Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঐক্যের ডাক দিলেন বাইডেন

২০ বছরেও সন্দেহভাজন ৫ পরিকল্পনাকারীর বিচার হয়নি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০২ এএম

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় নিহতদের স্মরণের প্রস্তুতির প্রাক্কালে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলার ২০তম বার্ষিকীর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে প্রাণ হারানো দুই হাজার ৯৭৭ জনকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। হামলায় সাড়া দেওয়া জরুরি কর্মীদের কথা বলতে গিয়ে বাইডেন বলেন, ‘আমরা সেই সকল নিহতদের সম্মান জানাই যারা মিনিট, ঘণ্টা, মাস এবং বছর পরে তাদের জীবন ঝুঁকি নিয়েছেন এবং জীবন দিয়েছেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা।’ শনিবার নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৯/১১ হামলায় হতাহতদের স্মরণ করেন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারা। প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কত সময় পার হয়েছে সেটা বিষয় নয়, এইসব স্মরণ আয়োজন সবকিছু ব্যথাতুরভাবে মনে করিয়ে দেয়, যেন কয়েক সেকেন্ড আগেই এগুলো ঘটেছে।’ এই দিন উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট বাইডেন শনিবার স্মরণসভায় নেতৃত্ব দেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের সাথে তিনটি আক্রমণস্থল পরিদর্শন করেন। সেখানে দুটি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টাওয়ারে আঘাত হানার এবং পতনের সময়গুলির সাথে মিল রেখে ছয় মিনিটের নীরবতাও পালন করা হয়। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের আল-কায়েদার পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের চারটি যাত্রীবাহি বিমান ছিনতাই করে আত্মঘাতী হামলাকারীরা। এর মধ্যে দুইটি নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আরেকটি বিমান পেন্টাগনে বিস্ফোরিত হয়। আর চতুর্থ বিমানটির যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে পেনসিলভানিয়ার একটি মাঠে বিস্ফোরিত হয়। নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, ভার্জিনিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদরদপ্তরে হামলার ২০ বছর পার হলেও এর ছক কষা ও পরে বাস্তবায়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৫ সন্দেহভাজনের বিচারপূর্ব শুনানিই এখনো শেষ হয়নি। কিউবার গুয়ানতানামো বে’র সুরক্ষিত সামরিক আদালতকক্ষে ৯ বছর ধরে মামলাটি চলছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দেড় বছর পর গত সপ্তাহ থেকে সশরীরে উপস্থিত শুনানির কার্যক্রম ফের শুরু হয়েছে। কিন্তু কবে যে এই পর্ব শেষ হবে, তার সদুত্তর নেই কারও কাছেই। কর্মকর্তা বদল, আদালতে অনিষ্পন্ন অবস্থায় পড়ে থাকা কয়েকডজন ইস্যু- এসবের মাঝে ২০ বছর আগের ১১ সেপ্টেম্বরে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত প্রায় তিন হাজার মানুষের পরিবারের সদস্যদের ন্যায়বিচার পাওয়ার আকুতি আটকা পড়ে আছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিএনএন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর সশরীরে উপস্থিত শুনানির প্রথম সপ্তাহের বেশিরভাগ সময়ুজুড়ে দুই পক্ষের আইনজীবীরাই মামলার দায়িত্বে আসা সর্বশেষ বিচারকের অভিজ্ঞতা এবং হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুদন্ডের সাজাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন করে সময় কাটিয়েছেন। সপ্তাহের শেষ শুনানির দিন শুক্রবার অবশ্য তারা অনিষ্পন্ন একটি বিষয় নিয়ে তর্ক বিতর্কে অংশ নিয়েছেন। ‘ব্ল্যাক সাইটস’ নামে পরিচিত সিআইএর বিভিন্ন গোপন আস্তানায় বন্দিদের আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মার্কিন সরকারের কাছ থেকে কী পরিমাণ তথ্য পাবেন, তা নিয়েই আদালতে এই ‘মোশন’ চলছে। যে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এই শুনানি চলছে, তাদের মধ্যে খালিদ শেখ মোহাম্মদও আছেন, যাকে বলা হয় ৯/১১ হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’। সিআইএ-র গোপন আস্তানায় ব্যাপক নির্যাতনের ফলে ৫ সন্দেহভাজনই নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলে অভিযোগ তাদের আইনজীবীদের। বারাক ওবামা প্রশাসনের আমলে, ২০১২ সালে এই ৫ জনকে প্রথম আদালতে তোলা হয়েছিল। এরপর বাদি ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর তালিকায় কয়েকদফা পরিবর্তন এসেছে। কেবল তাই নয়, বিচারকও বদলেছে কয়েকবার। এখন দায়িত্বে আসা কর্নেল ম্যাথু ম্যাককলের আগে আরও তিনজন সশরীরে শুনানিতে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সামরিক কমিশনে মামলা চলায় এখানে নির্ধারিত সময়ের জন্য বিচারকদের নিয়োগ দেওয়া হয়, বিচারক নিয়োগ দেয় সামরিক বাহিনী। বিচারকদের সামরিক বাহিনীর সদস্যও হতে হয়। ম্যাককল মার্কিন বিমান বাহিনীর সদস্য। তাকে গত বছরের অক্টোবরে প্রথম এ মামলায় বিচারক করা হয়েছিল। সামরিক কমিশনে বিচারকের দায়িত্ব পালন করতে দুই বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন; তা না থাকায় আইনজীবীরা সেসময় তার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুললে ম্যাককল নিজেকে সরিয়ে নেন। বিচারক হিসেবে ২ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জিত হওয়ার পর চলতি বছরের অগাস্টে সামরিক বাহিনী তাকে ফের এই মামলার দায়িত্ব দেয়। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ