প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
অভিনেত্রী পরীমনি ও সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু বিষয়ে দেশের ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্যাডে লেখা ওই বিবৃতিতে তারা বলেছেন, এক অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে দেশের নব্য-ধনিক সমাজের যে চেহারা ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে চিন্তিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে।
বিবৃতিদাতা ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক হচ্ছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, আবেদ খান, ফেরদৌসী মজুমদার, সারোয়ার আলী, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, আবদুস সেলিম, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসীর মামুন, গোলাম কুদ্দুছ, হাসান আরিফ।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নির্বাহী কমিটির সদস্য হানিফ খান প্রেরিত এই বিবৃতিতে লেখা হয়, ‘বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়, সাম্প্রদায়িকতা এবং নারীবিদ্বেষী পুরুষতান্ত্রিকতার বিস্তার যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করেছে। সুনামগঞ্জের শাল্লায় গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটতরাজের ঘটনা অতীব দুঃখজনক। তার চেয়েও দুঃখবহ, এই হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক সামাজিক আবহ বিনষ্টকারী চিহ্নিত গোষ্ঠীর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিচার তো হলোই না, বরং বিনা বিচারে কারাবাসে রয়েছেন মৌলবাদী গোষ্ঠীর সমালোচনাকারী সংখ্যালঘু যুবক। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনার রূপসা উপজেলায় ন্যক্কারজনকভাবে ভাংচুর করা হয়েছে উপাসনালয় ও প্রতিমা। নিজ ধর্মবিশ্বাসে আস্থাবান মানুষ অপরের ধর্মপালনকে সম্মান করে চলবে, এটা সবারই কাম্য। এর অন্যথা ঘটিয়ে সামাজিক অপরাধ যারা সংঘটিত করবে তাদের কঠোর হাতে দমনের দাবি করছি আমরা।
পাশাপাশি চলচ্চিত্র জগতের এক অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নব্য-ধনিক সমাজের যে চেহারা ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে চিন্তিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করেছে। নারীকে বাণিজ্য ও ভোগের পণ্য হিসেবে ব্যবহারের ধারা নানাভাবে পরিপুষ্টি পেয়ে সামাজিক অনাচারের ভোগবাদী। সংস্কৃতি প্রবল করে তুলেছে। অর্থ-বিত্ত-প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অশুভ আঁতাতের প্রতিফল যখন ন্যাক্কারজনকভাবে প্রকাশ পেতে শুরু করলো তখন নারীর ওপরই এর দায়ভার অর্পণের বিশাল আয়োজন আমরা প্রত্যক্ষ করছি। পুরুষতান্ত্রিক কুপমুন্ডক চিন্তার এই দাপট সামগ্রিকভাবে সমাজকে এবং বিশেষভাবে নারীকে নানাভাবে নিগৃহের শিকারে পরিণত করেছে। আমরা নারীর সাংস্কৃতিক অধঃপতনের শিকার হয়ে ওঠার জন্য যারা দায়ী, যারা এর ইন্ধনদাতা তাদের মুখোশ উন্মোচনের দাবি করছি এবং এই ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সাংস্কৃতিক সামাজিক আন্দোলন বেগবান করার প্রয়োজনীয়তা সবার সামনে মেলে ধরছি।’
প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট (বুধবার) বনানীর বাসা থেকে আটক করা হয় পরীমনিকে। র্যাবের অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক পাওয়া যায় তার বাসায়। ৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বনানী থানায় মাদক আইনে মামলা করা হয় পরীমনির বিরুদ্ধে। ওইদিনই সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয় পরীমনিকে। তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) ফের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।