Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

গলাচিপায় ধরা পড়েছে ১০৭ কেজি ওজনের দুটি গোল পাতা মাছ

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০২১, ৬:৪৭ পিএম | আপডেট : ৮:০৮ পিএম, ২০ আগস্ট, ২০২১

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় জালে ধরা পড়েছে ১০৭ কেজি ওজনের দুটি গভীর সাগরের মাছ। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এটি গোলপাতা মাছ নামে পরিচিত। একটি মাছের ওজন ৫৭ কেজি ও অন্যটির ৫০ কেজি। উপজেলার গোলখালী গ্রামের সাগর মাঝি নামে এক মাছ ব্যবসায়ী গতকাল বিকেলে মাছ দুটি গলাচিপা শহরে নিয়ে আসেন।

তিনি জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরের পাশে রামনাবাদ নদীতে মাছ দুটি ধরা পড়েছে। পাঁচ হাজার টাকা মাছ দুটি গলাচিপা বাজারের বরফ ব্যবসায়ী লিকন তালুকদার কিনে নেন।

গলাচিপা মাছ বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি চুন্নু মৃধা জানান, বাজারে এর আগেও গোলপাতা মাছ এসেছে,তবে এত বড় মাছ কখনো দেখিনি। মাছ দুটি দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করে।

মৎস্য অধিদপ্তর বরিশালের সাস্টেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট এর উপ-প্রকল্প পরিচালক মোঃ কামরুল ইসলাম ইনকিলাব কে জানান, মূলত এটা সেইল ফিস, এটার বৈজ্ঞানিক নাম Istiophorus platypterus। সেইল ফিস সমুদ্রের সবচেয়ে দ্রুতগামী মাছ, সেলফিশ প্রতি ঘন্টায় ৬৮ মাইল গতিতে পৌঁছতে পারে। এদের খাদ্যাভ্যাস মাংসাশী, একেকটির আকার ৬-১১ ফুট এবং ওজনে ১২০-২২০ পাউন্ড হয়ে থাকে। এর দুটি প্রধান উপ-প্রজাতি আটলান্টিক এবং ইন্দো-প্যাসিফিক, পৃথিবীর মহাসাগরের উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ অংশ জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। সাধারণত পানির ২১-২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানিতে এরা বাস করে। সেইল ফিস এর পেটের নীচের অংশ সাদা সাথে নীল থেকে ধূসর রঙের হয়। তারা তাদের দর্শনীয় ডোরসাল/ পিঠের পাখনা গোল পাতা আকৃতির হওয়ায় স্থানীয়ভাবে গোল পাতা মাছ নাম পায় যা তাদের দেহের প্রায় সমান দৈর্ঘ্য প্রসারিত করে এবং তাদের দেহ মোটা হওয়ার চেয়ে অনেক বেশি পাতলা ও লম্বাটে। তারা বিলফিশ অর্থাৎ এরা শিকারী মাছ পরিবারের সদস্য। এদের উপরের চোয়াল আছে যা তাদের নিম্ন চোয়ালের বাইরে ভালভাবে বেরিয়ে আসে এবং একটি স্বতন্ত্র বর্শা গঠন করে যার দ্বারা এরা মাছ শিকার করে খায়। এগুলি সাগরের পৃষ্ঠের কাছাকাছি পাওয়া যায় সাধারণত সার্ডিন এবং অ্যাঙ্কোভিসের মতো ছোট মাছ শিকার করে। তারা স্কুইড এবং অক্টোপাসও শিকার করে খায়।

ইদানিং বাংলাদেশের সাগর জলসীমায় স্থানীয় নামের গোলপাতা মাছ বা সেইল ফিস ব্যাপক ভাবে আহরিত হচ্ছে যা সন্তোষ জনক এবং এর অন্যতম কারণ বাংলাদেশ সরকারের সমুদ্র ব্যবস্থাপনার ইতিবাচক ভূমিকা। বিশেষ করে সাগরে ৬৫ দিনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করায় সামুদ্রিক মৎস্য প্রজাতির বা সাগরের জলজ প্রাণীর জীবৈচিত্রতার উন্নয়ন হয়েছে। আহরিত সেইল ফিস আগের দিনে শুটকি করা হতো; বর্তমান সময়ে তাজা মাছ খাদ্য হিসেবে ধীরে ধীরে সমাদৃত হচ্ছে যা কাঙ্ক্ষিত ও নতুন জাতের বাজার সৃষ্টির হাতছানি। সেইল ফিস খুব মজাদার না হলেও এর মধ্যে খাদ্যগুণ উন্নত কারণ সামুদ্রিক হওয়ায় এই মাছের দেহে মানব দেহের জন্য উপকারী খাদ্য উপাদান বিদ্যমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পটুয়াখালী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ