মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তানে তালেবান সরকারে সব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব থাকছে কি না, তা দেখেই ভারত ঠিক করবে, তাদের ভারত স্বীকৃতি দেবে কি না। ওই সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কী হবে, তা-ও এই মাপকাঠির ভিত্তিতে ঠিক হবে বলেই আপাতত ইঙ্গিত দিয়েছে মোদি সরকার।
তালেবানের ক্ষমতা দখলের পরে ভারতের সামনে প্রশ্ন, আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে ভারত কি স্বীকৃতি দেবে? আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট করেছেন, এ বিষয়ে নয়াদিল্লি অন্যান্য দেশের মতোই ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’ পলিসি নিয়েই চলছে। তার মন্তব্য, ‘কাবুলের পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত ভবিষ্যতের নীতি সম্পর্কে ধৈর্য ধরতে হবে।’
বৈঠকে বিরোধী নেতারা প্রশ্ন করেছিলেন, ভারত কি আফগানিস্তানের প্রশ্নে একঘরে বা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে? সূত্রের খবর, জয়শঙ্কর দাবি করেন, ভারত মোটেই বিচ্ছিন্ন নয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের পরিচালনাতেই আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের পরে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মঞ্চ বা আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমাদের স্বার্থ, কূটনীতি, ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। আমরা নিয়মিত সহযোগী দেশগুলির সঙ্গে কথা বলছি।’ গত তিন দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে কথা বলেছেন। জয়শঙ্কর জানান, আগামী কয়েক দিনে প্রধানমন্ত্রী আরও কয়েক জন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলবেন। তার সঙ্গেও বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা হবে।
আফগানিস্তানে পট পরিবর্তনের পরে ভারত এখনও পর্যন্ত তালেবানের সমালোচনা করেনি। জয়শঙ্কর বৈঠকে জানান, দোহায় আমেরিকা ও তালেবানের মধ্যে ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর’ নিয়ে যে চুক্তি হয়েছিল, তালেবান তার সমস্ত ধারা রক্ষা করছে না। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পরে ভারত আফগানিস্তানের মাটিতে হক্কানি নেটওয়ার্ক, লস্কর, জইশের মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সক্রিয়তা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, মহিলাদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তালেবান সরকারে সমস্ত গোষ্ঠী-সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বের উপরেও জোর দিয়েছিল।
বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, তালেবান সরকার গঠিত হলে এ সব ক্ষেত্রে ভারতের নজর থাকবে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘ঘটনাপ্রবাহ অনুযায়ী ভারতের উপস্থিতি, কার্যকলাপ ঠিক হবে।’ সরকারের কথা শুনে বিরোধী নেতারা মনে করছেন, তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও সরকার যে যোগাযোগ তৈরি করছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে। তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে অবস্থান স্পষ্ট না হলেও বিদেশ মন্ত্রক বোঝাতে চেয়েছে, ভারত তালেবান সরকার ও আফগানিস্তানের মানুষকে আলাদা ভাবে দেখছে। জয়শঙ্কর বলেন, আফগানিস্তানের ভারত ৫০০টির বেশি প্রকল্পে কাজ করেছে। তা ওই দেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বের প্রমাণ। তার সুফল মিলবে। তবে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, ৩০০ কোটি ডলার খরচ করে ভারতের তৈরি প্রকল্পের সুরক্ষার কী হবে?
জয়শঙ্কর জানান, এখন সরকারের অগ্রাধিকার, আফগানিস্তান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করে আনা। এ বিষয়ে সব দলই সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তিনি বলেন, অধিকাংশ ভারতীয়কে উদ্ধার করা গেলেও এখনও অনেকেই আটকে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ৫৬৫ জনকে উদ্ধার করা হলেও, আরও কত জনকে উদ্ধার করা বাকি, সেই সংখ্যা সরকার জানায়নি। তৃণমূলের তরফে সুখেন্দুশেখর রায় ও সৌগত রায় আফগানিস্তানে আটকে থাকা ১২৫ জন রাজ্যবাসীর তালিকা কেন্দ্রকে দেয়া হয়েছে। কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে, অধীর চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, ৩১ আগস্ট আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পরেও কোনও ভারতীয় আটকে থাকলে, তাদের কী ভাবে উদ্ধার করা হবে? সূত্রের খবর, এটি যে চিন্তার বিষয়, তা সরকার মেনে নিয়েছে। উদ্ধারের ক্ষেত্রে সমস্যার উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, কাবুল ছাড়া অন্যান্য শহরে যে সব ভারতীয় রয়েছেন, তাদের কাবুলে নিয়ে আসতেই সমস্যা হচ্ছে। তবে জয়শঙ্করের আশ্বাস, ‘সবাইকে ফিরিয়ে আমরা দায়বদ্ধ।’
সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি নেতারা এ বিষয়ে অবশ্য সরকারের প্রস্তুতি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তাদের যুক্তি ছিল, আমেরিকা সেনা প্রত্যাহারের কথা আগেভাগে জানিয়ে দিলেও মোদি সরকার আগাম প্রস্তুতি নেয়নি। সেনা প্রত্যাহারের দিনক্ষণ এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকা ভারতকে জানিয়েছিল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। চীন যে পাকিস্তানের ‘পিঠে সওয়ার’ হয়ে আফগানিস্তানে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছে, সে বিষয়ে সরকারের নীতি কী, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। বামেদের অভিযোগ, সরকার এর উত্তর দেয়নি। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।