগরে মসজিদে খুন হওয়া মুসল্লির বাড়িতে ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৬:৪১ পিএম

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কুড়াখাল গ্রামে সুন্নত নামাজরত অবস্থায় মসজিদে খুন হওয়া আবু হানিফ খানের (৪৩) বাড়িতে গেলেন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি। গতকাল শনিবার বিকেলে তার বাড়িতে গেলে নিহতের মেয়ে লামইয়া (১২) কান্না জড়িত কণ্ঠে এমপিকে বলেন, ‘কোন আর্থিক সহযোগিতা চাই না, নিরপরাধ বাবা হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’ এ সময় এমপি পরিবারের অন্য সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশ্বাস দেন।

এলাকায় এমপি এসেছে এমন সংবাদে অনেক লোক জড়ো হয়ে তাদের আবেগ এমপি’র কাছে প্রকাশ করেন। কুড়াখাল সৈয়দ দায়েম উল্লাহ শিশু সদন হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা মাঠে জড়ো হওয়া লোকজনের উদ্দেশ্যে কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, এ বর্বর হামলাকারীরা প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটিয়ে ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে। ঘটনাটি লুকানোর কোন সুযোগ নেই। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। আর যাতে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে দিকে খেয়াল রাখবেন।

বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মসজিদে হামলার ঘটনায় একজন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনার প্রধান পরিকল্পনাকারী শাহীন ভুইয়াকে (৩৫) আটক করে জেল-হাজতে প্রেরণ করেছি। নিহতের স্ত্রী আফরোজা বেগম (৩২) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সমাজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই দু’গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গত শুক্রবার জুমার দিন সহ-সভাপতি হাবিব খানের গ্রুপের কেউ যদি কোন বিষয় নিয়ে কথা বলে তবেই হামলা শুরু হবে। এমন পরিকল্পনা আগে থেকেই নিয়ে রেখেছিল সভাপতি আব্দুল মালেক গ্রুপ। তাই তারা আগে থেকেই মসজিদের মিম্বরের নীচে ও হুজুরাখানায় ধারালো অস্ত্র ও লোহার পাইপ এনে রাখেন। খুৎবা পড়ার আগ মুহুর্তে ইমাম আজান দিতে বললে মুয়াজ্জিন মসজিদের দরজায় যাওয়া মাত্রই সহ-সভাপতি হাবিব খান বলে ওঠেন যে, গত ২৫ বছর ধরে মসজিদের ভিতরে মিম্বরের সামনে আজান দেয়া হতো, আজ কেন দরজায়? এ কথা বলতেই, সভাপতি আব্দুল মালেক গ্রুপ আচমকা হামলা চালায়। আতংকে ছুটাছুটি করে বেরিয়ে আসতে গিয়ে সাধারণ মুসল্লি কম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সৈয়দ দায়েম উল্লাহ শিশু সদন হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার বেশ কয়েকজন ছাত্র ও দুইজন শিক্ষক আহত হয়। তাছাড়া সহ-সভাপতি হাবিব খান গ্রুপের গুরতর আহত ইমন খান (২৫) ও আবুল খায়ের (৪০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

নিহত আবু হানিফ খানের লাশ কুমেক হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শনিবার বিকেলে ওই মাদরাসা মাঠে জানাযার পর স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

উল্লেখ্য, কুড়াখাল বাইতুন নূর কেন্দ্রিয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ চলাকালে গত শুক্রবার খুৎবার পূর্বে আজান (সানি) দেয়াকে কেন্দ্র করে মসজিদের সহ-সভাপতি হাবিব খান গ্রুপের উপর সভাপতি আব্দুল মালেক গ্রুপ মসজিদের ভিতরে হামলা চালায়। হামলায় সুন্নত নামাজরত অবস্থায় একাধিক ছুরির আঘাতে মারা যায় মুসল্লি আবু হানিফ খান (৪৩)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুমিল্লা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ