Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাদ্রাসায় শিশু হত্যার ঘটনা: বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৬:৪৩ পিএম

পটুয়াখালীর বাউফলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কর্তৃক শিশু শিক্ষার্থীকে আঘাত করে গুরুতর জখম পরবর্তী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট পটুয়াখালীর ২য় আমলী আদালতে অভিযোগ দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ দিনের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাউফল থানায় এ সংক্রান্ত কোন মামলা হয়েছে কিনা তা আদালতকে অবহিত করতে যে আদেশ দিয়েছিলেন তার জবাবে বাউফল থানায় এ সংক্রান্ত কোন মামলা হয়নি বলে আজ লিখিত জবাব জমা দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

এদিকে দ্বিতীয় আমলী আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো: জামাল হোসেন ,পটুয়াখালীর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আজ মামলার শুনানীর নির্ধারিত দিনে শিশু আরাফাতকে হত্যার দায়ে কোর্টে দায়েরকৃত হত্যা মামলাটি সরাসরি বাউফল থানা কর্তৃপক্ষকে এজাহার রুজুর নির্দেশ সহ তিন দিনের মধ্যে কেন এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোন অপমৃত্যু মামলা গ্রহণ না করার কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালতে অভিযোগকারীর পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী এ্যাডভোকেট মো:আবদুল্লাহ আল নোমান।

উল্লেখ্য গত ২৯ আগস্ট কোর্টে দায়েরকৃত শিশু আরাফাত(৮) এর পিতা মো:হাসান প্যাদার মামলার বিবরণে প্রকাশ, বাউফলের আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের টমটম চালক হাসান প্যাদা তার ৮ বছরের শিশু সন্তান আরাফাতকে ৯ মাস আগে স্থানীয় কাশিপুর আল ইয়াসিন শিশু সদনে নজরানা বিভাগে পবিত্র কোরান শরীফ হেফজ্ করার উদ্দেশ্যে ভর্তি করেন। গত ২৩ আগস্ট সকালে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মো: জিকিরুল্লাহ মোবাইল ফোন দিয়ে হাসান প্যাদার পিতা নূর হোসেন প্যাদাকে জানায় যে আরাফাত হোসেন এর ডান চোখে ব্যাথার কারণে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে হাসান প্যাদা তার স্ত্রী মোসা: পারভীন বেগমকে নিয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে তাদের শিশু পুত্রকে মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলায় ফ্লোরে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে।এ সময় তারা তাদের শিশু পুত্রের অসুস্থ হওয়ার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীওবুয়াকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন আগের দিন ২২ আগস্ট বিকেলে অধ্যক্ষ মো: জিকিরুল্লাহ ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলার বাম পাশের দেয়ালে আরাফাতের মাথার ডানপাশে ধাক্কা মারে। এত শিশু আরাফাতের মাথার ডানপাশ ও ডান চোখ গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি অভিভাবকদের না জানিয়ে জিকুরুল্লাহ তার ভাই মো: কাওসারকে দিয়ে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা করায়। কিন্তু শিশু আরাফাতের অবস্থার অবনতি ঘটলে পরেরদিন তিনি তাদেরকে বিষয়টি জানান। গুরুতর অসুস্থ শিশু আরাফতকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আকার ইঙ্গিতে ও মুখে “মাথা ও হুজুর বলে কিছুক্ষণ পড়ে অচেতন হয়ে পড়ে বলে অভিযোগে করেছেন হাসান প্যাদা।

তাৎক্ষনিক শিশু আরাফাতকে নিয়ে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন হাসান প্যাদা। পরবর্তীতে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ঐদিনই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। রাত ১১ টায় শিশু আরাফাতকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।২৪ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু আরাফাত মারা যায়।২৫ আগস্ট ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বাড়ীতে এনে তাকে দাফন করা হয়।

আদালতে অভিযোগ কারী শিশু আরাফাতের পিতা মো: হাসান জানান, এ বিষয়ে বাউফল থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করতে অনীহা প্রকাশ করায় ২৯ আগস্ট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার আসামীরা হচ্ছেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মো: জিকিরুল্লাহ ও তার ভাই মো: কাওসার সহ অজ্ঞাত ৩/৪জন ।

এবিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন গত ২৯ আগস্ট জানিয়েছিলেন এঘটনায় শিশুটির পিতা ২৮ আগস্ট থানায় এসেছিল তিনি মৌখিক অভিযোগ করেছেন ,কিন্তু কোন লিখিত অভিযোগ জমা না দেয়ায় মামলা রুজু করা যায়নি।

এ বিষয়ে আজ বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন জানান,কোর্টের ২৯ আগস্টের নির্দেশ মোতাবেক লিখিত জবাব কোর্টে জমা দিয়েছি। আজ কোর্টের অন্য কোন আদেশ এখনো পাইনি, কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী আইনগত: ব্যবস্থা নেয়া হবে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পটুয়াখালী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ