Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

অর্থমন্ত্রীর নিজ উপজেলার হাসপাতালে স্যাকমো প্রভাবে অতিষ্ঠ চিকিৎসকরা

কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২১, ৬:৫১ পিএম

কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা ২০ শয্যা হাসপাতালের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) রবিউল আলমের প্রভাবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। বাগামারা স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় রবিউল সরকারি চাকরি বিধির তোয়াক্কাই করছে না। অবশেষে তার বিরুদ্ধে কুমিল্লার সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) ডা: মো. আনোয়ার উল্লাহ।

কোভিড-১৯ মহামারী থেকে নিজ উপজেলার মানুষকে বাঁচাতে ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আবুল খায়ের গ্রুপের সহযোগিতায় বাগমারা ২০ শয্যা হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালু ও দুইটি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করেন কুমিল্লা-১০ নির্বাচনী এলাকার সাংসদ অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল এফসিএ। করোনা সংকট মোকাবিলায় গ্রামের হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপনসহ করোনা ইউনিট চালু করায় নিজ নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও দেশব্যাপী প্রশংসিত হোন বিশ্বসেরা এই অর্থমন্ত্রী।

গত ২২ এপ্রিল হাসপাতালটিতে দুইটি আইসিইউ শয্যা, দুইটি হাইপ্লো নেজাল ক্যানুলা, তিনটি অক্সিজেন কনসেন্ট্রোটর,একটি বাইপেপ ভেন্টিলেটর,একটি সিপেপ ভেন্টিলেটর, ১২টি সিলিন্ডার সম্বলিত সেন্ট্রাল অক্সিজেন, ইসিজি ও এক্সরে মেশিন, দশটি অত্যাধুনিক পেশেন্ট মনিটর, একটি অটোক্ল্যাভ মেশিন, একটি ল্যারিংগোস্কোপ, দুইটি বৈদ্যুতিক সাকার মেশিন ও দশটি স্পেশাল শয্যা স্থাপন করা হয়।

একটি উপজেলার ছোট্ট হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার যাবতীয় সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি হওয়ায় বিষয়টি ভালভাবে নিতে পারেননি হাসপাতালের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রবিউল। কারণ ইতিপূর্বে হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জাম কম থাকায় রোগী এলে রবিউল তাদের কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজে পিপলস হসপিটাল নামে নিজের প্রাইভেট হাসপাতালে প্রেরণ করতেন। বর্তমানে এসব সুবিধা কমে যাওয়ায় এবং বাগমারা হাসপাতালে রোগী ভর্তি করানোর ব্যাপারে তার মতামত না নেওয়ায় সে হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বাজে আচরণ শুরু করেন।

বিশেষ করে বাগমারা ২০ শয্যার হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালু ও আইসিইউ শয্যা স্থাপন করায় এর বিরোধিতা করেন রবিউল। গত ৬ আগস্ট লালমাইয়ের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে কোভিড পরিস্থিতি, টিকা প্রদান কার্যক্রম, নমুনা সংগ্রহ ও বাগমারা ২০ শয্যার হাসপাতালে রোগী ভর্তি নিয়ে এবং লালমাই উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের নিরাপত্তার বিষয়ে আবাসিক কর্মকর্তার কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলাকালীন রবিউল বিনা অনুমতিতে সভাকক্ষে ঢুকে পড়ে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউলকে বাইরে অবস্থান করতে বলেন।এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সভা শেষে আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা ডা. মো. আনোয়ার উল্লাহকে গালিগালাজ ও হুমকি দেন রবিউল। কেবল তাই নয়, ২৮ জুলাই কোভিড রোস্টার হওয়ার পর থেকে সে দায়িত্ব পালনে অনীহা দেখায়।

এসব অভিযোগ তুলে রবিউলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি কুমিল্লার সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা (আরএমও) ডা: মো. আনোয়ার উল্লাহ।

এবিষয়ে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসেন বলেন, রবিউলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা প্রাথমকিভাবে তাকে জিজ্ঞাসা করব। সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারলে তদন্ত কমিটি করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রবিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে করা কোনো অভিযোগই সঠিক নয়।আপনারা সরেজমিন এসে পরিদর্শন করুন।তারপর সব ঘটনা বুঝতে পারবেন।’

উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামালের নিজ উপজেলা লালমাইয়ের বাগমারায় ২০১৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে নিয়ে বাগমারা ২০ শয্যা হাসপাতালের আউটডোর সেবা উদ্বোধন করেন।



 

Show all comments
  • সৈয়দ মারুফ ১৫ আগস্ট, ২০২১, ৯:৪২ এএম says : 0
    ডাক্তারির নামে মানুষের ইমোশন নিয়ে মজা করে রবিউল (স্যামকো)
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুমিল্লা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ