নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ফুটবল
করোনাকাল পেরিয়ে ফুটবল ফিরেছে সেটিও অনেক দিন। শুরু হয়ে গেছে নতুন মৌসুমও। তবে ঘরোয়া ফুটবলে মাঠের ৯০ মিনিটের যে উত্তাপ সেটি যেন পাওয়া হচ্ছিল না ফুটবল রোমান্টিকদের। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শুরুতেই অবশেষে দেখা মিলল তেমনই এক রাতের, যার অপেক্ষায় নির্ঘুম কাটে প্রহরের পর প্রহর। কী হয়নি এদিন! প্রতিটি ম্যাচের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গোল হয়েছে একের পর এক। বাদ যায়নি আত্মঘাতী গোলও। হলুদ কার্ড থেকে শুরু করে লাল কার্ডও দেখাতে হয়েছে রেফারিকে! আর রাতের সবচাইতে বড় আকর্ষণ মেসি-নেইমার-এমবাপ্পে ত্রয়ীর ‘অভিষেক’ দেখতে যারা বসেছিলেন তাদেরও টিভির রিমোট ছাড়তে হয়েছে এক বুক হতাশা নিয়ে -স্পোর্টস রিপোর্টার
মেসির অভিষেকে পিএসজির হোঁচট
পিএসজির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিষেকে নিজের ছায়া হয়ে থাকলেন লিওনেল মেসি। নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপেও যেন খুঁজে ফিরলেন নিজেদের। আন্দের এররেরার গোলে অবশ্য এগিয়ে যায় তারা, কিন্তু নিজেদের মাঠে উজ্জীবিত ফুটবল খেলা ক্লাব ব্রæজের বিপক্ষে পেরে ওঠেনি মাওরিসিও পচেত্তিনোর দল। প্রতিপক্ষের মাঠে ‘এ’ গ্রæপের ম্যাচে ১-১ ড্র করেছে পিএসজি। দুটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। এররেরা পিএসজিকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্রæজকে সমতায় ফেরান হান্স ফানাকেন।
সময়ের সেরা ফরোয়ার্ডদের তিন জনকে নিয়ে সাজানো পিএসজির আক্রমণভাগ পারেনি আগ্রাসী ফুটবল খেলতে। প্রতিপক্ষের বক্সে ও বক্সের বাইরে ভুগতে দেখা গেছে নেইমার, এমবাপে ও মেসিকে। দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর দলটির আক্রমণভাগ যেন গুটিয়ে যায় আরও। শেষ দিকে মরিয়া চেষ্টা চালালেও গোল পাননি মেসি; রাঙাতে পারেননি নতুন দলের হয়ে ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিষেক’।
৯ গোলের ম্যাচে সিটির জয়
ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গোল হলো একের পর এক। হলো আত্মঘাতী গোলও। ম্যানচেস্টার সিটি পুরোটা সময় এগিয়ে রইলো বটে, তবে ক্রিস্টোফার এনকুকুর হ্যাটট্রিকে লড়াইয়ে ছিল লাইপজিগও। অবশেষে শেষ ১৫ মিনিটের ভাগ্যবদলে জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরু করল পেপ গার্দিওলার দল।
গতপরশু রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রæপের ম্যাচটিতে বল দখলে দুই দলই সমানে-সমান। তবে আক্রমণে অনেক এগিয়ে সিটি। গোলের উদ্দেশে তাদের নেওয়া মোট ১৬ শটের আটটি ছিল লক্ষ্যে। আর লাইপজিগের ১০ শটের মাত্র তিনটি লক্ষ্যে এবং প্রতিটিই গোল। আর তাতে গোল উৎসব করে ম্যাচটি ৬-৩ ব্যবধানে জিতেছে সিটি। তাদের পক্ষে একটি করে গোল করেন নাথান আকে, নঁদি মিকিয়েলে, রিয়াদ মাহরেজ, জ্যাক গ্রিলিশ, জোয়াও কানসেলো ও গাব্রিয়েল জেসুস।
আর লাইপজিগের হয়ে তিনটি গোলই ফরাসি মিডফিল্ডার এনকুকুর। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। আর এই প্রতিযোগিতায় সিটির বিপক্ষে করলেন মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে প্রথমটি করেছিলেন ওই সময়ে বার্সেলোনায় খেলা লিওনেল মেসি।
মিলান রোমাঞ্চ জিতল লিভারপুল
নিজেদের ভুলে শুরুতে পিছিয়ে পড়া এসি মিলান বিরতির আগে তিন মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে জমিয়ে তুলল লড়াই। কিন্তু আট বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফেরা ইতালিয়ান দলটি ব্যবধান ধরে রাখতে পারল না। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নিল লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে ‘বি’ গ্রæপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।
চোটের কারণে তারকা ফরোয়ার্ড জøাতান ইব্রাহিমোভিচকে পায়নি মিলান। সেই সুযোগে পুরো ম্যাচে বল দখলে এগিয়ে থেকে আক্রমণে আধিপত্য করা লিভারপুল গোলের জন্য শট নেয় মোট ২৩টি, যার ৮টি লক্ষ্যে। মিলানের ৭ শটের ৪টি লক্ষ্যে ছিল। তবে আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ার পর রেবিচ ও ব্রাহিম দিয়াসের গোলে এগিয়ে যায় মিলান। প্রথমার্ধে পেনাল্টি মিস করা মোহামেদ সালাহ টানেন সমতা। পরে স্বাগতিকদের জয়সূচক গোলটি করেন জর্ডান হেন্ডারসন। গ্রæপের আরেক ম্যাচে গোলশ‚ন্য ড্র করেছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও পোর্তো।
ইন্টারে রিয়ালের স্বস্তি
ম্যাচের প্রথমার্ধে একচেটিয়া আধিপত্যের পর দ্বিতীয় ভাগেও কিছুটা সময় চাপ ধরে রাখল ইন্টার মিলান। কিন্তু ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতায় কাক্সিক্ষত জালের দেখা তারা পেল না। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধে শেষ ভাগে জ্বলে ওঠা রিয়াল মাদ্রিদ অন্তিম সময়ের গোলে তুলে নিল অসাধারণ এক জয়। সান সিরোয় ‘ডি’ গ্রæপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে কার্লো আনচেলত্তির দল। জমজমাট লড়াইয়ে ব্যবধান গড়ে দেন বদলি নামা রদ্রিগো।
টানা তিন আসরে গ্রæপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার হতাশা পেছনে ফেলার ঘোষণা দেওয়া সিমোনো ইনজাগির দল বিরতির আগে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দেয়। এ সময় গোলের উদ্দেশে তারা ১৪টি শট নেয়, যার চারটি ছিল লক্ষ্যে। ইন্টারের আক্রমণে একরকম কোণঠাসাই ছিল রিয়াল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর সুবিধা করতে পারেনি স্বাগতিকরা। এই অর্ধে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করে রিয়াল। প্রথমার্ধে পাঁচটি শট নেওয়া দলটি এই ভাগে নেয় আরও সাতটি, এর দুটি ছিল লক্ষ্যে।
গ্রæপের আরেক ম্যাচে মলডোভার ক্লাব শেরিফ তিরাসপুলের মাঠে ২-০ গোলে হেরে গেছে ইউক্রেনের শাখতার দোনেৎস্ক।
অভিষেকে ৪ গোলে ইতিহাস
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন নিজ দলের সমর্থকদের কাছ থেকেই দুয়ো শুনতে হয়েছিল। ইতিহাস গড়েই যেন তার জবাব দিলেন আয়াক্স ফরোয়ার্ড সিবাস্তিয়া আলেয়া। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিষেকেই চার গোল করে জানালেন, তিনি সবসময় এমন একটি ম্যাচের স্বপ্ন দেখতেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেকে চার গোল করলেন সিবাস্তিয়া। প্রতিযোগিতাটির অভিষেকে প্রথম চার গোল করার কীর্তি গড়েছিলেন নেদারল্যান্ডসের ইতিহাসে সেরা ফুটবলারদের একজন মার্কো ফন বাস্তেন; ১৯৯২ সালে এসি মিলানের হয়ে ইয়েত্তেবরির বিপক্ষে।
পর্তুগালের ক্লাব স্পোর্তিং লিসবনের মাঠে গ্রæপ পর্বের প্রথম ম্যাচে সিবাস্তিয়ার নৈপুণ্যে ৫-১ গোলে জেতে আয়াক্স। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ঘরোয়া লিগে চার ম্যাচে চার গোল করেছেন সিবাস্তিয়া। আর ইউরোপ সেরার মঞ্চে শুরুর ম্যাচেই করলেন চার গোল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।