Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাঁচ লাখ টাকার মদের বোতলের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্র!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০২১, ৮:০৮ পিএম

ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে জাপান সরকার প্রায় ছয় হাজার ডলার মূল্যের একটি হুইস্কির বোতল উপহার হিসেবে দিয়েছিলো। এখন আর সেটির কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সেটি কোথায় গেল তা অনুসন্ধান করছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।

২০১৯ সালের জুনে রাষ্ট্রীয় সফরে জাপান যান তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। সে সময় দেশটির সরকার তাকে একটি হুইস্কির বোতল উপহার দেয়, যার মূল্য ছিল ৫ হাজার ৮০০ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ লাখ টাকা। মেয়াদকালে বিদেশ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের পাওয়া অন্য উপহারের হদিস থাকলেও পররাষ্ট্র দপ্তরে এটির সন্ধান মিলছে না। এই বিষয়ে মাইক পম্পেওর নিজেরও কোন ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী উইলিয়াম ব্রুক।

গত ২২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র বিভাগের অধীনে চিফ অব প্রটোকলের একটি বিজ্ঞপ্তিতে এই উপহারের হদিস না পাওয়ার তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র দপ্তর বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং এ নিয়ে তদন্ত চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এ নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। নিয়ম অনুযায়ী মার্কিন কর্মকর্তারা ৩৯০ ডলারের কম মূল্যের উপহার নিজেদের কাছে রাখতে পারেন। এর বেশি মূল্যের উপহার রাখতে চাইলে তার মূল্য পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু পম্পেওর ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পম্পেওর আইনজীবী উইলিয়াম ব্রুক জানিয়েছেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুইস্কির বোতলটি গ্রহণের বিষয়ে কিছু মনে করতে পারছেন না এবং সেটি কোথায় গেছে সেই বিষয়েও তার কোন ধারণা নেই। তবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র দপ্তর এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি। টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পম্পেও নিজে উপহারটি গ্রহণ করেছিলেন কীনা সেটি পরিস্কার নয়। কেননা জাপান সরকার যখন পররাষ্ট্র দপ্তরকে এই উপহারটি হস্তান্তর করে তখন তিনি সৌদি আরব সফরে ছিলেন।

তবে গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে তিনি ও তার স্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ১০০ বারের বেশি করদাতাদের অর্থ খরচ করেছেন। পম্পেও এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ত্রুটিপূর্ণ তথ্যের উপর নির্ভর করে প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করা হয়েছে যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পম্পেও তার মেয়াদকালে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে ১৯ হাজার ৪০০ ডলার মূল্যের দুইটি কার্পেট পেয়েছেন। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দুইটি উপহারই নিয়ম অনুযায়ী জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে জমা দেয়া হয়েছে।

তালিকা অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়া এক লাখ ২০ হাজার ডলারের বেশি মূল্যের উপহার গ্রহণ করেছেন। তার আগের বছর পেয়েছিলেন ৮৮ হাজার ২০ ডলারের আর ক্ষমতায় আসার প্রথম বছর ২০১৭ সালে পেয়েছেন এক লাখ ৪০ হাজার ডলার সমমূল্যের উপঢৌকন। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়া, মিশর ও ভিয়েতনামের সরকার প্রধানরা ট্রাম্পকে আলোকচিত্র বা তার নিজের পোট্রেট উপহার দিয়েছেন, যার আর্থিক মূল্য ধরা হয়েছে ১০ হাজার ডলার।

এছাড়াও মূল্যবান যেসব উপহার ট্রাম্প পেয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া সাড়ে আট হাজার ডলার মূল্যের অটোমান সাম্রাজ্যের রাইফেল, বাহরাইনের ক্রাউন প্রিন্সের দেয়া সাত হাজার ২০০ ডলারের ব্রোঞ্জের ঘোড়ার মূর্তি আর কাতারের আমিরের কাছ থেকে পাওয়া স্বর্ণ, হীরা, পান্নায় নির্মীত ছয় হাজার তিনশো ডলার সমমূল্যের অ্যরাবিয়ান অরিক্সের মূর্তি।

তবে দামি উপহার প্রাপ্তিতে ট্রাম্পকেও পেছনে ফেলেছেন মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক অপারেশনে নিযুক্ত মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড এর তৎকালীন কমান্ডার জেনারেল জোসেফ ভোটেল। ২০১৯ সালে তাকে কাতারের সরকার একাধিক ঘড়ি উপহার দেন, যেগুলোর মূল্য প্রায় ৩৭ হাজার ডলার। এর মধ্যে একটি রোলেক্স ঘড়িরই দাম ছিল ১৪ হাজার ৯৯৫ ডলার। ভোটেল পরে সেগুলো জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে জমা দেন। আলোকচিত্র, চিত্রকর্ম থেকে শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসনের সব উপহারই ন্যাশনাল আর্কাইভে সংরক্ষিত থাকার তথ্য রয়েছে প্রকাশিত প্রতিবেদনে। তবে নেই শুধু পম্পেওর হুইস্কির বোতলটিই। সূত্র : রয়টার্স, এপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ