Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আফগানিস্তানে সাতটি সিএইচ-৪৬ হেলিকপ্টার পরিত্যাগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৩ এএম

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর নিশ্চিত করেছে যে, চলমান সেনা প্রত্যাহারের অংশ হিসেবে সাতটি সিএইচ-৪৬ই সি নাইট হেলিকপ্টার, যা ‘ফ্রোগস’ নামেও পরিচিত, আফগানিস্তানে অকার্যকর এবং পরিত্যক্ত হয়েছে। এই প্রত্যাহার অভিযান, মার্কিন সেনাবাহিনীর অন্তর্গত যে কোন সি নাইটের জন্য সর্বশেষ বড় মিশন হতে পারে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট ইতিমধ্যেই এই হেলিকপ্টারের পুরো বহর অবসরে পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

উপরন্তু, পেন্টাগন বলছে যে এই এই মিশন আমেরিকান সামরিক ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম হতে পারে, অন্যটি ছিল ১৯৭৫ সালে দক্ষিণ ভিয়েতনাম থেকে আমেরিকানদের এবং অন্যদের সরিয়ে নেয়া। ওয়ার জোন ইতিমধ্যেই রিপোর্ট করেছে, এমন প্রমাণ আছে যে অন্তত একটি সী নাইটস, যেটি মূলত মার্কিন মেরিন কর্পস থেকে সেকেন্ড হ্যান্ড পেয়েছিল আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী, সেটি উভয় অপারেশনে অংশ নেয়ার পর এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন কর্মকর্তা দ্য ওয়ার জোনকে বলেন, ‘তারা আফগানিস্তানে সাতটি সিএইচ-৪৬ হেলিকপ্টার রেখে এসেছে, যা অকার্যকর ছিল।’ তিনি বলেন, ‘এই হেলিকপ্টারগুলো ইতিমধ্যেই বিভাগীয় তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে বেরিয়ে আসছে এবং বয়স ও সমর্থনযোগ্যতার কারণে শেষ পর্যন্ত বাতিল করে দেয়ার জন্য নির্ধারিত হয়েছিল।’

সেই একই ব্যক্তি এটাও নিশ্চিত করেছেন যে, আফগানিস্তানে স্টেট ডিপার্টমেন্টের এয়ার উইং, আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্য ব্যুরো এবং আইন প্রয়োগকারী বিষয়ক অফিস অথবা আইএনএল/এ -এর অন্য কোনো বিমান নেই। এর মানে হল যে সাবেক ইউ.এস. এয়ার উইং-এর অন্তর্গত এইচএইচ-৬০এল ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারগুলো যা এই বছরের শুরুতে কাবুলে পাঠানো হয়েছিল তা এখন প্রত্যাহার করা হয়েছে। এয়ার উইং-এর ইনভেন্টরিতে এখনও কতগুলো সিএইচ-৪৬ আছে বা কতগুলো আসলে উড়তে পারে তা স্পষ্ট নয়। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) রেকর্ড দেখায় ২টি সি নাইটস কপ্টার আছে বলে স্টেট ডিপার্টমেন্টে নিবন্ধিত রয়েছে। ২০১৮ সালেও হেলিকপ্টারগুলো সেখানে ছিল।

১৫ আগস্ট, ২০২১ তারিখে, যখন তালেবানরা কাবুলে প্রবেশ করে, মার্কিন ক‚টনীতিক কর্মীদের দূতাবাস থেকে বিমানবন্দরে নেয়া হয় আফগানিস্তান ত্যাগের জন্য, তখন তাদের সাহায্য করতে পররাষ্ট্র দফতরের হেলিকপ্টারগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। এরপরে সেগুলো কি করা হয়েছিল, তা ব্যবহারযোগ্য রয়েছে কিনা সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। নির্বিশেষে, হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখন মার্কিন সামরিক বাহিনীর উচ্ছেদ অভিযানের পাশাপাশি অন্যান্য বিদেশী সামরিক বাহিনীর দ্বারা পরিচালিত জোটের মধ্যে রূপান্তরিত হয়েছে। ইউএস আর্মি জেনারেল মার্ক মিলি, জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান, এ বিষয়ে বলেন যে, বর্তমানে, মার্কিন বিমান বাহিনী বিমানবন্দর থেকে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২০টি সি-১৭এ গ্লোবমাস্টার বিমান পরিচালনা করছে। হাজার হাজার আমেরিকান সৈন্য, সেইসাথে অন্যান্য বিদেশী বাহিনী, নিরাপত্তা প্রদান এবং অন্যথায় মিশনে সাহায্য করার জন্য এগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে।

মার্কিন সরকারের কন্টিনজেন্সি প্ল্যানিং এবং গোয়েন্দা মূল্যায়নের সত্যিকারের বিষয়ে ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন রয়ে গেছে। যার ফলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সীমিত সীমার মধ্যে সকল কার্যক্রম একত্রে পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অথচ কাবুলের উত্তরে বাগরাম বিমান ঘাঁটি রয়েছে, যা তাদের সামর্থ্যকে বৃহত্তর এবং আরো সুরক্ষিত করতে পারত। মার্কিন সামরিক বাহিনী জুলাই মাসে অত্যন্ত বিতর্কিত পরিস্থিতিতে বাগরামকে তৎকালীন আফগান সরকারের কাছে হস্তান্তর করে।

সিএইচ-৪৬ই হেলিকপ্টারগুলো সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মন্তব্যগুলো থেকে এটা নিশ্চিত যে, মার্কিন সরকার আফগানিস্তানে তার উপস্থিতি শেষে মোতায়েন করা সমস্ত সামগ্রী, এমনকি বিমানও বের করে আনার পরিকল্পনা করছে না। যদি চলমান প্রত্যাহার কার্যক্রম দ্রæত বন্ধ করার হঠাৎ প্রয়োজন হয়, তবে অন্যান্য হেলিকপ্টারগুলোও সেখানে রেখে যাওয়া হতে পারে। এর ফলে সেগুলো তালেবানের হাতে পড়লে তা নিয়ে কি করা হতে পারে তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সূত্র : দ্য ড্রাইভ।



 

Show all comments
  • Kazi Arif ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৪ এএম says : 0
    ব্রিটিশ পরাজয় বরণ করছে রাশিয়া পরাজয় মেনে নিছে আমেরিকা লেচ গুটিয়ে পালিয়ে গেছে । যাদের দেশ তাঁরাই টীক করবে দেশটা কি ভাবে চলবে দালালী করে কোন লাভ নাই ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Foysal ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৫ এএম says : 0
    তবে নাইন ইলেভেন কে কেন্দ্র করে যে অভিজান চালাই আমেরিকা সেখানে তাদের উদ্দেশ্য ছিলো আফগানিস্তান, ইরাকের এবং পরবর্ততে ইরানের তেলের দিকে। কিন্তু ইরান শক্তিশালি বিধায় সেখানে আক্রমণ করা সহজ হয়নি । যেহেতু তেলে নেয়া শেষ,, তাদের সার্থও শেষ। সেহেতু সেখানে সেনারেখে খরচ করার মত কোন যুক্তিই আসেনা তাদের। ইহুদি-খ্রিস্টানদের বুদ্ধি বোঝা খুব কঠিন।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Milon ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৫ এএম says : 0
    যুক্তরাষ্ট্রের যেগুলো প্রয়োজন ছিলো চুরি করে নিয়ে গেছে, আফগানিস্তান এখন ভিকারি হয়ে গেছে।।
    Total Reply(0) Reply
  • ইউসুফ আব্দুল্লাহ ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৫ এএম says : 0
    আফগানিস্তান যুদ্ধে আমেরিকার খরচ ৪ ট্রিলিয়ন ডলার = ৪ লক্ষ কোটি ডলার।এই পরিমাণ ডলার বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের মাঝে ভাগ করে দিলে মাথাপিছু ভাগে পাবে ২০ হাজার ডলার। অর্থাৎ প্রতিটি বাংলাদেশী ২০ × ৮৫.৩৫ = ১৭ লক্ষ ৭ হাজার টাকা ভাগে পাবে। আমেরিকা যদি যুদ্ধ না বাধিয়ে এই পরিমাণ টাকা বাংলাদেশীদেরকে দিতো তাহলে বাংলাদেশে কোন গরিব লোক থাকত না।
    Total Reply(0) Reply
  • Mofizul Islam ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৬ এএম says : 0
    সামরিক শক্তি র চেয়ে ভালোবাসার শক্তি বেশি। আমেরিকান রা এই সত্যি টা কে বিশ্বাস করেন না। তাই তাদের কে ভবিষ্যতে আরও খেসারত দিতে হতে পারে। নিজেদের কে পৃথিবীর প্রভু ভাবা বোকামি। নাইন ইলেভেনের মত আমেরিকা তে মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা ঘটাতে পারলে, আমেরিকা পৃথিবীতে সবচেয়ে অসহায় দেশ হিসেবে পর্যবসিত হবে। সন্দেহ নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Najrul Shahin ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৬ এএম says : 0
    আফগান থেকে আমরিকা যা নেয়ার এতদিনে তা নিয়েছে, সার্থ শেষ তাই তারা চলে গেছে, সহজ কথা
    Total Reply(0) Reply
  • Md Amdadul ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৬ এএম says : 0
    আমেরিকা যখন আফগানিস্তানে অন্যায়ভাবে হামলা চালায় তখন আমেরিকার হিসেব অনুযায়ী তালেবানের সংখ্যা ছিল 16 থেকে 17 হাজার আর 16 17 হাজার মানুষ ঈমান এবং ভালোবাসার জুড়ে আজ তারা তাদের শত্রুদেরকে পরাজিত করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধীনস্থ হয়েছে আমরা কাকে পরাশক্তি মনে করি আসলেই পৃথিবীতে কোন পরাশক্তি বলতে শব্দ নেই আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকেই করতে পারেন সংখ্যা এবং গোলাবারুদ কোন কিছুই কাজে আসবে না
    Total Reply(0) Reply
  • MD Robiul Islam Sani ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৬ এএম says : 0
    তালেবানদের বিজয় থেকে অনেক শিক্ষনীয় রয়েছে,, ক্ষমতা আর দাম্ভিকতা চিরদিন থাকে না। তাই আমাদের দেশকে যারা ত্রাশ এর রাজত্ব বানাতে চাচ্ছে, তাদের উচিত এখনই ঠিক হয়ে যাওয়া। না হয় এর পরিণাম অনেক ভয়াবহ হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Shada Paira ২০ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪৭ এএম says : 0
    আফগানিস্থানের জনগন আজ যে ভাবে তালেবান যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাচ্ছে তাতে তালেবানের প্রতি সে দেশের জনগনের জনপ্রিয়তা আর অগাধ ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।অন্যদিকে দীর্ঘ ২০ বছর আগে জনগনের ভালোবাসা আর মতামতকে উপেক্ষা করে এক তরফা ভাবে ওসামা বিন লাদেন ও তানেবান দমনের নামে আফগানিস্থানের লক্ষ লক্ষ মানুষ কে নির্বিচারে হত্যা করার জন্য মার্কিনি সমাজ্যবাদী শাসকদের আন্তজাতিক আদালতে বিচার করা হউক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তালেবান

১০ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ