পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০০৯ সালে আফগানিস্তানের জন্য বিশেষ প্রতিনিধি প্রয়াত রিচার্ড সি. হলব্রæক তার দলের সমস্ত সদস্যকে গ্রাহাম গ্রীনের ‘দ্য কোয়ায়েট আমেরিকান’ পড়ার জন্য জোর দিয়েছিলেন। উপন্যাসটিতে সদ্ভাবাপন্ন এবং আদর্শবাদী মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা অ্যালডেন পাইল ভিয়েতনামে ফরাসি ঔপনিবেশিক যুদ্ধের তিক্ত বাস্তবতার মুখোমুখি হন, যখন তিনি দেশটির জটিল সমাজ ব্যবস্থায় সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা শুরু করেন। গ্রীন তার বিদ্রুপকারী সাংবাদিক বর্ণনাকারীর মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমি কখনই এমন ব্যক্তিকে জানা নেই যার শ্রেয় উদ্দেশ্যগুলো সমস্ত সমস্যার পত্তন করেছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৮ জুলাই বলেছিলেন যে, আফগান সরকারের পতনের সম্ভাবনা নেই এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধের সমাপ্তির মতো আমেরিকানদের কোনো বিশৃঙ্খল প্রস্থান হবে না। প্রবীণ মার্কিন যোদ্ধারা বলছেন যে, তারা এখন মনে করেন যে তারা বিনা কারণেই আত্মত্যাগ করেছিলেন। তাদের কাছে এটি এমন একটি সমাপ্তি, যা ভিয়েতনামের পর সশস্ত্র বাহিনীর মনে গেঁথে থাকবে।
গেল গ্রীষ্মে আমেরিকান গুপ্তচর সংস্থাগুলোর গুপ্ত প্রদিবেদনগুলো আফগানিস্তানের তালেবানদের দখল নেওয়ার সম্ভাবনার ক্রমবর্ধমান ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে এবং আফগান সামরিক বাহিনীর দ্রুত পতনের বিষয়ে সতর্ক করেছে। এরপরেও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার উপদেষ্টারা প্রকাশ্যে বলেছেন যে, সমসাই এমনটি ঘটার সম্ভাবনা নেই।
বাইডেনের ৩০ বছরের মধ্যে যেকোনো আমেরিকান প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি পররাষ্ট্রনীতির অভিজ্ঞতা থাকতে পারে, কিন্তু প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অধীনে দায়িত্বপালনকারী প্রতিরক্ষা সচিব রবার্ট গেটস তার স্মৃতিচারণে লিখেছেন, ‘আমি মনে করি গত চার দশক ধরে তিনি প্রায় প্রতিটি বড় পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভুল করেছেন।’ যেসব আফগান নেতা দোষারোপ করেছেন দেশ ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর যারা যুদ্ধ করেনি, বাইডেন তাদের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘পতনের গতিবেগ দেখিয়েছে যে, তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাইডেন বলেন, ‘আমেরিকান সৈন্যরা এমন একটি যুদ্ধে লড়াই করতে পারে না এবং উচিত নয়, যেখানে আফগান বাহিনী নিজেদের জন্য যুদ্ধ করতে ইচ্ছুক নয়।’ সংক্ষেপে, তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, আফগানরা তাদের আমেরিকান মিত্রদের ব্যর্থ করে দিয়েছে।
ট্রাম্পসহ রিপাবলিকানরাও বলেছেন যে, জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে নিরাপদ প্রস্থানের সুযোগকে ভন্ডুল করে দিয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসন ২০২০ সালে তালেবানদের সঙ্গে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, তার মধ্যে এই বছর মে মাসের মধ্যে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের শর্ত উল্লেখিত ছিল। পাকিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রদ‚ত ক্যামেরন মুন্টার বলেন, ‘আমার কোন সন্দেহ নেই যে এটি বাইডেনের জন্য একটি বিশাল দায় হবে, এমনকি ট্রাম্প তাকে বাক্সবন্দী করলেও।’
তবে, ১৫ আগস্ট ‘ফক্স নিউজ সানডে উইথ ক্রিস ওয়ালেস’-এ উপস্থিত হয়ে মাইক পম্পেও আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে দোষারোপ করেন এবং তাকে তার নিজের লোকের সাথে কথা বলার চেয়ে আমেরিকান অর্থ সংগ্রহে বেশি আগ্রহী বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমেরিকান সশস্ত্র বাহিনী আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে দুই দশক ধরে ব্যর্থ হয়েছে।’
আফগানিস্তান থেকে সরে আসা, ইরাক যুদ্ধে সমর্থন এবং ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার অভিযানের বিরোধিতা সহ বাইডেনের সিদ্ধান্তগুলো ইতিহাসে ভুল হিসেবে যুক্ত করা হবে কিনা, এবং তা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে বাইডেনের আসার সম্ভবনা রাখবে কিনা, তা জানা খুব শিগগিরই।
তবে, আপতত, আমেরিকান প্রতিশ্রুতির প্রায় ২০ বছর পর আফগানিস্তানকে তালেবান শাসনের জন্য ছেড়ে দেয়া, উড়ন্ত জেটগুলো আঁকড়ে দেশত্যাগ করে আফগানদের বাঁচতে চাওয়া এবং তারপর তাদের মৃত্যুর মুখে খসে পড়ার ছবিগুলো ১৯৭৫ সালে ভিয়েতনাম থেকে মার্কিন প্রস্থানের দুর্বিষহ অতীতকে স্মরণ করিয়ে দেয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের মহা পরাক্রমশীলতা এবং বাইডেনের ‘আমেরিকা ফিরে এসেছে।’ দাবিকে উপহাস করে।
দুটি রিপাবলিকান এবং দুটি ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট, ২৪শ’রও বেশি নিহত আমেরিকান এবং আফগানিস্তানের পরিবর্তনে ব্যয়কৃত ১ ট্রিলিয়ন ডলার আফগানিস্তানে তালেবানদের নির্মূল করতে ব্যর্থতা এবং এর মধ্যে চীনকে গূরুত্ব দিয়ে আফগানিস্তানের অগ্রাধিকার বলছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান আপেক্ষিক শক্তি ২০ বছর আগের মতো আর নেই। আাফগানিস্তানের জন্য চড়া মূল্য দিতে হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রকে।
বাইডেন বলেছেন যে, আফগানিস্তান থেকে আবার আমেরিকার জন্য কোন সন্ত্রাসী হুমকি দেখা দেয় কিনা সে বিষয়ের ওপর নির্ভর করে তার বিচার হবে। তার সহযোগীরা জোর দিয়ে বলেছেন যে, ৯/১১ হামলার পর থেকে সামরিক বুদ্ধিমত্তা, কৌশল এবং সক্ষমতার অগ্রগতির অর্থ হল যে, আমেরিকান বাহিনী যেকোনো বিপদকে আগে থেকে মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে। ভবিষ্যতে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে পাকিস্তানের সম্ভাব্য অসহযোগিতার পাশাপাশি, তালেবানদের হামলার প‚র্বাভাস দিতে আমেরিকান গোয়েন্দাদের স্পষ্ট ব্যর্থতায় এখন প্রশ্নবিদ্ধ তাদের এই আশ্বাসকে। সূত্র: দ্য ইকোনোমিস্ট, নিউ ইয়র্ক টাইম্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।