Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১৪০ দিন পরে খুলছে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র

লোকসানে বিপর্যস্ত কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল সহ ব্যবসা-বাণিজ্য

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০২১, ৯:৩২ পিএম

দ্বিতীয় দফা ১৪০ দিন পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা।সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীকাল (১৯ আগস্ট) খুলছে পর্যটন কেন্দ্র গুলি। সরকারের পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণার পর-পরই সারা দেশের পর্যটন কেন্দ্রের ন্যায় কুয়াকাটার হোটেল-মোটেলসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি ফিরে এসেছে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিয়েছেন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার। আবাসিক হোটেল-মোটেল, খাবার হোটেল, স্টেশনারি, ঝিনুক, বার্মিজ মালামাল বিক্রীর দোকানি থেকে শুরু করে কাঁকড়া ফ্রাই, বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফার, স্পিডবোট মালিক,ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক সহ সকল ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।হোটেল মোটেল সহ খাবার দোকান গুলি তাদের ধোয়া-মোছা সহ পরিচ্ছন্নতার কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছেন।

এদিকে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্রের সকল ধরনের কার্যক্রম চলমান রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটায় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন সভাপতিত্বে কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির ভার্চুয়াল সভা হয়েছে। কীভাবে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে করোনাকালীন সময়ে হোটেল-মোটেল ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখা যায় সেসব দিক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা হয়েছে। বিধি নিষেধ বজায় রাখতে সচেতনতার পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কুয়াকাটার হোটেল বনানী কমপ্লেক্সের ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান,প্রতিমাসে তাদের হোটেলে কর্মচারী বেতন সহ অন্যান্য খরচ মিলে প্রায় দেড়লাখ টাকা খরচ হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মালিকপক্ষকে ক্রমাগত: লোকসানের বোঝা টানতে হচ্ছে।কথা হয় ফোর স্টার মান সম্পন্ন কুয়াকাটার সিকদার রিসোর্ট ও ভিলার অপারেশন ম্যানেজার এমডি আলামিনের সাথে তিনি জানান, সরকার যে শর্ত দিয়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সেভাবেই পর্যটকদের বরণ করতে আমাদের এ প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের ১২ টি ভিলা এবং ৬৮ টি রুম রয়েছে।ইতোমধ্যে ৩০ ভাগ বুকিং সম্পন্ন হয়েছে,আশারাখি শুক্রবারের মধ্যে ৫০ ভাগ বুকিং হয়ে যাবে। গতবছরের এবং এবছরে একটানা ১২০ দিন বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসায়িকভাবে অনেক লোকসান হয়েছে, প্রতিমাসে আমাদের স্বাভাবিক খরচ রয়েছে ৩০ লাখ টাকা ।

কুয়াকাটার হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মো: মোতালেব শরীফ জানান, কুয়াকাটায় দেড় শতাধিক হোটেল-মোটেল রয়েছে।গত বছরের লকডাউনে এবং এবছরে একনাগাড়ে ১৪০ দিন পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় কয়েকশো কোটি টাকার লোকসান হয়েছে তাদের। এছাড়া পর্যটকদের ঘিরে কুয়াকাটার সবকিছু নির্ভর করে, সে হিসেবে লোকসানের পরিমাণ আরও কয়েকগুণ হবে। তিনি জানান গতবছরের তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-মোটেল পরিচালনার জন্য মালিক, ম্যানেজার, কর্মচারী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট প্রায় ১৫০০ জনকে ৩ দিনের এসওপির আওতায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এ বছরে সরকারের ঘোষণা রয়েছে নির্ধারিত আসনের ৫০ ভাগ বুকিং দেয়ার, সে বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের সকলকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে একটানা বন্ধ থাকায় বহু হোটেল-মোটেলের কর্মচারী পর্যন্ত চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। তবে সকল মালিকরা লোকসানের বোঝায় কাহিল হয়ে আছেন, শত শত কোটি টাকার লোকসানের ধকলে পড়েছেন তারা। তিনি পর্যটনখাতে কুয়াকাটার ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানান। তারপরও সাড়ে চার মাস পরে ফের কুয়াকাটা খুলে দেয়ায় পর্যটক দর্শনার্থীসহ কুয়াকাটার ব্যবসায়ীরা স্বস্তিবোধ করছেন।

করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসনেরও ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে বলে মহিপুর থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান এবং কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পটুয়াখালী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ