বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুমিল্লার দেবিদ্বারে কিশোরী ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর মায়ের কাছ থেকে ঘুষ দাবি করা একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত এসআই ওমর ফারুককে স্বাভাবিক বদলি দেখিয়ে দেবিদ্বার থেকে প্রত্যাহার করে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়েছে।
দেবিদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া থানার সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আমির উল্লাহ ও দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ধর্ষণচেষ্টা মামলাটি তুলে না নেওয়ায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরী, ও তার মা-বাবাকে টেনে-হিঁচড়ে ঘর থেকে ধরে এনে সড়কে ফেলে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করে নির্যাতন করে আসামিরা। এ দুইটি ঘটনারই তদন্ত করছিলেন এসআই ওমর ফারুক।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজে ভুক্তভোগী কিশোরীর মাকে ওই পুলিশ সদস্যের কাছে অভিযোগ করতে দেখা যায়। সেখানে তিনি ওই পুলিশ সদস্যকে বলেন, “ধর্ষণচেষ্টাকারীরা মামলা তুলে নিতে বারবার মারধর করছে আমাকে। আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই। হয় আসামি ধরেন, না হয় মামলাটি রেফার করেন।”
কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুক কোনোটিই করেননি, ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তার কাছে গেলেই তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের টাকা লাগবে।” তদন্তের কাজে ৩ বার আসলে প্রত্যেকবারই চার, তিন এবং আড়াই হাজার টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করে ওই পুলিশ কর্মকর্তা, বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া, ওই পরিবারের কাছ থেকে আরো ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই ওমর ফারুক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার (৩০ আগস্ট) দেবিদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া থানার সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আমির উল্লাহ ও দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, "কিশোরী ধর্ষণচেষ্টা মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই ওমর ফারুককে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়নি, এটা স্বাভাবিক বদলি। জেলা পুলিশ সুপারের মৌখিক নির্দেশে তাকে পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়।"
তবে গত শনিবার (২৮ আগস্ট) রাতে তাৎক্ষণিক বদলির বিষয়ে একটি চিঠি কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় হতে দেবিদ্বার থানায় আসে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা। প্রত্যাহার হওয়া এসআই ওমর ফারুক নিজেই বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ গ্রামে ধর্ষণচেষ্টার মামলা তুলে নিতে অভিযুক্ত হাসান এবং বড় ভাই কাউছার আহম্মেদসহ অন্যান্য আসামিরা ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার মা-বাবাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করেন। লাঠিপেটার সময় ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে নির্যাতনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাতে দেবিদ্বার থানায় হাসান, ভাই কাউছার, বাবা নুরুল ইসলাম, মোস্তফা কামালসহ আটজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে কিশোরীর বাবা। গত শুক্রবার জেলার বিভিন্ন জায়গায় র্যাব-পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করলেও এ ঘটনার মূল আসামি কাউছার ও হাসানকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।