মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
লরি থেকে ভারী মালামাল নামানো মানুষের জন্য খুবই কষ্টদায়ক কাজ। এতে কোন বুদ্ধিবৃত্তিক চ্যালেঞ্জও নেই। রোবটের জন্য আবার এটি বিপরীত। রোবট কখনো ক্লান্ত হয় না। তবে তাদের ক্যামেরা এবং লেজার স্ক্যানার থেকে যে স্ট্রিমিং ডেটা চোখে পড়ে তা ব্যাখ্যা করতে তাদের সমস্যা হয়। মালামাল ভর্তি একটি লরির ভেতরে একটি বাক্স কোথায় শেষ হয় এবং অন্যটি শুরু হয় তা মানুষ নিমেষেই বুঝতে পারে। কিন্তু এমনকি সেরা কৃত্রিম-দৃষ্টি সম্পন্ন সিস্টেমকেও এটি বুঝার জন্য সংগ্রাম করতে হয়।
এটিতে কেবল শুরুর ধাপ। পরের সমস্যা হল, রোবট যা দেখে তা দিয়ে তার কি করা উচিত সেই সিদ্ধান্ত নেয়া। বিষয়বস্তু যত অগোছালো, সমস্যাও তত বড়। প্যাকেজের সঙ্কুচিত-মোড়ানো প্যালেটগুলি এক জিনিস, পার্সেল-ডেলিভারি ব্যবসার দ্বারা পরিচালিত বস্তুর বিবিধ জঙ্গল। মালামালগুলো ভেঙে যেতে পারে, বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অথবা রোবটকে বুঝতে হতে পারে কিভাবে একটি অপরিচিত দ্রব্য উত্তোলন করা যেতে পারে। যেমন স্কির একটি সেট। মানুষ বড় হওয়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে এই ধরনের কাজ করতে শেখে। তবে মেশিনগুলোকে এটি শেখাতে হয়। এটি প্রচুর সময় এবং প্রশিক্ষণের বিষয়। এ কারণে লরিগুলো আনলোড করা গুদাম পরিচালনার কয়েকটি অংশের মধ্যে একটি যা অটোমেশন বা রোবটের মাধ্যমে করা যায় না। কিন্তু বেশিদিনের জন্য নয়। একটি নতুন প্রজন্মের কার্গো-হ্যান্ডলিং রোবট এই কাজটি করার জন্য প্রস্তুত।
হানিওয়েল নামের যুক্তরাষ্ট্রের একটি বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানির রোবোটিক্স বিভাগ একটি যানবাহনের আকারের রোবট নিয়ে এসেছে যা একটি লরির পিছনে ফিট করে। এটিতে একটি বড় বাহু রয়েছে যার মাথায় শোষক বা সাকসন কাপ লাগানো রয়েছে। এটি একবারে বেশ কয়েকটি বাক্স তুলতে পারে এবং তারপরে একটি কনভেয়র বেল্টে তাদের রাখতে পারে। সাধারণত একজন মানব কর্মী ঘন্টায় ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০টি বাক্স আনলোড করতে পারে। হানিওয়েল আশা করে যে, একবার তাদের তৈরি রোবটটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেলে এটি ঘন্টায় অন্তত ১ হাজার ৫০০টি বাক্স নামাতে পারবে। মাত্র একজন মানুষ এগুলো একসঙ্গে তিন বা চারটি লরি আনলোডের কাজ তদারকি করতে সক্ষম হবে।
হনিওয়েলের রোবটিক্স অপারেশনের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা টমাস ইভান্স বলেন, কার্গো-হ্যান্ডলিং রোবটকে সমাবেশ লাইনে কাজ করা পিক-অ্যান্ড-প্লেস রোবটের মতো সুনির্দিষ্ট হওয়ার দরকার নেই। কিন্তু এখনও যেটি চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে, তা হলো এগুলোকে দিয়ে পৃথক বাক্সের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারা এবং খোলা প্যালেট এবং সেগুলো সরানোর জন্য ব্যবহৃত প্যালেট জ্যাকের মতো অসঙ্গত বস্তুগুলোকে চিহ্নিত ও সনাক্ত করাতে পারা। বর্তমানে, এটি অভিন্ন আকার এবং আকৃতির বাক্সগুলোই শুধুমাত্র সহজে নামাতে পারে।
এটি পরিবর্তন করার জন্য প্রচুর প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে, যার অর্থ, বিভিন্ন যানবাহনের ভিতরে বিভিন্ন ধরণের ডামি লোড ডিজাইন এবং একত্রিত করা। এটি সময় এবং শ্রমসাপেক্ষ। ডক্টর ইভান্স বলেছেন যে, তার দল দিনে এমন মাত্র চারটি লরি লোড করে পরীক্ষা করতে পারে। কিন্তু প্রয়োজন হচ্ছে প্রতিদিন এমন ১০০ লরি পরীক্ষা করা। এই স্কেলে পরীক্ষা চালানো খুবই ব্যয়বহুল হবে। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল সিমুলেশন সাহায্য করতে পারে। ইভান্স বলেছেন, হাতে কলমে কাজের কোন বিকল্প নেই। তাই তিনি রোবটের জন্য সম্ভাব্য গ্রাহকদের একজনের সাথে আলোচনা করছেন, একটি কোম্পানি যারা ওই পরিমাণ লরি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন, সেখানে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য।
ম্যাসাচুসেটসের বোস্টন ডায়নামিক্স নামে একটি সংস্থা হানিওয়েল থেকে ভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। প্রতিস্ঠানটি বিশ্বে ‘অ্যাটলাস’ নামক অ্যাক্রোব্যাটিক হিউম্যানয়েড রোবটের জন্য বিখ্যাত। তাদের আরেকটি বিখ্যাত রোবটের নাম ‘স্পট’ যা কুকুরের অনুরূপ এবং এখন কারখানা এবং অন্যান্য বড় জায়গাগুলোতে কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি ডিভাইস হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মটি পণ্য-তদারকির জন্য ‘স্ট্রেচ’ নামে বিশেষভাবে একটি রোবট তৈরি করেছে।
স্ট্রেচ হানিওয়েলের রোবটের চেয়ে ছোট এবং হালকা। বোস্টন ডায়নামিক্সের ওয়্যারহাউস রোবোটিক্সের জেনারেল ম্যানেজার কেভিন ব্ল্যাঙ্কস্পুরের মতে, এটি সহজেই একটি লরি থেকে অন্য লরিতে, অথবা সম্পূর্ণভাবে একটি সাইটের ভিন্ন অংশে যেতে সক্ষম। এর সাকশন গ্রিপার ও সেন্সর সজ্জিত একক বাহু এবং প্রায় ২৫ কেজি ওজনের বাক্স তুলতে ও বহন করতে সক্ষম। হানিওয়েলের সিস্টেমের বিপরীতে, স্ট্রেচ ইতিমধ্যেই বাক্সের প্রাচীর পরীক্ষা করতে, তাদের আকার এবং আকৃতি বুঝতে এবং প্রথমে কোনটি বেছে নিতে হবে সেই কৌশলটি পরিচালনা করতে পারে। যদিও এটি ধীর। তবে এটি দিয়ে প্রতি ঘন্টায় অন্তত ৮০০ বাক্স পরিচালনা করার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
এদের তৃতীয় প্রতিদ্বন্দ্বী রোবটের নাম হচ্ছে ‘ডিল’। এটিও ম্যাসাচুসেটস ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান পিকল রোবট কোম্পানি দ্বারা তৈরি। পিকলের প্রধান অ্যান্ড্রু মেয়ার বিশ্বাস করেন যে, এই প্রতিযোগিতায় ডিলের একটি সুবিধা রয়েছে। কারণ পিকলের ইঞ্জিনিয়াররা রোবটের অনিয়মিত লোডের সাথে অগোছালো ট্রেলার পরিচালনা করার ক্ষমতার দিকে মনোনিবেশ করেছেন। এটি মেশিন ভিশন এবং বাক্সগুলো কোথায় আছে শুধু তাই বুঝবে না, পদার্থবিজ্ঞানের আইনগুলো বোঝার এবং তার মাধ্যমে নির্দিষ্ট বস্তুগুলো কেমন আচরণ করবে তাও বুঝতে পারবে। এটি ডিলকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে যে, পরবর্তীতে কোন বাক্সটি তুলতে হবে এবং সেটিকে ফেলে না দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব যথাযথ স্থানে রাখতে হবে। সূত্র : দ্য ইকোনমিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।