Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

না পালালে পিটিয়েই মেরে ফেলত : গনি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৬ এএম

তালেবানের কাবুল দখলের দিনই দেশ ছেড়ে পালানো আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি নিজের দেশত্যাগের প্রশ্নে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন। ফেসবুকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, দেশে থাকলে হয় তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলতো তালিবান। অন্যথায় সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নজিবুল্লাহর মতো পরিণতি হতো তার। ল্যাম্পপোস্টে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতো তালেবান। ক্ষমতাচ্যুত এই আফগান প্রেসিডেন্ট জানান, সেদিন প্রেসিডেন্ট প্যালেসে ঢুকে রুমে রুমে তাকে খুঁজেছে তালেবান সদস্যরা। এমন পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা টিমের সদস্যরা তাকে দেশ ছাড়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে সম্পদ এবং গোপন নথিপত্র ফেলে রেখেই তিনি কাবুল ছাড়তে বাধ্য হন। চাপের মুখে দেশ ছাড়লেও আফগানিস্তানে ফেরার ইচ্ছার কথাও জানান আশরাফ গনি। কাবুল ছেড়ে পালানোর পর তিন দিনে তার অবস্থানের ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে বুধবার তাকে আশ্রয় দেওয়ার কথা জানায় সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুকে দেওয়া ভিডিও বার্তায় নিজের পালিয়ে যাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন ক্ষমতাচ্যুত এই আফগান প্রেসিডেন্ট। ভিডিও বার্তায় আশরাফ গনি বলেন, ‘ক্ষমতার লোভে কাবুলকে সিরিয়া বা ইয়েমেন হতে দেয়া যাবে না। আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। ওখানে থাকলে রক্তপাত ঘটতোই। হয় আমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলতো তালেবান। নইলে আরেক প্রেসিডেন্টকে ল্যাম্পপোস্টে ঝুলতে দেখতেন আফগানবাসী।’ আফগানিস্তানে এরইমধ্যে নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে তালেবান। এমন পরিস্থিতিতে দলটির সঙ্গে সমঝোতায় এগিয়ে এসেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। আশরাফ গণির বিরোধী হিসেবে পরিচিত আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ-ও দলটির সঙ্গে বোঝাপড়ায় নেমেছেন। হামিদ কারজাই এবং আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ! উভয়ের সঙ্গেই তিক্ত সম্পর্ক আশরাফ গনির। তবে দেশের স্বার্থে তাদের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। তার ভাষায়, ‘আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের মধ্যস্থতায় সরকার গঠনের এই প্রয়াসে আমার সমর্থন রয়েছে। আমি চাই এই প্রয়াস সফল হোক। আফগানিস্তানে ফিরতে নিজেও কথাবার্তা চালাচ্ছি, যাতে আফগানবাসী ন্যায়বিচার পান। সত্যিকারের ইসলামি ও জাতীয়তাবাদী মূল্যবোধের যেন বিজয় হয়।’ আশরাফ গনির অনুপস্থিতিতে তার সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ নিজেকে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন। তালেবানের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাতে নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। তবে আশরাফ গনি নিজে ক্ষমতায় ফেরার কোনও ইঙ্গিত দেননি। বরং কারজাই এবং আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যস্থতায় তালেবানের সরকার গঠনের প্রক্রিয়া যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন সেদিকেই জোর দিয়েছেন তিনি। তালেবানের পুনরুত্থানে যে অনিশ্চয়তা এবং আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তার জন্য নিজের সরকারের শীর্ষ আমলা এবং আন্তর্জাতিক মহলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন গণি। জানিয়েছেন, তালেবান কাবুলে ঢুকবে না, এমন চুক্তি সেরে রাখা হয়েছিল। তা সত্তে¡ও রবিবার বিকালে নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে খবর দেন যে, প্রেসিডেন্ট ভবনের ফটক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তালেবান। তার ভাষায়, ‘এটা আফগান সেনাবাহিনীর ব্যর্থতা নয়। আমার সরকারের প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের ব্যর্থতা।’ গাড়িভর্তি নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার খবরও অস্বীকার করেন গনি। তার দাবি, বিমানবন্দরে শুল্ক দফতরের কঠোর নিরাপত্তার বেড়াজাল পেরিয়ে তিনি আমিরাতে প্রবেশ করেছেন। ফলে সঙ্গে বিপুল পরিমাণ টাকা থাকলে তখন তা ধরা পড়ে যেতো। তার ভাষায়, ‘আমি শুধু পরনের কয়েকটা জামাকাপড় নিয়ে এসেছি। নিজের লাইব্রেরির একটা বই পর্যন্ত আনতে পারিনি।’ বিজনেস ইনসাইডার, এবিপি।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গনি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ