গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ছয় জন। তাদের মধ্যে যাত্রাবাড়ী শেখদী পশ্চিম পাড়া এলাকায় মো. মাসুদ নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী বিলকিস আক্তারকে আটক করেছে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে একটার দিকে ওই যুবককে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাড়ির মালিক জাহিদ হাসান বলেন, মাসুদের স্ত্রী বাসার ছাদে কাপড় নাড়তে যায়। সে এসে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করলেও মাসুদ ভেতর থেকে দরজা খুলে না। তার স্ত্রী আমাদের ডাক দিলে আমরা দরজা ভেঙে দেখি সে (মাসুদ) গলায় গামছা দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। তাকে নামিয়ে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, ৪ মাস আগে সে বিলকিস আক্তারকে বিয়ে করে। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে। আরেক বউ গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে থাকে। সে অন্বেষা নামক কোম্পানিতে চাকরি করত।
যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মনিষ ঘোষ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি। তবে কী কারণে ওই যুবক গলায় ফাঁস দিয়েছে সেটি জানতে পারিনি। পরে আমরা তার স্ত্রীকে সিনিয়র স্যারদের নির্দেশনায় থানায় নিয়ে এসেছি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
একই দিন রবিবার সকালে কামরাঙ্গীরচরের বড়াইগ্রাম এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে বিষপানে শুভ তারা নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন।
নিহতের দেবর ছানোয়ার বলেন, আমার বড় ভাই দেলোয়ারের সঙ্গে সকালে পারিবারিক কলহ হয়। ভাবী ইদুর মারার ওষুধ খেলে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া রবিবার সকালে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জাহিদুল ইসলাম নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেশী ইমন বলেন, সকালে নিমতলী চৌরাস্তার ইবাদত ক্যালেন্ডারের কারখানায় কাজ করার সময় কারখানার শ্রমিক জাহিদুল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার গ্রামের বাড়ী পটুয়াখালী জেলা। তার বাবার নাম জাকির হোসেন।
এদিকে, মহাখালীতে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় কাওছার আহমেদ নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী মারা গেছেন। কাওছার মহাখালী বাস টার্মিনালে একটি পরিবহনের টিকিট মাস্টার হিসেবে কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। সে পরিবার নিয়ে পূর্ব নাখালপাড়া এলাকায় থাকতেন।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এসআই খগেন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, শনিবার দিনগত রাতে মহাখালী সিকদার ফিলিং স্টেশন সামনের রাস্তায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। একটি কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় কাউছার। তার সঙ্গে থাকা অপর একজন আহত হয়েছে। তার নাম ঠিকানা এখনও জানা যায়নি।
অপরদিকে আজমপুর ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় নারীসহ দু’জন নিহত হয়েছেন।
রবিবার সকালে পৃথক স্থানে ট্রেনের ধাক্কায় তারা নিহত হন। নিহতরা হলেন- গৃহকর্মী সামিয়া বেগম ও অপরজনের নাম জানতে পারেনি পুলিশ। তার বয়স আনুমানিক (৬৫) হবে।
বিমানবন্দর রেলস্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) আলী আকবর জানান, সকালে উত্তরা আজমপুর রেলগেট অতিক্রম করার সময় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান গৃহকর্মী সামিয়া বেগম। সামিয়া ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার নুরুল ইসলামের মেয়ে। বর্তমানে উত্তরা এলাকায় বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন।
আলী আকবর জানান, এদিকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় রেললাইনে যেকোনো ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি মারা যান। নিহতের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি। শনাক্তের জন্য তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। তার পরনে সাদা আকাশি রংয়ের ফুল শার্ট ও জলপাই রঙের ফুল প্যান্ট ছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।