মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ভারতের দুই রাজ্যে মধ্যে বিরাজ করছে যুদ্ধাবস্থা। সাম্প্রতিক সময় এই লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম এবং মিজোরাম গত সপ্তাহে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো অনেকে। দুই রাজ্যের সীমান্তে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা এই বিরোধ স্থানীয়দের জীবনে কেমন প্রভাব ফেলেছে তা জানতে বিবিসির সংবাদদাতা ওই অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। ১৩ লাখ জনগোষ্ঠীর পাহাড়ি রাজ্য মিজোরামের সাথে ভারতের বাকি অংশের সংযোগ যে মহাসড়কের মাধ্যমে হয়েছে, সেই ব্যস্ত মহাসড়কটি আজকাল অস্বাভাবিক শান্ত। মিজোরাম রাজ্যটির সাথে রয়েছে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের সীমান্ত। রাজ্যটি থেকে ভারতের মূল ভূখন্ডে যাওয়ার রাস্তাটি গেছে প্রতিবেশী আসাম রাজ্যের ওপর দিয়ে। মিজোরাম ও আসামের মধ্যে চলমান উত্তেজনা চরম আকার নেয় গত ২৬ জুলাই। ওই দিন দুই রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় রাজ্যদুটির পুলিশবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। উভয়পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে সাতজন নিহত এবং ৬০ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছয়জনই আসামের পুলিশ সদস্য। মিজোরামের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, আসামের প্রায় দুই শ’ পুলিশ একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে সীমান্ত শহর ভাইরেংতের একটি পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে নেয়। এরপর স্থানীয় মিজোরা আসামের পুলিশদের বহনকারী বাস পুড়িয়ে দেয়। তারা আসামের গ্রামবাসীদের সাথেও সংঘর্ষে জড়ায়। ভাইরেংতের বাসিন্দা পু গিলবার্ট বলেন, এক সময় মনে হয়েছিল, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধেছে। স্থানীয় মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ) মিজোরাম শাসন করে এবং তারা ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি- বিজেপির নেতৃত্বাধীন নর্থ-ইস্ট ডেমোক্রেটিক জোটের একটি অংশ। প্রতিবেশী আসামও শাসন করছে বিজেপি সরকার। কিন্তু সেটা দুই রাজ্যের নেতাদেরকে পরস্পরের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে পারেনি। অন্যদিকে দুটি রাজ্য একে অপরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এমনকি আসাম তাদের স্থানীয় মানুষদের মিজোরামে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে। ভাইরেংতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এইচ লাল্ট লাংলিয়ানা বলেন, ‘আমাকে আমার এলাকা এবং মানুষদের রক্ষা করতে হবে। আমি তাদের সহিংসতা হাল্কাভাবে নেব না। আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। মিজোরাম বলেছে, তারা এখন আসামের ‘অর্থনৈতিক অবরোধের’ মুখে পড়েছে। কারণ আসাম থেকে মিজোরামে কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। আসাম থেকে আসা পণ্য সরবরাহের উপরই মিজোরাম নির্ভর করে। বেশ বড়সড় একটি রাজ্য আসাম, যেখানে তিন কোটি মানুষের বসবাস। এই রাজ্যের মানুষ করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বিপর্যস্ত। রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে সেখানকার ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং টেস্টিং কিট ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে। মিজোরামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট লাল থাংলিয়ানা বলেছেন, ‘আসাম পুলিশ মিজোরামের উদ্দেশে যাওয়া ট্রাকগুলোকে ঢুকতে দিচ্ছে না। তাদের গ্রামবাসীরা রাজ্যের একমাত্র রেল সংযোগ উপড়ে ফেলেছে। একটি যুদ্ধে দুই পক্ষের সেনাবাহিনী লড়াই করলেও, যুদ্ধের সময় চিকিৎসা সামগ্রী এবং আহত ব্যক্তিদের চলাচলে কোনো বাধা দেয়া হয় না। আসামের এই অবরোধ অমানবিক। আসাম এ ধরনের অবরোধের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, সীমান্তে সহিংসতার কারণে ট্রাক চালকরা আতঙ্কে সেখানে যেতে চাইছে না। উপনিবেশিক শাসনামলে, মিজোরাম পরিচিত ছিল লুসাই পাহাড় নামে। তখন এটি আসামের অংশ ছিল। তবে ১৯৭২ সালে এটি একটি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল হিসেবে আলাদা হয়ে যায়। পরে দিল্লি এবং স্বাধীনতাকামী এমএনএফ-এর মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে মিজোরাম একটি আলাদা রাজ্যের মর্যাদা পায়। ওই দলটি ভারতের বিরুদ্ধে টানা ২০ বছর গেরিলা অভিযান চালিয়েছিল। আসামের সাথে মিজোরামের ১৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এরমধ্যে বিতর্কিত হলো ১ হাজার ৩১৮ বর্গ কিলোমিটার (৫০৯ বর্গ মাইল) এলাকা। যা পাহাড় ও বনভূমি বেষ্টিত। ১৮৭৫ সালের ব্রিটিশ আইনের ভিত্তিতে মিজোরাম এই অংশটিকে নিজেদের বলে দাবি করে। কিন্তু আসাম জোর দিয়ে বলে আসছে যে এটি তাদের সাংবিধানিক সীমানার অংশ। বিবিসি নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।